প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত সোমবার নবান্ন সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সব মিলিয়ে সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর সম্মুখে চোখে চোখ রেখে নিজেদের দাবি তুলে ধরেছিল জুনিয়র ডাক্তারদের ১৭ জন প্রতিনিধি। কিন্তু সেই বৈঠকে এই ১৭ জন প্রতিনিধির মধ্যে একজন জনমানসের নজর কেড়ে নিয়েছিলেন। তিনি হলেন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার মনীষা ঘোষ (Doctor Manisha Ghosh)। দৃঢ় এবং শান্ত কণ্ঠে এদিন বৈঠকে সামান্য কয়েকটি বাক্যে তিনি মোটেও দ্বিধা করেননি। বরং উল্টে মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাকরণের ভুল শুধরে দিলেন তিনি। ‘অভিযুক্ত’ এবং ‘দোষী’ এর মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরলেন।
ব্যাকরণ বা আইনের দিক থেকে মনীষাকে টেক্কা দিল সন্দীপন! Manisha Ghosh Vs Mamata Banerjee
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হাওয়া ডাক্তারদের বৈঠকের সেই ভিডিয়োতে দেখা যায় মনীষা স্পষ্ট ভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাচ্ছেন যে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তাঁকে অভিযুক্ত বলা হয়। যতক্ষণ না তিনি দোষী বা নির্দোষ প্রমাণিত হচ্ছেন, তত ক্ষণ তিনি অভিযুক্ত। কিন্তু অভিযোগ প্রমাণিত হয়ে গেলে তিনি দোষী। ব্যাকরণ বা আইনের দিক থেকে এতে কোনও ভুল নেই। যদিও শেষ পর্যন্ত এই ব্যাখ্যার সঙ্গে সম্মতি হননি মমতা। আর এবার মনীষার এই ব্যাখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সম্পাদক সন্দীপন মিত্র।
কী লেখা ছিল নথিতে?
জানা গিয়েছে, একটি নথির লেখনী উল্লেখ করে সন্দীপন এদিন দাবি করলেন, কোনও প্রমাণ ছাড়া কাউকে অভিযুক্ত বলা যায় না বলে মুখ্যমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছিলেন, সেটা তিনি ঠিকই বলেছিলেন। আসলে সেই নথির মধ্যে বলা আছে যে, ‘তদন্তের পরে তদন্তকারী অফিসার যখন চার্জশিট জমা দেন এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে বিচারাধিকারের আওতায় আনা হয়, তখন সেই ব্যক্তি অভিযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হয়।’ আসলে এই নথিটি নেওয়া হয়েছে পাটনা হাইকোর্টের ২০১৬ সালের একটি মামলার রায় থেকে। যেখানে বলা হয়েছিল যদি কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে FIR রুজু করা হয়, তাহলে ওই মামলায় তাঁকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ‘অভিযুক্ত’ হিসেবে নয়।
ভুল বলেছিলেন জুনিয়র ডাক্তার মনীষা ঘোষ। কারোর নামে অভিযোগ উঠলেই, আইনত তাকে অভিযুক্ত বলা যায় না। টাকা দিয়ে প্রাইভেটে পড়লে এই হয়। ৭ বারের এমপি, ৪ বারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, ৩ বারের মুখ্যমন্ত্রীকে আইন শেখাতে এসেছে!
লিংক – https://t.co/d2bRbanh0y pic.twitter.com/4cpEyXRz68
— Sandipan Mitra (@SMitra_) October 23, 2024
এদিন সন্দীপন এই নথি তুলে ধরার পাশাপাশি মনীষাকে রীতিমত তুলোধোনা করে জানিয়েছেন ‘টাকা দিয়ে প্রাইভেটে পড়লে এরকমই হাল হয়। আর সেই শিক্ষা নিয়ে সাতবারের সাংসদ, চারবারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, তিনবারের মুখ্যমন্ত্রীকে আইন শেখাতে এলে অনেক কিছু জেনে আসতে হয়। ’ তবে এই বিষয়ে পড়ে মনীষার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।