দিল্লিতে বাঙালি নির্যাতন নিয়ে মমতার দাবি মিথ্যে! ভিডিও প্রকাশ শুভেন্দুর

Published on:

suvendu adhikari on delhi case

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত রবিবার অর্থাৎ ২৭ জুলাই সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন যে দিল্লি পুলিশ মালদার বাসিন্দা এক পরিযায়ী শ্রমিকের দেড় বছরের সন্তানকে তাঁর স্ত্রীর কোল থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে৷ এমনকি শিশুটির মাকে থানায় নিয়ে গিয়ে একদিন আটকে রাখা হয়৷ এইরূপ দিনের পর দিন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপরে হেনস্থার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদের সুর আরও ঝাঁঝালো করেছিলেন তিনি। এবার সেই অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যে বলে দাবি করলেন শুভেন্দু অধিকারী।

মুখ্যমন্ত্রীকে মিথ্যাবাদীর তকমা দিল শুভেন্দু

গতকাল অর্থাৎ সোমবার, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রীর পোস্ট করা সমস্ত দাবি অসত্য বলে জানিয়েছিলেন। এবং তিনি একটি ভিডিও পোস্টও করেছিলেন। এমনকি ভিডিওর সঙ্গে তিনি ক্যাপশনে হেড হিসেবে লিখেছিলেন যে, “মিথ্যেবাদী মমতা জেনে গেছে জনতা”। এবং তিনি আরও লিখেছেন যে, ”মুখ্যমন্ত্রী ২৭ জুলাই, ২০২৫ তারিখে একটি X এর পোস্টে দাবি করেছিলেন যে দিল্লিতে আধার যাচাইয়ের নামে একজন বাংলাভাষী মহিলা ও তার ছেলেকে দিল্লি পুলিশ মারধর করেছে। কিন্তু আমি বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি যে সাজনুর পারভিন দাবি করেছিলেন যে চারজন পুলিশ কর্মী ২৫ তারিখ তাদের পরিবারকে বাংলাদেশি নাগরিক বলে অভিযুক্ত করে দুই সন্তানকে জোর করে মঙ্গলম হাসপাতালের কাছে একটি পার্কে নিয়ে যায়, সেখানে ২৫,০০০ টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার পর মুক্তি দেওয়া হবে বলে ধমকি দেয়। কিন্তু সেই দাবি সম্পূর্ণ ভুল।”

দিল্লির আসল ঘটনা তুলে ধরলেন শুভেন্দু

এদিন শুভেন্দু অধিকারী তাঁর পোস্টে সেই সিসিটিভি ফুটেজ তুলে ধরে যেখানে তিনি দাবি করে যে সাজনুর পারভিন তার সন্তানদের নিয়ে একাই বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন, যা বল প্রয়োগের দাবির সাথে মিলছে না। এখানেই শেষ নয়, পারভিন ইতিমধ্যেই নাকি স্বীকারও করে নিয়েছেন যে তিনি কিছু ব্যক্তির কথায় প্রভাবিত হয়ে মিথ্যে গল্পটি সাজিয়েছিলেন। আসল ঘটনা হল, তার মামা যিনি একজন রাজনৈতিক কর্মী, উনি একজন সাংবাদিকের পরামর্শে এই মিথ্যা গল্প তৈরি করিয়েছিলেন এবং যে ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয় তা সম্পূর্ণ মিথ্যে।

আরও পড়ুন: ‘আপনারা রাজ্য সরকারের চাকরি করেন, হেনস্থা করবেন না!’ BLO-দের বুঝিয়ে দিলেন মমতা

পাল্টা মন্তব্য জয়প্রকাশ মজুমদারের

তবে দিল্লির এই ঘটনা যে সম্পূর্ণ অসত্য, সেই নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকও করেছে দিল্লি পুলিশ। দিল্লি পুলিশের তরফে দাবি করা হয় যে ওই ভিডিয়োর সমস্ত দাবি অসত্য। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছিল দিল্লি পুলিশের ভাবমূর্তি খারাপ করার জন্য। তবে একা শুভেন্দু অধিকারী নয়, আসরে নেমেছেন আরও একাধিক বিজেপি নেতারা। সরব হয়েছেন প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

যদিও পাল্টা তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের দাবি, ‘যে ভাবে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিকে বাঙালিদের উপর বিদ্বেষমূলক আচরণ করা হচ্ছে, সেজন্য বাংলার মানুষ বিজেপিকে ঘৃণা করে। তাই ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে বিজেপি। ’ প্রসঙ্গত, রাজস্থান, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, মহারাষ্ট্র- এরকম একাধিক বিজেপি ও NDA শাসিত রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার ও তাদের হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে। তাই এবার রাজ্য সরকার বাংলার প্রায় ২২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে ফিরিয়ে আনতে চলেছেন।

সঙ্গে থাকুন ➥