টোটো চুরিই কাজ, হাওড়া স্টেশনে ছদ্মবেশে অভিযান পুলিশের, গ্রেফতার এক বিজেপি নেতা

Published:

Baruipur
Follow

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: পরিবার নিয়ে কেদারনাথ দর্শন করতে যাচ্ছিল বারুইপুরের টোটো চুরি ঘটনার মূল পান্ডা! কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে সবটাই ভেস্তে গেল। একেবারে সিনেমার মতন হাওড়া স্টেশন থেকে চোর ধরল বারুইপুর থানার পুলিশ আধিকারিকরা। তবে এখানেই শেষ নয়, তদন্তের মাধ্যমে ধৃতকে জিজ্ঞাসা করতেই উঠে এল এক বিস্ফোরক তথ্য। জানা গিয়েছে এই চক্রের পিছনেই নাকি জড়িয়ে রয়েছে স্থানীয় এক বিজেপি নেতা। চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি এলাকা জুড়ে।

টোটো চুরির দাপট এলাকা জুড়ে

উল্লেখ্য, সম্প্রতি বারুইপুর থানার অন্তর্গত বিভিন্ন এলাকা থেকে একের পর এক টোটো চুরির ঘটনা ঘটে দেখা গিয়েছে। সব মিলিয়ে গত এক মাসে অন্তত ১২টি টোটো চুরি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এমতাবস্থায় গত ১৫ আগস্ট শহরের কাছারি বাজারের সামনে থেকে একটি টোটো চুরি হয়ে যায়। সেই টোটোর মালিক অজিত বিশ্বাস থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই ঘটনাটি অন্যরকম ঠেকায় তদন্তে বিশেষ উদ্যোগ নিতে দেখা যায় পুলিসের অন্দরে। জানা গিয়েছে বারুইপুর থানার আইসি সৌম্যজিৎ রায়ের নির্দেশে SI রনি সরকারের নেতৃত্বে টিম গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেই বেরিয়ে আসে আসল সত্যি।

নাটকীয় ভঙ্গিতে স্টেশন থেকে ধরা পড়ল চোর!

পুলিশের তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে এলাকার একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার পর টোটো চুরির ঘটনায় মূল পান্ডা হিসেবে চিহ্নিত করা হয় চন্দন সরকারকে, তাঁর বাড়ি পূর্ব বর্ধমানে। একেবারে নাটকীয় কায়দায় হাওড়া স্টেশন থেকে চন্দনকে গ্রেপ্তার করে বারুইপুর পুলিশের বিশেষ টিম। গত সোমবার পরিবার সহ কেদারনাথ দর্শনের জন্য হাওড়া স্টেশনে হাজির হয়েছিল সে। পুলিশের ওই দল জানতে পারে, চন্দন কুম্ভ এক্সপ্রেস ধরবে। সেই মতো প্ল্যান তৈরি করেন তদন্তকারীরা। কেউ চা ব্যাপারী, ট্রেনের যাত্রী অথবা কেউ ফেরিওয়ালা সেজে আগে থেকেই পুলিশ আধিকারিকরা ছক তৈরি করে রাখেন। শেষে দুপুর ১টা নাগাদ স্টেশন থেকে তাকে হাতেনাতে পাকড়াও করা হয় তাঁকে।

আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ভান্ডারে মিলবে ৩০০০ টাকা? দাবির মাঝেই বর্ধমান থেকে বড় ঘোষণা মমতার

জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এল বিস্ফোরক তথ্য

টোটো চুরির ঘটনায় চন্দন সরকারকে গ্রেপ্তার করার পর চলে টানা জিজ্ঞাসাবাদ। কীভাবে এই চক্র চালাতেন সেই ব্যাপারে শেষে নিজেই মুখ খুললেন ধৃত চন্দন। তিনি জানিয়েছেন, টোটো চুরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন তিনি। কাছে রেখে দিত ব্যাটারি চার্জারও। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চক্রের আরও এক সঙ্গীর নাম পাওয়া গিয়েছে। তিনি নাকি পাচার করা টোটোর রিসিভার ছিলেন। অভিযুক্তের নাম রমাপদ মণ্ডল এই চন্দনের সঙ্গে ‘রিসিভার’ রমাপদর জেলে আলাপ হয়েছিল। তাঁর বাড়ি নদীয়ার চাকদহ দরাতপুরের। জানা গিয়েছে, ওই রমাপদ মণ্ডল নাকি স্থানীয় এক বিজেপি নেতা।

তদন্তের মাধ্যমে আরও জানা যায় যে চন্দন চুরি করে টোটো পৌঁছে দিত রমাপদর কাছে। রমাপদ টোটো বিক্রি করত সর্বাধিক ১ লক্ষ টাকায়। কখনও কখনও মাত্র ২৫ হাজার টাকায় টোটো বিক্রি হয়ে যেত। এই তথ্য জানা মাত্র পুলিশের আরও একটি দল হানা দেয় নদিয়ায়। শেষে রমাপদের বাড়ি থেকে খোয়া যাওয়া ৭টি টোটো উদ্ধার হয়। এরপরেই ওই ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এই ঘটনায় শুধুমাত্র এঁরা দুজন জড়িয়ে নয়, পুলিশের ধারণা আরও একজন বড় কেউ জড়িত আছে, তাঁর সন্ধানে ময়দানে নেমেছে পুলিশ।

গুরুত্বপূর্ণ
Join
চাকরির খবর
Join
রাশিফল
Join
খেলার খবর
Join