প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই ডিভিসির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে ধরেছে প্রশাসন। না বলে অত্যাধিক হল ছাড়ার কারণে বন্যা পরিস্থিতি এলাকায়। তাই এবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ঝাড়খণ্ডের মাইথনে গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার আসানসোলে (Asansol) ডিভিসি অফিস ঘেরাও করার কর্মসূচি নেয় রাজ্য তৃণমূল। প্রায় ৫-৬ হাজার মানুষকে আনা হয় মাইথনে। কিন্তু সভাস্থল দেখা গেল কার্যত ফাঁকা। হাজার হাজার তৃণমূলকর্মী সমর্থকরা ঝান্ডা কাঁধে ঘটাল আরেক কাণ্ড।
ঠিক কী ঘটেছে?
স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী আসানসোলের কর্মসূচি করার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এক নয়া উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। গতকাল কর্মীদের সভাস্থলে নিয়ে আসার জন্য প্রায় ১০০-র বেশি SBSTC বাস তুলে নেওয়া হয় ডিপো থেকে। প্রায় ৫-৬ হাজার মানুষকে আনা হয় মাইথনে। ঠিক সেই সময় মাইথন থেকে জল ছাড়া হয় মাত্র ১২ হাজার কিউসেক হারে। আর সেই দৃশ্য দেখতেই হুড়মুড়িয়ে সভাস্থল ছেড়ে, কর্মসূচি ছেড়ে বেরিয়ে যান কর্মীরা। কেউ কেউ সেলফিও তোলেন। তাই কোনও উপায় না মেলায় কার্যত ফাঁকা ময়দানে বক্তব্য রাখলেন বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক হারেরাম সিং, ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক এমনকী মন্ত্রী মলয় ঘটকও।
‘জল ছাড়া নিয়ে মিথ্যে অভিযোগ রাজ্যের!’
জানা গিয়েছে এদিন দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের মাইথন অফিসে বিধায়ক মন্ত্রীদের হাত থেকে ডেপুটেশন গ্রহণ করেন ডিভিসি ইডি সিভিল সুমন প্রসাদ সিং। এতদিন ধরে অভিযোগ উঠে আসছে যে DVC নাকি রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছাড়ে এর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সুমন প্রসাদ সিং স্পষ্ট জানান যে, রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছাড়া হয় না। জল ছাড়া হয় সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের নির্দেশে। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ সহ বিভিন্ন গ্রুপ রয়েছে, যেখানে রাজ্যের নির্দিষ্ট প্রতিনিধিরাও রয়েছেন। সুতরাং তাঁদের কাছে সেই তথ্য যায়। তাই এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে।
আরও পড়ুন: আগরতলায় তৃণমূলের দফতর ভাঙচুর! ত্রিপুরা রওনা কুণাল, সায়নীসহ ৬ সদস্যের
উল্লেখ্য, না জানিয়ে জল ছাড়ার অভিযোগ তোলার পাশাপাশি এদিন আরও একটি অভিযোগ তুলে ধরেছে ডিভিসি ইডি সিভিল সুমন প্রসাদ সিং। রাজ্য প্রশাসন নাকি দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনকে জানিয়েছে, নিম্ন দামোদর উপত্যকা এলাকায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার কিউসেক পর্যন্ত জল ধারণ ক্ষমতা আছে। আর এই পরিমাণ জল ছাড়লে বন্যা পরিস্থিতি হয় না। কিন্তু ডিভিসি থেকে এবার সর্বোচ্চ ৭০ হাজার কিউসেক পর্যন্তই জল ছাড়া হয়েছে। তাই জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই, সেক্ষেত্রে তৃণমূলের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে বলে দাবি করা হচ্ছে।