প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সোমবার রাতভর তিনবন্ধু পার্টি করেন নিউটাউনের সাপুরজি আবাসনে। কিন্তু পরের দিনই নিথর দেহ মেলে দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারের পুত্র সৃঞ্জয় দাশগুপ্তের (Srinjoy Dasgupta)। তড়িঘড়ি হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে জানিয়ে দেন। এরপরেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় তাঁর দেহ। আর এই আবহেই সৃঞ্জয়ের মৃত্যুকে ঘিরে উঠে এসেছে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য।
পুত্র শোকে কী বলছেন দিলীপ?
সৎ ছেলে সৃঞ্জয়ের এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না দিলীপ ঘোষ। তিনি জানান , “ড্রাগের সমস্যা ওঁর অনেক আগে থেকেই ছিল। তার জন্য নিয়মিত কাউন্সেলিং চলছিল। কিন্তু এসবের মাঝে হঠাৎ করে কেন এমন হল বুঝতে পারছিনা। তবে রিপোর্ট এলে সবটা পরিষ্কার হবে।” এছাড়াও তিনি আরও বলেন, “একটা তরতাজা ছেলে এভাবে চলে গেল। আজকের যুবসমাজের মধ্যে নেশার যে কী প্রভাব, এটা তারই একটা নমুনা বলা যায়। শুধু ছেলে মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করে দিলেই দায়িত্ব শেষ হয় না। তারপরেও বড় ঝুঁকি থেকে যায়। এটাই চিন্তার বিষয়।”
বিস্ফোরক পোস্ট কুণালের
রীতিমত শোকের ছায়া পড়েছে দিলীপ ঘোষের পরিবারে। আর এই আবহে সৃঞ্জয় দাশগুপ্তের মৃত্যু নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করল রিঙ্কু মজুমদারের এক বান্ধবী। দিলীপ ঘোষের সৎছেলের মৃত্যুর কারণ হিসেবে উঠে এল সৃঞ্জয়ের প্রেমিকার নাম। আর সেই পোস্টটি ফেসবুকে শেয়ার করলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। গতকাল রিঙ্কুদেবীর বান্ধবী সৃঞ্জয়ের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরেই সারা দিন রিঙ্কুর সঙ্গেই ছিলেন। এরপর ফেসবুকে ‘আমি ঝুমা’ নামের প্রোফাইল থেকে রিঙ্কু পুত্র-র মৃত্যু নিয়ে নানা মন্তব্য প্রকাশ করেন।
অভিযোগের তীর সৃঞ্জয়ের বান্ধবীর দিকে!
ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান যে, “সৃঞ্জয় এর বান্ধবীর বাড়ি নেতাজিনগর, গাছতলা। নিউটাউন আইটি সেক্টরে চাকরি করেন তিনি। এদিকে এই টুকু রাস্তাও কোনওদিন সে নিজের টাকা ভাড়া দিয়ে ফেরেনি। তাই ঢুকে গিয়েছিল সৃঞ্জয়ের ফ্ল্যাটে। সৃঞ্জয় বাড়ি যেতে বললে মেয়েটিকে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা দিতে হতো ক্যাব ভাড়া বাবদ। রিঙ্কুকে মেসেজ করে জানাতো তার ছেলে নাকি ওর থেকে টাকা ধার নিয়েছে।” এছাড়াও রিঙ্কুদেবীর বান্ধবীর আরও দাবি যে রিঙ্কুদেবী নাকি একাধিকবার বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তরুণীকে, তাতে রাজি হননি সে। এদিকে সৃঞ্জয়ের উপর ক্রমশ বেড়েছে অত্যাচার। শেষে ওই বান্ধবীকে সৃঞ্জয়ের ফ্ল্যাটে যেতে বারণ করেন রিঙ্কু। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি বলেই অভিযোগ।
কুণালের মন্তব্য
এই পুরো পোস্টটি শেয়ার করেছেন কুণাল ঘোষ। সঙ্গে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘পুত্রশোকে কাতর রিঙ্কু মজুমদারকে আন্তরিক সমবেদনা জানাই। দিলীপ ঘোষকেও জানাই সমবেদনা। রাজনৈতিক মতপার্থক্য আলাদা। এটা এক মানবিক কর্তব্য। সৃঞ্জয়ের মৃত্যু কীভাবে হল, নানা সূত্রে খবর আসছে। তাতে আর যাই হোক দিলীপবাবু বা রিঙ্কুদেবীর কিছু করার ছিল না। কিন্তু সোশাল মিডিয়ায় কিছু জানোয়ার যেভাবে এনিয়ে পুত্রহারা রিঙ্কুকে আক্রমণ করল, তাতে স্পষ্ট, হাতে আধুনিক ফোন থাকলেই সমাজের সবাই সভ্য হয় না।’
আরও পড়ুন: শারীরিক সমস্যা না অন্য কিছু! কীভাবে রিঙ্কু পুত্র সৃঞ্জয়ের মৃত্যু? ফাঁস ময়নাতদন্তের রিপোর্টে
অন্যদিকে রিঙ্কু মজুমদারের জানিয়েছিল যে, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হওয়ার পর নাকি সম্পূর্ণ একা থাকছিলেন ছেলে সৃঞ্জয়। হয়তো সেখান থেকেই তাঁকে একাকীত্ব গ্রাস করছিল। এমনকী রান্নার লোকও মাঝে মধ্যেই বাড়ি থেকে ফিরে যেতেন। ছেলে না খেয়েই অফিস যাচ্ছেন সেই খবরও পেয়েছিলেন তিনি। তাঁকে নিজের কাছে নিয়ে এসে রাখার জন্য দিলীপের সঙ্গে তিনি কথাও বলেছিলেন বলে জানিয়েছেন রিঙ্কু। কিন্তু কোনো কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই সকলকে ছেড়ে চলে যান তিনি। তবে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টের পর জানা গিয়েছে আত্মঘাতী নয় বরং শারীরিক সমস্যার কারণেও মৃত্যু হয়েছে সৃঞ্জয়ের।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।