প্রীতি পোদ্দার, কৃষ্ণনগর: রাজ্যে ২৬ এর বিধানসভা শুরু হতে বাকি আর মাত্র কয়েকটা মাস। তাই এখন থেকেই কোমর বেঁধে সমস্ত রাজনৈতিক দল নেমে পড়েছে ভোট যুদ্ধের ময়দানে। এদিকে নির্বাচনের আগে একের পর এক দুর্নীতির কলঙ্কের দাগ কেটে যাচ্ছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের উপর দিয়ে। আর এই আবহে ফের টেন্ডার বিতর্ক নিয়ে দুর্নীতির খবর উঠে এল কৃষ্ণনগর (Krishnanagar) পুরসভায়। অভিযোগ উঠল ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি কী?
রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২৫ সেপ্টেম্বর টেন্ডার নোটিস ইস্যু হয়েছিল। টেন্ডার জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৬ অক্টোবর এবং ২৫ অক্টোবর টেন্ডার খোলার তারিখ ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে জানা গিয়েছে যে গত ৩০ সেপ্টেম্বর পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কদমতলা ইমারশন ঘাট থেকে ৫০০ মিটারের রাস্তা তৈরির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, টেন্ডার শুরুর আগেই কাজ শেষ হয়ে গেল কীভাবে? কীভাবে বরাদ্দ হল টাকা? টাকা কোথায় গেল? একাধিক প্রশ্নের অভিযোগ তোলেন কৃষ্ণনগর পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন চেয়ারম্যান রীতা দাস-সহ ৮ জন কাউন্সিলর। আর সেই নিয়ে এবার হাই কোর্টে মামলা দায়ের করলেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, হাই কোর্টের পুজো অবকাশকালীন বেঞ্চেই এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
৪৫ লক্ষ টাকা তছরুপ!
কলকাতা হাইকোর্টে রীতা দাস-সহ ৮ জন কাউন্সিলরের অভিযোগ, দু’বছর আগে এই কদমতলা ইমারশন ঘাট থেকে ৫০০ মিটারের রাস্তা তৈরি হয়েছিল ২৩ লক্ষ টাকায়। যেখানে তৎকালীন টেন্ডারে কন্ট্রাক্টরের সঙ্গে চুক্তি ছিল যে, ৫ বছরের মধ্যে যদি রাস্তা কোনওভাবে খারাপ হয়, তাহলে কন্ট্রাক্টর ঠিক করে দিতে বাধ্য। কিন্তু সেই চুক্তির কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে ফের নতুন করে টেন্ডার ডাকা নিয়ে এবার প্রশ্ন তুলেছেন কাউন্সিলররা। যেখানে কিনা সেই রাস্তার জন্যই খরচ দেখানো হয়েছে ৪৫ লক্ষ টাকা, যা আগের খরচের প্রায় দ্বিগুণ। তাঁদের আরও দাবি, টেন্ডার দুর্নীতির ওই ৪৫ লক্ষ টাকা তছরুপের উদ্দেশ্যেই এই নতুন টেন্ডার প্রক্রিয়া সাজানো হয়েছে। আর সেই কাজের নেপথ্যে রয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান নরেশচন্দ্র দাস ও কয়েকজন পুর আধিকারিক।
আরও পড়ুন: সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফা দিলেন আরজি করের দুর্নীতি প্রকাশ্যে আনা আখতার আলি
যদিও এই অভিযোগ প্রথম নয় এর আগেও ভাইস চেয়ারম্যান নরেশচন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল যে তাঁর উদ্যোগেই নির্দল ও কংগ্রেস কাউন্সিলরদের সহযোগিতায় তৃণমূলের নির্বাচিত চেয়ারপার্সনকে অপসারণ করা হয়েছিল। তা নিয়ে যদিও ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেছিল অন্যান্য কাউন্সিলররা। আর এবার তাঁর নাম জড়াল টেন্ডার দুর্নীতির মামলায়। ফলে টেন্ডারের আগেই রাস্তা তৈরির এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় হতবাক সকলে। এখন সেই দুর্নীতির আসল সত্যি জানতে হলে ভরসা এখন আদালতের রায়।