পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সমর্থন শুভেন্দুর, রাজ্যের দাবি আদায়ে দিল্লি যাবেন বিরোধী দলনেতা

Published on:

suvendu adhikari

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিধানসভায় বিভিন্ন দলের বৈঠকে বরাবর একটি চিত্রই বেশি প্রস্ফুটিত হয়। যেখানে কখনও দেখা যায় বিধানসভার ওয়েলে নেমে কোনো এক রাজনৈতিক দল প্রতিবাদ করছে তো কোথাও আবার এক রাজনৈতিক দল ওপর রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ক্রমেই বিক্ষোভ, ঝগড়া করছে। কোনো একটি প্রসঙ্গে বিরোধী দলের সঙ্গে শাসকদলের একই মতামত খুবই কম দেখা যায়। তবে সম্প্রতি রাজ্যে বিধানসভার বৈঠকে সবুজ গেরুয়া যেন একসঙ্গে হল। গত সোমবারও কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনাতেও কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে বকেয়া আদায়ের বিষয়ে রাজ্যকে সমর্থনের কথা জানিয়েছিলেন শুভেন্দু। আর এবার আরও এক প্রসঙ্গে হাত মেলাল দুই দল।

ঘটনাটি কী?

WhatsApp Community Join Now

গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিধানসভায় কলকাতা থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক উড়ানের সংখ্যা বাড়ানোর দাবিতে প্রস্তাব আনা হয় সরকারের পক্ষে। এদিন প্রস্তাবক মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের বক্তব্য ছিল, ‘‘কলকাতা থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং আমেরিকার বিভিন্ন শহরে সরাসরি বিমান পরিষেবা নেই। ১৯২৪ সাল থেকে শুরু-হওয়া বিমান পরিষেবায় কলকাতা থেকে আন্তর্জাতিক উড়ান ছিল। কিন্তু পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। সেই পরিষেবা আবার চালু করতেই এই প্রস্তাব আনা হয়েছে।’’

রাজ্যের দাবি আদায়ে দিল্লি যেতে পারেন শুভেন্দু

এদিকে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের বক্তব্য অনুযায়ী এ দিন বিধানসভায় শুভেন্দু অধিকারী জানান, “ইউরোপের একাধিক দেশ থেকে সরাসরি কলকাতা বিমানবন্দরে আসা নিয়ে কেন্দ্রের ছাড়পত্র রয়েছে। ফলে নতুন করে কেন্দ্রের অনুমোদন দরকার নেই। বাসা এবং ওপেন স্কাই এগ্রিমেন্ট আছে। আপনারা এদের সঙ্গে কথা বলুন। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বাড়ানোর জন্য আবেদন করুন।” এরপরে তিনি শাসকদলের সঙ্গে মতামত সায় দিয়ে বলেন যে, “ যদি কেন্দ্র কোনও বাঁধা দেয়। তাহলে আমরা, বিজেপির বিধায়করা যাব। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। এই প্রস্তাবকে আমরা সর্বান্তকরণে সমর্থন করছি।”

শুভেন্দুর প্রশংসা করলেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য

বিরোধীদল সমর্থন জানানোয় তা দলমত নির্বিশেষে পাশ হয়ে যায় বিধানসভায়। সেক্ষেত্রে প্রস্তাবক তথা মন্ত্রী চন্দ্রিমা বিবৃতি দিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ধন্যবাদও জানান। এরপর মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “আপনি আজ যেভাবে আমায় কয়েকবার মাননীয়া বললেন। সম্মানীয় বললেন। আমি ধন্যবাদ জানাই। ভাল লাগল। রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে এই প্রস্তাব দেওয়ার জন্য।” তিনি আরও বলেন, “ওঁর প্রস্তাব উনি দিয়েছেন। কিন্তু প্রতিনিধি দলে কে যাবেন, কে যাবেন না, তা ঠিক করেন লিডার অফ দ্য হাউস অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী। যেহেতু বিরোধী দলনেতা এই প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন, তাই ধরে নেওয়া যায় প্রস্তাবটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

এরপর বিধানসভা থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু মুখোমুখি হন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে। সেখানে তিনি জানান, “আমরা বাংলার মানুষের ২ কোটি ২৮ লক্ষ মানুষের ভোট পেয়ে বিধানসভায় রাজ্যের মানুষের কথা বলতে এসেছি। এখানে যদি সরকারপক্ষ থেকে রাজ্যের উন্নয়নের জন্য কোনও সহযোগিতা চাওয়া হয়, তা হলে আমরা সবরকম সাহায্য করতে প্রস্তুত।’’ শুভেন্দু আরও জানিয়েছেন, ‘‘বাংলা ভাগ নিয়ে রাজ্য সরকার যে প্রস্তাব নিয়ে এসেছিল, তাতে আমরা সংশোধনী দিয়েছিলাম। সেই সংশোধনী রাজ্য সরকার গ্রহণ করায় আমরা সেই প্রস্তাব সমর্থন করেছিলাম। তাই এ ক্ষেত্রেও সমর্থন দিতে আমাদের আপত্তি নেই।’’

সঙ্গে থাকুন ➥
X