বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: সদ্য শেষ হওয়া বিধানসভা বাজেটে (West Bengal Budget) শিল্প দফতরের খাতে 1,477.91 কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য। একইভাবে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প এবং বস্ত্র শিল্পের জন্য মমতা সরকারের তরফে বরাদ্দ করা হয়েছে 1,228.78 কোটি টাকা। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে বরাদ্দ হয়েছে মাত্র 866.26 কোটি টাকা। আর এই সব বরাদ্দকে ছাড়িয়ে গিয়েছে সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরে বরাদ্দ হওয়া টাকার অঙ্ক। হ্যাঁ, রাজ্যের অন্যান্য খাতে বরাদ্দ হওয়া অর্থের নিরিখে সংখ্যালঘুদের বিভিন্ন দফতর ও মাদ্রাসা শিক্ষা খাতে 5,602.29 কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার।
এই ঘটনার পরই বঙ্গ বিজেপির তোপের মুখে পড়তে হয়েছে শাসক দলকে। সম্প্রতি সংখ্যালঘু বিষয়ক খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দকে নিশানায় এনে জোরালো আক্রমণ শানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। একই সূত্রে সুকান্তকে বিঁধেছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
সংখ্যালঘু খাতে বরাদ্দ ঘিরে তৃণমূলকে দুষলেন সুকান্ত
সম্প্রতি শেষ হওয়া বাজেটে সংখ্যালঘু বিষয়ক বিভিন্ন দফতর ও মাদ্রাসা শিক্ষা খাতে রাজ্য সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত দাবি করেছেন, মূলত তোষামদ ও ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি করতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
সুকান্ত বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বাজেটে অগ্রাধিকারের তালিকাটা নাকি চমকে দেওয়ার মতো। বাংলা যেখানে বেকারত্ব, দুর্বল পরিকাঠামো এবং রুগ্ন শিল্পের কারণে প্রতিমুহূর্তে ধুঁকছে সেখানে দাঁড়িয়ে নির্লজ্জের মতো তোষামদের রাজনীতিতে ব্যস্ত তৃণমূল। মূলত পেশ হওয়া বাজেটে সংখ্যালঘু দফতর ও মাদ্রাসায় বরাদ্দ অর্থ নিয়েই ঘোর আপত্তি প্রকাশ করেছেন রাজ্যের বিজেপি সভাপতি।
সুকান্তর বক্তব্য, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প এবং বস্ত্রশিল্পে যেখানে বরাদ্দ মাত্র 1,228.78 কোটি টাকা, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নের ক্ষেত্রে বরাদ্দ যেখানে 866.26 কোটি সেই নিরিখে সংখ্যালঘু খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ অনেকটাই বেশি। যা বুঝিয়ে দেয় তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি।
সুকান্তকে পাল্টা দিলেন অভিষেক
সম্প্রতি রাজ্য সরকারের তরফে সংখ্যালঘু দফতর ও মাদ্রাসা শিক্ষা খাতে বরাদ্দ হওয়া অর্থ নিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের জোরালো আক্রমণের পর বৃহস্পতিবার দক্ষিণ 24 পরগনার সাঁতরাগাছি সেবাশ্রয় শিবিরে পৌঁছে ঝাঁঝালো মন্তব্য করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
আরও পড়ুন: পিতৃপরিচয় ছাড়াই বাংলার কারাগারে ১৯৬ শিশুর জন্ম, কীভাবে? প্রশ্নের মুখে রাজ্য সরকার
তিনি বলেন, ওনাকে জিজ্ঞেস করুন, রাজ্য সরকারের তরফে যে 44,000 হাজার কোটি টাকা পঞ্চায়েত দফতরে বরাদ্দ করা হয়েছে জাত, ধর্ম, বর্ণ দেখে? এদিন বিজেপি সভাপতি সুকান্তর মন্তব্যকে নিশানা করার পাশাপাশি বালুরঘাট নিয়েও আত্মবিশ্বাসী বক্তব্য শোনান অভিষেক। সুকান্ত মজুমদারকে উদ্দেশ্য করে তৃণমূল নেতার বক্তব্য, জাত পাতের রাজনীতি করে বিজেপির অবস্থা এখন শোচনীয়। বালুরঘাটে আর 5000 ভোট কম পেলে তো হেরেই যেতেন। সব মিলিয়ে, দুই বিরোধী দলের নেতার তরজায় রাজনীতির জল গড়িয়েছে অনেকটাই।