তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের মূল্য চোকাতে হল মহিলাকে! উত্তপ্ত কোচবিহার

Published:

TMC Internal Clash
Follow

প্রীতি পোদ্দার, কোচবিহার: হাতে বাকি আর মাত্র কয়েকটা মাস, এরপর বছর ঘুরতেই শুরু হতে চলেছে ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। একচুলও জমি ছাড়তে নারাজ রাজনৈতিক দলগুলি। এমতাবস্থায় ফের শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল (TMC Internal Clash) দেখা গেল কোচবিহারে। জানা গিয়েছে সোমবার সকালে কোচবিহার-১ ব্লকের শুকটাবাড়িতে গোষ্ঠীকোন্দল ঘিরে তীব্র বোমাবাজিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। ঘটনায় জখম হয়েছেন স্থানীয় এক গৃহবধূ ও তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতির এক আত্মীয়। দু’জনকেই গুরুতর জখম অবস্থায় ভর্তি করানো হয়েছে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে।

ঠিক কী ঘটেছে?

রিপোর্ট অনুযায়ী, গত রবিবার রাত থেকেই কোচবিহার-১ ব্লকের শুকটাবাড়ি এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করে। তবে সেই উত্তেজনা বিরোধী এবং শাসকদলের মধ্যে ছিল না, ছিল তৃণমূল বনাম তৃণমূল। জানা গিয়েছে এলাকায় গোষ্ঠীকোন্দলের সূত্রপাত হয়েছিল তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি সিরাজুল হকের অনুগামী ও জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের গোষ্ঠীর মধ্যে। রাতভর দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ, বোমাবাজি এবং তীব্র গালিগালাজ চলে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে গতকাল অর্থাৎ সোমবার ভোরেই মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি ঠিক হয়নি, সকাল হতে না হতেই ফের বোমা বিস্ফোরণ ঘটে এলাকায়। আর সেই বোমাবাজিতে জখম হন স্থানীয় মহিলা এবং তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতির এক আত্মীয়।

ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত সিরাজুল হকের প্রতিবেশীকে

সোমবার কোচবিহারের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে শুকটাবাড়িতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। নুরনাহার বেগম নামে আহত সেই স্থানীয় মহিলার পরিবারের তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছে যে তিনি বাড়ির গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন, হঠাৎই রাস্তায় ছোঁড়া একটি বোমা গিয়ে ফেটে পড়ে তাঁর পায়ের কাছে। গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে। এছাড়াও তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি সিরাজুল হকের প্রতিবেশী এন্তাজুল হকের উপরেও হামলা চালানো হয়। অভিযোগ পরেরদিন সকালবেলায় বাজারে বেরোতেই এক গোষ্ঠীর কর্মীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর মাথা ও হাতে আঘাত করে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকেও ভর্তি করা হয়েছে কোচবিহার মেডিক্যালে।

ঘটনায় গ্রেফতার ১

এদিকে ঘটনার পর থেকেই এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। আহতের পরিজনেরা অভিযোগ তুলেছেন, জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের অনুগামীরাই নাকি বোমাবাজির তাণ্ডব চালিয়েছে। ইতিমধ্যে পুলিশ আটক করেছে প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতির ছেলে রাশেদ হককে। এদিকে রাশেদ হক দাবি করেছেন, অভিজিৎ দে ভৌমিকের নেতৃত্বে রবিবার রাত থেকে হামলা চলছে। যারা সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে, তারাই বিভিন্ন পদে বসে আছে।অন্যদিকে, ঘটনাটি নিয়ে মুখ খুলে গোষ্ঠীকোন্দলের কথা অবশেষে স্বীকার করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা বিধায়ক উদয়ন গুহ।

আরও পড়ুন: তোলাবাজিতে অতিষ্ঠ! আরামবাগে দুটি রুটে বন্ধ হল বাস পরিষেবা

চরম কটাক্ষ বিজেপির

সাংবাদিকদের কাছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ মন্তব্য করেছেন যে, ‘‘কোচবিহার জেলার কিছু নেতার উস্কানিতে এই সমস্ত ঘটনা ঘটছে। বর্তমানে যাঁরা জেলার দায়িত্বে রয়েছেন, রাজ্যের কাছে তাঁদের ছোট করার জন্য ইচ্ছাকৃত ভাবে এই সকল ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। দ্রুত এঁদের চিহ্নিত করে দল থেকে বহিষ্কার করা উচিত।’’ এদিকে শাসকদলের এই গোষ্ঠী কোন দলের পরিণতি দেখে তীব্র কটাক্ষ করল বিজেপি। জেলা সভাপতি বিজেপি নেতা অভিজিৎ বর্মণ বলেন, ‘‘এখানে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূলের জেলা সভাপতির নেতৃত্বে এলাকায় বোমাবাজি হচ্ছে। ওদিকে পুলিশ-প্রশাসন নীরব দর্শক! মাঝখান থেকে বিপদে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।’’

গুরুত্বপূর্ণ
Join
চাকরির খবর
Join
রাশিফল
Join
খেলার খবর
Join