কেঁচো খুঁড়তে কেউটে! ট্যাবের টাকা চুরি কাণ্ডের মাথা তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধানের ছেলে

Published:

tab case
Follow

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: প্রতিটি রাজ্য সরকারি স্কুলগুলির একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়াশোনার সুবিধার্থে ট্যাব কেনার জন্য সরকার ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্প (Taruner Swapna Scheme) চালু করেছিল। আর এই প্রকল্পের অধীনে এককালীন ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয় পড়ুয়াদের। তার জন্য আবেদনকারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি সেই টাকা ঢুকে যায়। স্কুলের মাধ্যমেই করা হয় আবেদন। কিন্তু চলতি বছর রাজ্যের অনেক পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা ঢোকেনি বলে অভিযোগ জানানো হয়েছে। আর তার তদন্তে একের পর এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হচ্ছে।

গ্রেফতার আরও ৩ জন!

ট্যাব কাণ্ডে দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যের নানা প্রান্তে অভিযোগ উঠে আসছে। কিছুদিন আগে সরশুনার একটি স্কুলে ৩১ জন পড়ুয়া ট্যাবের টাকা পায়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল। আর এই দুর্নীতির ঠিকানা বা উৎস খুঁজতে কলকাতা এবং মালদা পুলিশ বিশেষ তদন্তকারী দল অর্থাৎ সিট গঠন করে তদন্তে নেমেছে। তাঁদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তদন্তে নেমেছে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ CID-ও। এদিন সরশুনার স্কুলের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশ প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিল যে, এই দুর্নীতি চক্রের মাথা রয়েছে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায়। তার কারণ এর আগেও দু’জনকে চোপড়া থেকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। আর সেই ধারণা সত্যি হয়েই এবার গত রবিবার ট্যাব দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হল আরও তিন জন।

ট্যাব কাণ্ডে গ্রেফতার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক

সরশুনার একটি স্কুলে ৩১ জন ছাত্রী অভিযোগ করেছিল যে, তাদের ট্যাবের টাকা হাতে পৌঁছায়নি। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের স্কুল থেকেও এমন অভিযোগ আসতে শুরু করেছে। তদন্তে নেমে পুলিশ। অবশেষে পুলিশের কাছে গ্রেফতার হওয়া ধৃতরা হলেন চোপড়ার বাসিন্দা দিবাকর দাস, দার্জিলিঙের বাসিন্দা গোপাল রায় এবং বিশাল ঢালি। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল গ্রেফতার হওয়া এই তিনজনের মধ্যে দিবাকর দাস হলেন উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় একজন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। আবার তিনি বিশালের মাসতুতো দাদা হন। শুধু তাই নয় ধৃত গোপাল আবার দিবাকর এবং বিশালের জামাইবাবু হন। গোটা ঘটনায় টার্গেট করা হচ্ছে দিবাকর দাসকে। ধৃতদের আগামী ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আলিপুর আদালত।

কিন্তু গোটা ঘটনায় আবার কেঁচো খুটতে গিয়ে কেউটে বেরিয়ে এল। ট্যাব কাণ্ডে ধৃত উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক দিবাকর এর মা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল প্রধান ছিলেন। গ্রেফতার হওয়ার পর তদন্তকারীদের চাপে স্বীকারকরে নেয় যে তিনি ‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টালের প্রযুক্তিগত ফাঁককে কাজে লাগিয়ে ওই টাকা হাতিয়েছেন। এমনকী পুলিশি জেরার মুখে দিবাকর দেখিয়েও দিয়েছেন যে তিনি কীভাবে এই কাজ করেছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমেই পোর্টালের যে ‘ডিফল্ট পাসওয়ার্ড’ দেওয়া হয়, সেটা বদলে নেওয়ার নির্দেশ থাকলেও অনেক স্কুলই তা নির্দেশ মত করেনি। সেই সুযোগ নিয়ে সেগুলি ‘হ্যাক’ করে পড়ুয়াদের নামের পাশের অ্যাকাউন্টের নম্বর বদলে টাকা হাতিয়েছেন তিনি। আর এই আবহে ট্যাব কাণ্ডে আজ মালদার হবিবপুর থানার পুলিশ সাব্বির আলম নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ মালদা জেলা আদালতে পেশ করা হবে সাব্বিরকে। কিন্তু পুলিশের কাছে ধৃতের দাবি, মাটি কাটার টাকা ঢোকানো হবে বলে তাঁর অ্যাকাউন্ট নম্বর নিয়েছিলেন একজন। আর সেই কারণে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি সাব্বিরের।

গুরুত্বপূর্ণ
Join
চাকরির খবর
Join
রাশিফল
Join
খেলার খবর
Join