প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার ত্রিপুরার (Tripura) আগরতলায় তৃণমূল পার্টি অফিসে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, পুলিশের উপস্থিতিতে বিজেপি কর্মীদের মধ্যে একাংশ হঠাৎ করেই বিক্ষোভ দেখাতে দেখাতে কার্যালয়ে ঢুকে যায়। এবং ভাঙচুর, লুটপাট, ধ্বংস সবই চলে কয়েক ঘণ্টা ধরে। কিন্তু পুলিশ সেই ঘটনা বন্ধ করার জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। এবার তাই সেই ঘটনার প্রতিবাদেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ত্রিপুরা আসে তৃণমূলের ৬ প্রতিনিধিরা। কিন্তু সেখানে আসতেই পুলিশি প্রতিরোধে পড়তে হয় তাঁদের। আর তাতেই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়।
ধরনায় বসলেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ত্রিপুরা আসেন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল, সুস্মিতা দেব, বীরবাহা হাঁসদা, সুদীপ রাহা, সায়নী ঘোষ। কিন্তু আইনশৃঙ্খলার অবনতির অজুহাতে তাঁদের বিমানবন্দর চত্বর ছাড়তে বাধা দেয় পুলিশ। অভিযোগ, ত্রিপুরা বিমানবন্দর থেকে কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য তাঁদের জন্য চারটি গাড়ি থাকার কথা ছিল। কিন্তু তাঁরা পৌঁছে জানতে পারেন, একটি মাত্র গাড়ি রয়েছে। এদিকে পুলিশের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয় যে একবারেই সকলকে যেতে হবে একসঙ্গে। কিন্তু সেই মুহূর্তে তা অসম্ভব। তাই কুণাল ঘোষ এগিয়ে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু তাতে সুরাহা হয়নি। এদিকে অটো বা প্রিপেড ট্যাক্সিও বুক করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। আর সেই কারণে এবার প্রতিবাদে ধরনায় বসলেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
.@narendramodi often lectures others on democracy. We ask him:
👉 Is democracy being upheld in Tripura
👉 Is it democracy when the office of the Opposition is vandalised
👉 Is it democracy when sitting MPs and state ministers are blocked from visiting affected areas
👉 Is it… pic.twitter.com/jC5pSaoWut— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) October 8, 2025
বিমানবন্দরে পুলিশের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ
ত্রিপুরা বিমানবন্দরে পুলিশের এই রূপ কর্মকাণ্ডে ক্ষিপ্ত হয়ে বীরবাহা হাঁসদা বলেন, “দুঃখজনক ঘটনা। এতদিন বিজেপি নেতারা বলে আসে যে বাংলা সেফ না। আমরা ত্রিপুরা এসে দেড়ঘণ্টা বসে আছি, কিন্তু গাড়ি পাচ্ছি না। টাকা দিলেও গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না। বাংলায় গিয়ে দেখুন কীভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার চালান। বাংলায় এসব হয় না। বাংলায় আমরা শান্তিতে আছি। এসে দেখে যাও।” চুপ থাকেনি সায়নী ঘোষ। তিনি বলেন, “এটা ত্রিপুরা সরকারের ব্যর্থতা। আমাদের পার্টি অফিস ভাঙা হয়েছে বলে এসেছি, তাতেও সমস্যা। আপনারা তো রোজ বাংলায় যান। এত কীসের ভয়।”
আরও পড়ুন: আগরতলায় তৃণমূলের দফতর ভাঙচুর! ত্রিপুরা রওনা কুণাল, সায়নীসহ ৬ সদস্যের
উল্লেখ্য, গতকাল আগরতলায় তৃণমূল কার্যালয়ে এইরূপ ভাঙচুরের ঘটনায় বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেছিল বাংলার শাসক দল। সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছিলেন। যেখানে লেখা হয়েছিল যে, ‘যাঁরা ক্ষমতায় থেকেও প্রতিপক্ষের কণ্ঠ রোধ করতে হিংসার আশ্রয় নেয়, তাঁরা আসলে নিজেদের দুর্বলতা ও নৈতিক দেউলিয়াপনা প্রকাশ করে।’ এছাড়াও সেই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, “বিজেপি একদিকে ‘গণতন্ত্র বাঁচানোর’ কথা বলে, অন্যদিকে রাজ্য থেকে রাজ্যে গণতন্ত্রের ভিতকেই নষ্ট করতে চায়। কিন্তু এতে তৃণমূল যে ভয় পাবে না বা পিছিয়ে আসবে না, তা স্পষ্ট করেছে।”