প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: খবরের শিরোনামে ফের উঠে এসেছে তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) ওরফে কেষ্টর কর্মকাণ্ডের কাহিনী। বোলপুর থানার আইসি-কে কেষ্টর কদর্য ভাষায় গালিগালাজ করার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় কাণ্ড তৈরি হয়েছে। যদিও দলের চাপে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। কিন্তু ঘটনাটি এখানেই শেষ হচ্ছে না। অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে FIR রুজু করেছে পুলিশ। আজকেই হাজিরা দিতে হবে তাঁকে।
অনুব্রত কাণ্ডে ক্ষুব্ধ মমতা!
সূত্রের খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রতি বীরভূম জেলার প্রাক্তন সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে অনুব্রত মণ্ডলের একটি অডিও বেশ ভাইরাল হয়েছে। যেখানে বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ করে চুলের মুঠি ধরে বার করে নিয়ে আসার হুমকি! সঙ্গে মা-স্ত্রীর প্রসঙ্গ তুলে জঘন্য ভাষায় নোংরা ইঙ্গিতও করেছেন। যা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। রীতিমত শাষকদলের জোর জুলুমের চিত্র ফুটে উঠেছে। গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তারপরই নবান্নের তরফে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
স্রেফ ক্ষমা মানতে পারছে না বিরোধীরা
যদিও অডিও ভাইরাল হওয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের কড়া নির্দেশের পর সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এ ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন এবং ক্ষমা চেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট। কিন্তু এতকিছুর পরও স্রেফ ৪ লাইনের ক্ষমা প্রার্থনা করে বিবৃতি! তাও আবার অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজের সাফাই দেওয়ার চেষ্টা মেনে নিতে পারছে না বিরোধীরা। তিনি ক্ষমা চেয়ে নেওয়ায় পুলিশ আদৌ কড়া পদক্ষেপ করবে কিনা তা নিয়েও বিভিন্ন মহলে উঠছে প্রশ্ন। কারণ, এই প্রথম নয়, এর আগে অনেকবার রাজ্য পুলিশদের ওপর তিনি নানা অকথ্য ভাষা প্রয়োগ করেছেন। এমনকি ‘বোমা মারার’ নিদান দিয়েও বিতর্কের নজির গড়েছে এই প্রাক্তন জেলা সভাপতি।
অসংখ্য শাস্তিমূলক ধারা প্রবর্তনের সম্ভাবনা!
সেই কারণে পুলিশ যে এত তাড়াতাড়ি অনুব্রত মণ্ডলকে ছেড়ে দেবে না, তা বেশ বোঝাই যাচ্ছে। আর এই কাণ্ডে শাস্তিস্বরূপ এই দাপুটে নেতা বিভিন্ন ধারার চাপের প্যাঁচেও পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৩৫১ ধারায় প্রাণনাশ, পরিবারের ক্ষতি এমন হুমকি প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, জরিমানা, অথবা উভয়ই হতে পারে।
অন্যদিকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৮২ ধারায় হুমকিমূলক কথাবার্তা, অপমানজনক শব্দ প্রয়োগের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ৩ মাস কারাদণ্ড অথবা ১,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। এমনকি ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ২৩৪ ধারায় সরকারি কর্মচারীকে দায়িত্ব পালনে বাঁধা দেওয়ার জন্য জোর বা ভয় দেখানোর ঘটনায় সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, জরিমানা, অথবা উভয়ই হতে পারে।
আরও পড়ুন: শিক্ষকদের উপর লাঠিচার্জের প্রতিবাদ, ফের বড় কর্মসূচীর ঘোষণা চাকরিহারাদের
শুধু তাই নয়, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ২৩৩ ধারায় সরকারি কর্মচারীকে হুমকি দেওয়ার কারণে সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি হলে সর্বোচ্চ ৩ মাস কারাদণ্ড বা ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা, অথবা উভয়ই হতে পারে। এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৭৯ ধারায় জনসমক্ষে অশ্লীল বা অপমানজনক ভাষা ব্যবহার করায় সর্বোচ্চ ৩ মাস কারাদণ্ড, বা ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা, অথবা উভয়ই হতে পারে। অর্থাৎ এইমুহুর্তে কেষ্টর সামনে রয়েছে বিপুল চাপ। কিছুদিন আগেই গরু পাচার মামলা থেকে জামিন পেয়েছিল কেষ্ট আর এই আবহে নির্বাচনের আগে ফের জেল প্রসঙ্গে রীতিমত মাথায় হাত তাঁর।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |