প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ১৯৭৭ সালে বামফ্রন্ট সরকার বাংলায় ক্ষমতা দখল করেছিল। টানা ৩৪ বছর বাংলার মসনদে ছিল এই বামেরা। জ্যোতি বসু এবং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এই ৩৪ বছর টানা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। এরপর ২০১১ সালে ক্ষমতাচ্যুত হয় বামেরা। তারপর শাসন ক্ষমতায় চলে আসে তৃণমূল সরকার। এই মুহুর্তে বাংলায় এখন বামেরা একেবারেই শূন্য। যদিও বা কেরলে এখনও চলছে বামেদের সাম্রাজ্য। কিন্তু এই আবহে এবার সেই রাজ্যের এক বিধায়ক যোগ দিল তৃণমূল কংগ্রেসে। স্বাগত জানালেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেরলের বিধায়ক এবার তৃণমূলে!
সূত্রের খবর, কিছুদিন আগে কেরলের নিলাম্বুরের নির্দল বিধায়ক পিভি আনবর তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। কেরল থেকে এই প্রথমবার কোনও বিধায়ক তৃণমূলে যোগদান করেছেন। যদিও বা আনবর কট্টর বাম-বিরোধী হিসেবে বরাবর পরিচিত থেকে আসছেন। গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার আনবরের তৃণমূলে যোগদানের খবর জানিয়ে তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘কেরলের নিলাম্বুরের বিধায়ক পিভি আনবরকে তৃণমূল পরিবারে স্বাগত জানাচ্ছি। জনগণের সেবায় এবং কেরলের মানুষের অধিকারের জন্য তিনি নিবেদিত।’’
কেরলের সরকারকে সরাসরি কটাক্ষ আনবর এর
২০১১ সালে এরানাড় বিধানসভা থেকে নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বী করেন পিভি আনবর। তার পর ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে ওয়েনাড় কেন্দ্র থেকে নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। দু’বার ভোটে হারের পর শেষে ২০১৬ সালে বাম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হিসাবে নিলাম্বুর থেকে ভোটে জয়ী হন। এদিকে সম্প্রতি হাতির পায়ের তলায় পিষে গিয়ে এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন স্থানীয়েরা। যার ফলে নিলাম্বুর জেলা বন দফতরের অফিসে ভাঙচুর চালানোর ঘটনায় নাম জড়িয়ে পরে পিভি আনবর এর। এরপর এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়ার ঠিক ১৫ ঘণ্টা বাদে জামিন পেয়েই তিনি বাম সরকারকে বিঁধে নানা মন্তব্য করেন। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং তাঁর প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছিলেন ওই বিধায়ক।
পিভি আনবর মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং তাঁর প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছিলেন, ‘‘বিজয়ন দুর্নীতিগ্রস্ত কিছু আধিকারিককে আড়াল করছেন।’’ এরপর দল থেকে বহিষ্কারের পর কেরলে বিরোধী জোটে যোগদানের নানা চেষ্টা করেন আনবর। কিছু দিন আগে ইন্ডিয়ান মুসলিম লিগের প্রধানের সঙ্গে বৈঠকও করেন এমনকি কেরল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস বিধায়ক ভিডি সতীশনের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন। শেষে তিনি ডিএমকে দলে যোগদান করতে পারেন বলে চাপানউতর তৈরি হয়েছে। কিন্তু সমস্ত ভ্রান্তি কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন।