প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: হাতে বাকি আর মাত্র কয়েকটা মাস। বছর ঘুরলেই রাজ্যে শুরু হতে চলেছে ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। তাই এই বাকি কয়েকটা মাসকে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করতে চলেছে রাজনৈতিক দলগুলি। এখন থেকেই মনোযোগ দেওয়া শুরু হয়েছে ভোট প্রচারের। তার উপর রয়েছে SIR বা ভোটার তালিকার নিবিড় পরিমার্জন। তাই সব মিলিয়ে বেশ সরগরম রাজ্য রাজনীতি। আর এই আবহে নির্বাচন নিয়ে সরাসরি মুখ খুললেন তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। ভগবানের স্থানে বসালেন মুখ্যমন্ত্রীকে।
রাজীবই কী হবেন তৃণমূলের প্রার্থী?
২৬ এর বাংলার বিধানসভা ভোটে এবার নয়া উত্তেজনা তৈরী হয়েছে নন্দীগ্রামে। শুভেন্দু অধিকারীর ডেরায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে আগত নির্বাচনে শাসকদলের তরফে প্রার্থী কে হতে চলেছেন তা জানার জন্য সকলেই বেশ উদগ্রীব। এমতাবস্থায় সেখানে শাসকদলের প্রার্থী হিসেবে নাম উঠে আসছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে অন্দরমহলে। যদিও এই প্রচার রাজীবের কাছে সম্পূর্ণ ‘রটনা’। তবে প্রার্থী হোক না হন, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এখন থেকেই পাল্লা দিয়ে জোর আক্রমণ শানাচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারীকে।
ধর্ম নিয়ে বিজেপিকে খোঁচা রাজীবের
সম্প্রতি এক ‘বাংলা হান্ট’ এর সামনে রাজনৈতিক পক্ষ নিয়ে সরাসরি মুখ খোলেন তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ধর্ম ইস্যুর প্রসঙ্গ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি তাঁর জবাবে বিজেপিকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “আমরা মনে করি আমরা রাজনৈতিক দল ধর্মকে ব্যবহার করছি না। আজকে বিজেপির ‘মেজো খোকা’ বলে বেড়াচ্ছে আমি হিন্দুর বাচ্চা আমি হিন্দুর বাচ্চা। সব হিন্দু এক হবে। কোনও একটা রাজনৈতিক দলের স্লোগান কখনও ধর্ম হতে পারে?” এরপরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভগবানের সঙ্গে তুলনা করেন দলবদলু রাজীব।
মা কালীর স্থানে বসিয়েছেন মমতাকে!
এদিন সাক্ষাৎকারে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয় সন্তোষী মা থেকে শুরু করে যত রকম আচার-অনুষ্ঠান রয়েছে যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেন, কোথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তো রাস্তায় বেরিয়ে বলতে হয় না, আমি হিন্দুর সন্তান, আমি হিন্দুর বাচ্চা। এদের বলতে হচ্ছে কেন?” এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। রাজীব আরও বলেন যে, “বাংলার বুকে বাংলার মানুষ প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। অর্থাৎ মা কালীর যদি কোনও সাক্ষাৎ রূপ হয় বর্তমান সময়ে, তাহলে তিনি হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”এছাড়াও ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার জন্য বিজেপিকেও চরম কটাক্ষ করেন রাজীব।
আরও পড়ুন: প্রতিশ্রুতিই সার! বাড়ি ফিরতে পারছেন না পরিযায়ী শ্রমিকরা, প্রশ্নের মুখে ‘শ্রমশ্রী’
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ভোটের আগে শুভেন্দু অধিকারীর তৎপরতায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর ডোমজুড়ে হেরে যাওয়ায় তার কয়েক মাসের মধ্যেই পুনরায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে ফিরে আসেন। আর তারপরেই তাঁকে ত্রিপুরায় সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়। সম্প্রতি হাওড়া জেলা পরিষদে মেন্টর করা হয়েছে। তবে নন্দীগ্রামের প্রার্থী জল্পনায় এটুকু অন্তত স্পষ্ট যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২৬ সালের ভোটে নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়াবেন না। এবার দেখার পালা সেই স্থান কার কপালে জোটে।