প্রীতি পোদ্দার, কাকদ্বীপ: বিগত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যের শাসকদলকে বেনজির আক্রমণ করে চলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যে একাধিক ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ইস্যুতে প্রশাসনের বিরুদ্ধেই কড়া ভাষায় তোপ দেগেছেন তিনি। নিজেদের সুরক্ষার স্বার্থে রাজ্যের নারীদের নিজেদের হাতে খড়্গ তুলে নেওয়ার বার্তাও দেন শুভেন্দু। যা নিয়ে শাসকদলের অন্দরে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায় কাকদ্বীপে মা কালীর মূর্তি ভাঙার খবর প্রকাশ্যে তুলে ধরলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
মা কালীর মূর্তি ভাঙল কাকদ্বীপে!
রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, গতকাল রাতে কাকদ্বীপ বিধানসভার সূর্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার উত্তর চন্দনপুর গ্রামের পুজো মণ্ডপ থেকে মা কালীর প্রতিমার মাথা ভেঙে দিয়েছে কয়েকজন দুষ্কৃতি। আর সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি গোটা এলাকার জুড়ে। অভিযোগ পুলিশ নাকি প্রথমে গ্রামবাসীদের ভয় দেখিয়ে মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু পরে গ্রামবাসীদের সম্মিলিত প্রতিবাদে মন্দিরের দরজা খুলতে দেয় ও ছবি সংগ্রহ করতে দিতে বাধ্য হয়। আর সেই ভিডিও আজ নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, “নিচের ভিডিওটা বাংলাদেশের নয়, এটা পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান অবস্থা। আমি বার বার বলেছি পশ্চিমবঙ্গকে পশ্চিম বাংলাদেশ বানানোর চক্রান্ত চলছে, হিন্দুরা এখনি না জাগলে সমূহ বিপদ অপেক্ষা করছে আগামী দিনে।”
নিচের ভিডিওটা দেখে কেউ বাংলাদেশ বলে ভুল করবেন না, এটা পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান অবস্থা। আমি বার বার বলেছি পশ্চিমবঙ্গ কে পশ্চিম বাংলাদেশ বানানোর চক্রান্ত চলছে, হিন্দুরা এখনি না জাগলে সমূহ বিপদ অপেক্ষা করছে আগামী দিনে
গত রাতে কাকদ্বীপ বিধানসভার সূর্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার উত্তর… pic.twitter.com/YB8FwtME3C
— Suvendu Adhikari (@SuvenduWB) October 22, 2025
বিস্ফোরক পোস্ট শুভেন্দুর
এছাড়াও শুভেন্দু অধিকারী মা কালী মূর্তির এইরূপ অবস্থার পরিণতির জন্য সরাসরি দায়ী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে। তাঁর পোস্টের মাধ্যমে তিনি লিখেছেন যে, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তুষ্টিকরণের রাজনীতির ফল ভোগ করছে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরা। মমতার অপশাসনে এক বিশেষ সম্প্রদায়ের সন্ত্রাসীদের পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু দেবদেবীদের প্রতিমা ভাঙচুর, মণ্ডপ ভাঙচুর, হিন্দুদের বাড়িঘর লুটপাট করা বা জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় আজ পর্যন্ত কোনো শাস্তি হয়নি, যে কারণে এই ধরণের জেহাদি কার্যকলাপ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। হিন্দুরা এখনি জেগে না উঠলে, সংঘবদ্ধ না হলে সামনে সমূহ বিপদ।” জানা গিয়েছে এখনো এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ প্রশাসন।
আরও পড়ুন: হোয়াইট হাউসে দীপাবলী উদযাপন, মোদীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন ট্রাম্প
যদিও এই ঘটনা প্রথমবার নয়, এর আগেও দেবদেবীর মূর্তি ভাঙার খবর প্রকাশ্যে এসেছিল শিরোনামে। আর তাই নিয়ে রাজনৈতিক অন্দরেও কম বিতর্ক হয়নি। তবে কাকদ্বীপের এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে প্রায় আড়াইশো বছরের ঐতিহ্যবাহী পূর্ব বর্ধমানের রসুলপুরের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের কালীপুজোর রাতে দেবীমূর্তির গা থেকে উধাও হয়ে যায় প্রায় ১০ লক্ষ টাকার গয়না। অভিযোগ, সোমবার গভীর রাতে কালীপুজোর মূল আচার শেষ হওয়ার পর অতিথি আপ্যায়নের ব্যস্ততা চলছিল। ঠিক তখনই দেখা যায় দেবীমূর্তির শরীর থেকে উধাও কয়েকটি সোনার অলঙ্কার। ইতিমধ্যেই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে অভিযুক্তকে। জানা গিয়েছে তিনি নাকি ওই পরিবারেরই এক বিশেষ অতিথি।