প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: প্রায় ৮ বছর আগে ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বরে পূর্ব বর্ধমানের নাড়িগ্রাম দাসপাড়ায় তৃণমূলের (TMC Leaders ) গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা এক ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল। সেই ঘটনায় আহত হয়েছিলেন তৎকালীন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য জীবন পাল। এরপরেই গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে জীবন পালের স্ত্রী সন্ধ্যারানি পাল বর্ধমান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেখানে তিনি কাকলি গুপ্ত-সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা করেন। এবং বলেন, “শাসকদলের ক্ষমতাসীন নেতারা জীবনকে বেধড়ক মারধর করেন। এমন কি, শ্বশুরমশাই দেবু পালের উপরও হামলা হয়। এতদিন ধরে সেই মামলা আদালতে বিচারাধীন ছিল। অবশেষে তার সুরাহা মিলল।
১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত আদালতের
সূত্রের খবর, গতকাল অর্থাৎ সোমবার ফাস্টট্রাক সেকেণ্ড কোর্ট বিচারক অরবিন্দ মিশ্র তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য জীবন পালের স্ত্রী সন্ধ্যারানি পালের দায়ের করা মামলায় শুনানি করেন। সেই মামলায় বিচারক ১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন এবং বাকি দু’জনকে বেকসুর খালাস করা হয়। আর দোষীদের জেল হেফাজতে পাঠিয়ে আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার চূড়ান্ত রায় দেওয়া হবে বলে জানানো হয় আদালতের তরফে। আর এই অভিযুক্তদের তালিকার মধ্যে রয়েছে কাকলি গুপ্ত, মানস ভট্টাচার্য, অঞ্চল সভাপতি শেখ জামাল, রায়ান গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কার্তিক বাগ-সহ আরও তৃণমূলের নেতা ও কর্মীরা।
গাড়িতেই অসুস্থতাবোধ করেন কাকলি
কিন্তু আদালতের এই রায়ে ব্যাপক শোরগোল পরে যায় শাষকদলের তৃণমূল শিবিরে। অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী বিশ্বজিৎ দাস ও কমল দত্ত আদালতের রায়ে অবাক হয়ে গিয়েছেন। তাঁরা জানান, এই মামলায় তেমন কোনও সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই। তাহলে কীভাবে এই রায় হল তা আশ্চর্যের। এদিকে বিক্ষোভ দেখাতে রীতিমত বিধায়ক-সহ দলের বাকি নেতা, কর্মীরা আদালতের সামলে চলে আসেন। আর ওই সময়ই কাকলি-সহ ১৩ জনকে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। কিন্তু হঠাৎ করেই যাওয়ার পথে গাড়িতেই অসুস্থতাবোধ করেন কাকলি-সহ বাকি তিন জন। অবস্থা ভালো না বুঝে তড়িঘড়ি তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চলছে তাঁদের চিকিৎসা।
আরও পড়ুনঃ মায়ের সামনেই নগ্ন করে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে নির্যাতন মালদায়! এখনও অধরা অভিযুক্তরা
চিকিৎসার গতিপ্রকৃতি কেমন সেই বিষয়ে বর্ধমান মেডিক্যালের অধ্যক্ষ মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানিয়েছেন, চার জনের মধ্যে কাকলি গুপ্ত বুকে ব্যথা নিয়ে এসেছেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর ইসিজি করা হয়। আর সেই রিপোর্টে বেশ কিছু সমস্যা লক্ষ্য করা গিয়েছে। তাই তাঁর বেশ কিছু শারীরিক পরীক্ষা করার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে বাকি তিন জনকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। এদিকে আদালতের রায় নিয়ে রাজনৈতিক দলে বেশ শোরগোল পরে গিয়েছে। যদিও জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “আদালতের বিষয় না জেনে কিছু বলা সম্ভব নয়।” অন্যদিকে বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “দলীয় কোন্দল কোন জায়গায় গিয়েছে এটা তার প্রমাণ।” আশঙ্কা করা হচ্ছে আজকে সাজা ঘোষণার পর সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করবে অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।