প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ক্রমেই খারাপ অবস্থায় পরিণত হচ্ছে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা। তাইতো সেই ব্যবস্থার সঠিক হাল ধরতে এসএসসির (SSC) অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত নয় এমন চাকরিপ্রার্থীদের পুনর্বহাল করতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আবেদন জানান। আর সেই আবেদনে সুর নরম করে সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত নয় চাকরিপ্রার্থীদের স্কুলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। এবং তাঁদেরকে বেতন দেওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়। তবে রাজ্যকেও আগামী ৩১ মে-র মধ্যে নিয়োগপ্রক্রিয়া সংক্রান্ত হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু এবার সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছে চাকরিপ্রার্থীরা।
রাজ্যের ‘রিভিউ পিটিশন’ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন
গতকাল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সামনে আসার পরেই নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছে আদালত। আপাতত স্বস্তি। এই বছরেই সব সমাধান হবে বলে আশা করি। মানুষের কাজে ভুল করি না, নিজের কাজ ভুল করতে পারি। যথা সময়ে শিক্ষকেরা বেতন পাবেন।” তবে আদালতের এই নির্দেশে চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীদের বিষয়ে নয় কোনো ঘোষণা করেনি। আর এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “আইন অনুযায়ী কাজ করব। আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে বাকিটা ঠিক করব।” এদিকে রাজ্য এখনও ‘রিভিউ পিটিশন’ করেনি এবং ‘যোগ্য-অযোগ্যে’র তালিকার বিষয়ে সরকার এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলেনি আর তাই নিয়ে শাশকদলকে বিঁধেছেন রাজ্যের একাধিক বিরোধী নেতৃত্ব।
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কটাক্ষ শুভেন্দুর !
২০১৬ সালের দুর্নীতির গন্ধ ২০২৫ এও পাচ্ছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর আশঙ্কা রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ-পরীক্ষা নেওয়ার মাধ্যমে তৃণমূল ফের ‘টাকা তোলার সুযোগ’ নিতে চলেছে। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের রায় বেরোনোর পরেই শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, “পরীক্ষা করাবে দুর্নীতিগ্রস্ত এসএসসি। আগে চাকরি বিক্রি করেছে, এই বারে প্রশ্নপত্র বিক্রি করবে। ভাইপো দোকান খুলবে। বিধানসভা ভোটের আগে ৫০০-৭০০ কোটি টাকা তুলবে তৃণমূল। যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের অনেকেই চাকরি না-ও পেতে পারেন।” এছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে বিরোধী দলনেতা আরও বলেন যে, “ যোগ্যরা চাকরি বাঁচাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আদালত তাঁদের নয় মাসের বেতন নিশ্চিত করেছে তারপরেও সকলকে পরীক্ষায় বসতে হবে। আর এই সুযোগটা কাজে লাগিয়েই তৃণমূল ব্যাপক দুর্নীতি করবে।”
তবে শুধু শুভেন্দু অধিকারী নয়, এই নিয়োগ দুর্নীতি প্রশ্নে রাজ্য সরকারকে নিশানা করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং সুজন চক্রবর্তীও। শিলিগুড়িতে মহম্মদ সেলিম বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনের নিয়োগ-দুর্নীতির জন্যই চাকরিহারা ভুগছেন। সরকারি নিয়ম মেনে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হোক। মুখ্যমন্ত্রী যদি সোনার ঝাঁটা নিয়ে মন্দির উদ্বোধন করেন তবে মানুষও হাতে ঝাঁটা নিয়ে অপদার্থ সাম্প্রদায়িকদের বিদায় করবে।” তবে চুপ থাকেনি শাসকদল। এই বিষয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “সিপিএম জমানায় বাংলায়, ত্রিপুরাতে এবং বিজেপির আমলেও নানা জায়গায় বিভিন্ন কেলেঙ্কারি হয়েছে। এদের প্ররোচনায় পা দেবেন না।”
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।