প্রীতি পোদ্দার: দেখতে দেখতে ১ মাসের উপরে। কিন্তু এদিকে আরজি কর ঘটনার এখনও কোনো সুবিচার পাওয়া গেল না। এখনও তাই সেই সুবিচারের আশায় অপেক্ষা করে রয়েছে গোটা রাজ্য। আর এদিকে তিলোত্তমাকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা শর্টফিল্ম নিয়ে বঙ্গে চলছে তুঙ্গে বিতর্ক! তার জেরেই সাসপেন্ড তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সহ-সভাপতি প্রান্তিক চক্রবর্তী এবং যুবনেত্রী রাজন্যা হালদার।
ঘটনাটি কী?
সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার TMCP-র রাজ্য সহ সভাপতি প্রান্তিক চক্রবর্তীর পরিচালনায় ‘আগমনী’ শর্ট ফিল্মটির পোস্টার মুক্তি পায়। সেই পোস্টারের মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন রাজন্যা হালদার। যিনি কিনা TMCP-র সহ সভানেত্রী। সেই পোস্টারে দেখা যাচ্ছে তিনি ডাক্তারদের অ্যাপ্রন পরে আছেন। তাঁর গলায় রয়েছে স্টেথোস্কোপ, মাথায় রয়েছে কনের মুকুট এবং নাকে নথ। ‘আগমনী’ লেখাটির সঙ্গে রয়েছে আরও একটি লাইন- তিলোত্তমাদের গল্প। এর পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। জুটেছে নিজেদের আত্মপ্রচার করার মত অভিযোগ।
কী বলছেন কুণাল ঘোষ?
এদিকে আগমনী’র পোস্টার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হতেই ভাইরাল হয়ে যায় এবং নানা কটাক্ষের বন্যা বয়ে যায়। এমনকী সেই কটাক্ষ থেকে বাদ যাননি কুণাল ঘোষও। তিনি তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে লিখেছেন যে আরজিকর প্রসঙ্গ নিয়ে যে একটি শর্টফিল্মের খবর এসেছে তার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। এই স্পর্শকাতর বিষয়কে প্রচারে ব্যবহার করার চেষ্টার আমরা বিরোধী। আমরা তিলোত্তমার পূর্ণ ন্যায় বিচার চাই। যে কোনও ব্যক্তির স্বাধীনতা আছে সৃষ্টিতে কিন্তু তদন্তাধীন এই মর্মান্তিক ঘটনাকে দলের সঙ্গে জড়িত কেউ যদি ছবির প্রচারে ব্যবহার করে, সেই দায়িত্ব দল নেবে না। যে বা যারা এর সঙ্গে জড়িত, খতিয়ে দেখে, কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে।
সাসপেন্ড নোটিশ পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল ছাত্র পরিষদদের
কুণালের এই বক্তব্যের পরই জানা যায়, তৃণমুল ছাত্র পরিষদ তাঁদের সাসপেন্ড করেছে। গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র পরিষদের তরফ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে জানানো হয়, ‘পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এতদ্বারা জানাচ্ছে যে প্রান্তিক চক্রবর্তীকে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এবং একই সঙ্গে যাদবপুর ডায়মন্ড হারবার জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজন্যা হালদারকেও সাসপেন্ড করা হল দল বিরোধী কাজ করায়। যতদিন না কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাচ্ছে ততদিন এই সাসপেনশন বহাল থাকবে।’
কী বলছেন রাজন্যা?
শাসকদলের এই হেন সিদ্ধান্তে বেশ অবাক রাজন্যা এবং প্রান্তিক। আর সেই প্রসঙ্গে রাজন্যার দাবি, “শর্ট ফিল্মটি সমস্ত নির্যাতনের বিরুদ্ধে বার্তা দিতে তৈরি করা হয়েছে। নারী-পুরুষ উভয়েরই নির্যাতনের বিরুদ্ধে বার্তা দেওয়ার জন্য করা হয়েছে। এই শর্ট ফিল্মে কোনও রাজনৈতিক বক্তব্য নেই। সোজা কথায় বলতে গেলে কোনো রাজনৈতিক রং নেই। তাই সিনেমা না দেখেই মানুষ কী ভাবে শুধু একটা পোস্টার দেখে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তা আমার জানা নেই। প্রচ্ছদ দেখে গোটা উপন্যাসের বিচার করা ঠিক নয়।” এছাড়াও প্রান্তিকের মুখেও একই সুর। তিনি এদিন বলেন আগে সকলে এই সিনেমা দেখুন, তারপর যা হবে আমরা সকলেই তা মাথা পেতে নেব।
প্রসঙ্গত, মহালয়ার দিন অর্থাৎ ২ অক্টোবর মুক্তি পাচ্ছে ‘আগমনী’ নামে শর্ট ফিল্মটি। কিন্তু এত ঝামেলা ঝঞ্ঝাট এর মধ্যে প্রশ্ন উঠছে আদেও পূর্ব ঘোষণা মতো এই শর্ট ফিল্মটি মহালয়ার দিনেই ইউটিউবে আপলোড হয় কি না। যদিও পরিচালক প্রান্তিক বলছেন, গোটা শর্ট ফিল্ম জুড়ে কী কী তথ্য দেওয়া আছে তা শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।