প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: এখন দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিধানসভা ভোট হয় বিভিন্ন সময়ে। আবার কেন্দ্রীয় সরকারের মেয়াদ শেষ হলে, লোকসভা ভোট! এই ব্যবস্থাটিকে এবার বদলে ফেলতে চাইছে মোদী সরকার। চলতি বছর লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নিয়ে সওয়াল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ প্রস্তাব খতিয়ে দেখার জন্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়েছিল মোদী সরকার।
রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে রিপোর্ট জমা
মোদি সরকার এর দাবি ছিল ঘন ঘন নির্বাচনে দেশের উন্নয়নমূলক কাজে বাধা পড়ে যায়। এছাড়াও বিপুল পরিমাণে অর্থ খরচ হয়। তাই সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, গোটা দেশ ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নিয়ে সমর্থনও জানাচ্ছে। তাই সব রাজনৈতিক দলগুলিকে এই বিষয়ে সমর্থন করার আহ্বানও জানান তিনি। গত মার্চ মাসে সেই কমিটি রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। যেখানে ‘এক দেশ, এক নির্বাচনে’-এর পক্ষে সায় দেওয়া হয়েছে। যদিও বিরোধী দলগুলি শুরু থেকেই বিরোধিতা করে এসেছে। তাঁদের অভিযোগ, মোদি সরকার এইভাবে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ধাঁচের ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে।
কী বলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
এদিকে কেন্দ্রের ‘এক দেশ-এক নির্বাচনে’র প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিরোধীরা। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই উচ্চ পর্যায়ের কমিটি সম্পাদক নীতীন চন্দ্রকে চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। মমতার মতে, ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এই ভাবনা অস্বচ্ছ ও অগণতান্ত্রিক। রাজ্যের মতামত ছাড়াই একতরফাভাবে উপর থেকে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে’। প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘কমিটিতে কেন কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে রাখা হয়নি’? কিন্তু নাছোড়বান্দা গেরুয়া শিবির। বিল পাশ করানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে।
চলতি অধিবেশনেই বিল পাশ?
সূত্রের খবর, আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার চলতি অধিবেশনের ১৪তম দিনে এক দেশ এক নির্বাচনের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে মোদির মন্ত্রিসভা। সংসদের চলতি অধিবেশনেই এই মর্মে বিল পেশ করতে চলেছে মোদি সরকার। প্রথমে এই ব্যাপারে শোনা গিয়েছিল যে শীতকালীন অধিবেশনে না হলেও হয়তো পরবর্তী অধিবেশনে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ এর বিলটি পেশ করা হতে পারে। কিন্তু বর্তমানে রাজনৈতিক মহলে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে আগামী ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে এক দেশ এক ভোট বিল পেশ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।