প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। হাতে বাকি আর মাত্র কয়েকটা মাস, তাই এখন থেকেই বাংলার প্রতিটি রাজনৈতিক দলগুলি শুরু করে দিয়েছে ভোট প্রস্তুতির কাজকর্ম। দলের প্রচার ব্যবস্থা নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির দাপুটে নেতারাও। এমতাবস্থায় ফের ভোট চর্চার কেন্দ্রে উঠে এল ভবানীপুর বিধানসভার নাম। নির্বাচনের আগেই এবার ভবানীপুরে মমতার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
শোরগোল মমতার আউটসাইডার মন্তব্য!
গতকাল অর্থাৎ রবিবার, ভবানীপুর বিধানসভার ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে এক সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন বিজেপি নেতা রাকেশ সিংহ। উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর সেখানেই ভবানীপুরে বিজেপি শিবিরের মনোবল চাঙ্গা করতে কার্যত ভোকাল টনিক দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। মমতার বিরুদ্ধে রীতিমত লড়াই করার জন্য কড়া স্বরে ঘোষণা করলেন তিনি এবং ভরা সভায় মমতার ‘আউটসাইডার’ মন্তব্য নিয়ে সরব হলেন। আসলে কিছুদিন আগে ভবানীপুরে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “ভবানীপুরে ‘আউটসাইডারদের’ দিয়ে ভরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমার কথা অন্যভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। আমি বহিরাগত বলতে এখানে যাঁরা বাস করেন, তাঁদের কথা বলিনি।” এবার সেই নিয়ে মুখ খুললেন শুভেন্দু।
মমতাকে সরাসরি আক্রমণ শুভেন্দুর
রবিবার, ভবানীপুরে বিজেপির সম্মেলনে শুভেন্দু অধিকারী শাসকদল এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি আক্রমণ করে বলেন, “রাজস্থান, পঞ্জাব, ঝাড়খণ্ড, গুজরাট, উত্তর প্রদেশের লোককে বলেছেন বহিরাগত। এটা কেউ বলতে পারে। এরা সবাই ভারতীয়। পরের দিন ঢোঁক গিলেছেন। বুঝেছেন, একটু গোলমাল হয়েছে। এই ভাগ করার রাজনীতি ওঁর রয়েছে, এটা সবাই বুঝেছে। এবার বিজেপির যেই দাঁড়াবেন, জিতবেন।” সংগঠনের শক্তি বাড়াতে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর স্পষ্ট কথা, “একটু সহযোগিতা করুন, বাকিটা আমি দেখব। মামলা হলে জামিন আমাদের দায়িত্ব। আক্রান্ত হলে পাশে দাঁড়াব, পরিবারের দেখভাল করব। কাজ বন্ধ হলে অন্যত্র ব্যবসা করিয়ে দেব।”
ভবানীপুরে জিতবে বিজেপি!
এদিন শুভেন্দু অধিকারী সাংবাদিকদের মুখোমুখিও হয়েছিলেন। সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, তিনি ভবানীপুরে বিজেপির প্রার্থী হবেন কি না? তখন শুভেন্দু বলেন, “বিজেপিতে এভাবে হয় না। পার্টি ঠিক করবে, কে প্রার্থী হবে।” তারপরই কেন ভবানীপুরে বিজেপি প্রার্থীই জিতবে সেই নিয়ে অঙ্ক কষে বোঝালেন । তাঁর মতে, “ম্যাপিংয়েই এক লক্ষ ২০ হাজারের নাম বাদ গিয়েছে। SIR হলে কমপক্ষে ৫০ হাজার মৃত ও ভুয়ো ভোটার ও চেতলায় থাকা বাংলাদেশি ভোটারের নাম বাদ যাবে। আর যাদের ক্যানিং ও ভবানীপুরে, ফলতা ও ভবানীপুরে নাম রয়েছে, এবার আর উঠবে না। তারপর তো এই সিটে লিড ৩০ হাজার দিয়ে শুরু করবে বিজেপি।”
আরও পড়ুন: সৈকত চৌধুরীর পর সুজয় চক্রবর্তী! হাওড়া পুরসভায় পদত্যাগের হিড়িক
পাল্টা চ্যালেঞ্জ তৃণমূলের
এদিকে ভবানীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানোর কথা বলার পর শুভেন্দু অধিকারীকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। শাসকদলের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “দম থাকলে শুভেন্দু অধিকারী নিজে দাঁড়ান ভবানীপুরে। অন্যকে প্রার্থী করে মই কেড়ে নেবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেরবার ৫৬ হাজার ভোটে জিতেছিলেন। এবার শুভেন্দু বিপরীতে প্রার্থী হলে দ্বিগুণ ভোটে জিতবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।” এমতাবস্থায় আজ অর্থাৎ সোমবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সেই বৈঠক ঘিরে শুভেন্দু অধিকারী মনে করছেন, আজই হয়ত পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর শুরুর ঘোষণা করতে পারে কমিশন। এবার দেখার পালা আদতে কী সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।












