প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই ছাব্বিশের নির্বাচন! জোর কদমে ভোট প্রচারের প্রস্তুতি চলছে সব জায়গায়। আর এই আবহে এবার ভোটের আগেও বড় ধাক্কা খেলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার উপর থেকে সরিয়ে নেওয়া হল আইনি রক্ষাকবচ। শুক্রবার এমনই রায় দিলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। জানিয়েছেন, কোনও অন্তর্বর্তী নির্দেশ অনির্দিষ্টকালের জন্য চলতে পারে না। সমস্ত নির্দেশেরই একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকা উচিত।
‘রক্ষাকবচ’ প্রত্যাহার শুভেন্দুর
২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বরের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ‘রক্ষাকবচ’ মামলায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে একটি আইনি রক্ষাকবচ দিয়েছিলেন। এতদিন পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কোনও FIR দায়ের করার অধিকার ছিল না পুলিশের। চলতি বছর মে মাসে এই মামলার শুনানি শেষ হয় আদালতে। তারপর রায়দান স্থগিত ছিল। অবশেষে সেই মামলার নিষ্পত্তি ঘটল বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের হাত ধরে। আজ শুক্রবার, বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার দেওয়া ‘রক্ষাকবচ’ প্রত্যাহার করল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর সিঙ্গল বেঞ্চ। ফলে কোনও অভিযোগ আসলে এবার থেকে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে FIR করতে আইনগত আর বাধা থাকবে না পুলিশের।
তদন্তের জন্য SIT গঠনের নির্দেশ আদালতের
এদিন রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে চলা মোট ২০টি মামলা খারিজের আবেদন জানানো হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সেই সময়ই এই ‘রক্ষাকবচ’ প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয় বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ‘রক্ষাকবচ’ প্রত্যাহারের পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ১৫টি মামলা খারিজ করে দিয়েছে সিঙ্গল বেঞ্চ। কিন্তু ৫টি মামলার ক্ষেত্রে, যেগুলি নন্দীগ্রাম, তমলুক, মানিকতলা থানায় রয়েছে, তদন্তের জন্য SIT গঠন করার নির্দেশ দেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এর মধ্যে রয়েছে মন্ত্রী থাকাকালীন সরকারি চাকরির টোপ দিয়ে টাকা তোলা, ত্রিপল চুকি এবং জয় বাংলা স্লোগানের জন্য মারধরের অভিযোগও রয়েছে।
কী বলছেন কুণাল ঘোষ?
শুভেন্দু অধিকারীর রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করার নির্দেশ বেশ খুশি শাসকদল। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে বলেন, ‘শুভেন্দুর জন্য বড় সেটব্যাক। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত শুভেন্দু অধিকারীর আইনি রক্ষাকবচ সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিলেন। জানালেন, অনির্দিষ্টকালের জন্য এই অন্তর্বর্তী নির্দেশ কার্যকর থাকতে পারে না। আগে বিচাকরপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে FIR দায়ের করা যেত না, আদালতের আগাম নির্দেশ ছাড়া।’
আরও পড়ুন: আসানসোলে আদিবাসী মহিলাকে ধর্ষণ! পুলিশের জালে অভিযুক্ত
কী বলছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়?
কুণাল ঘোষের সুরে একই কথা বললেন তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, ‘এতদিন ধরে যে রক্ষাকবচটা ছিল, আজ চূড়ান্ত শুনানির পর তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। শুভেন্দুর অধিকারীর বিরুদ্ধে অনেকগুলি FIR চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। আপাতত বেশ কয়েকটি বাদ দেওয়া হয়েছে। আর বাকি থাকা মামলাগুলিতে সিবিআই ও রাজ্য পুলিশকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।’












