প্রীতি পোদ্দার, নদীয়া: দেখতে দেখতে চলেই এল সরস্বতী পুজো। হাতে মাত্র আর কয়েকটা দিন। আর সরস্বতী পুজো মানেই পড়ুয়াদের জীবনে এক আনন্দের দিন। প্রতিটা স্কুলে স্কুলে শুরু হয়ে যায় সরস্বতী পুজোর তোড়জোড়। ঠাকুর আনা থেকে শুরু করে ঘর সাজানো, আলপনা দেওয়া, প্রতিটা স্কুলে কার্ড বিলি করা এসব কিছু নিয়েই শুরু হয় উল্লাস। এককথায় পড়ুয়াদের কাছে এই পুজো এক মহোৎসবও বটে। তবে সম্প্রতি সরস্বতী পুজো করা নিয়ে ঘটে গেল এক মহা বিপদ। পুজো যাতে না হয় সেই ব্যাপারে রীতিমত হুমকি দিল তৃণমূল বুথ সভাপতি।
ঘটনাটি কী?
চলতি বছর সরস্বতী পুজো করা নিয়ে বড় বাধার মুখে পড়েছে নদিয়ার হরিণঘাটা থানার অন্তর্গত নগরউখড়ার দাসপোলডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়। বাকি স্কুলগুলোর মত সেই স্কুলে সরস্বতী পুজোর আয়োজনের ব্যবস্থা করেছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কাশীরাম বর্মন। অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে সরস্বতী পুজোর তোড়জোড় শুরু করেন তিনি। কিন্তু অভিযোগ ওঠে সেখানকার তৃণমূলের স্থানীয় বুথ সভাপতি আলিমুদ্দিন মণ্ডল এই পুজো হতে দিচ্ছে না। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কাশীরামবাবুকে রীতিমতো হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, স্কুলে সরস্বতী পুজো হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে বদলি করে দেবেন তিনি। এমনকি তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগালিও করেন বলে অভিযোগ ওঠে। মারামারির অভিযোগও ওঠে। যা নিয়ে রীতিমত শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়।
সমালোচনা শুরু বিরোধী দলের
উত্তেজনার এই খবর পেয়েই সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে চলে আসেন নগরউখড়া পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ। দু’পক্ষকেই থানায় ডাকা হয়। এবং সেখানেই মিটমাট করার কথা বলা হয়েছে পুলিশের তরফে। কিন্তু এদিকে ঘটনার পর থেকে রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছেন ওই স্কুলের শিক্ষক থেকে পড়ুয়ারা। আর এই খবর চাউর হতেই রাজনীতির ময়দানে ওঠে জোর তরজা। বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার জানিয়েছেন “ওরা মাস্টারকে এসে সাফ বলেছিল ওখানে সরস্বতী পুজো করা যাবে না। এটা যাঁরা হুমকি দিয়েছে তাঁদের দোষ নয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুধেল গাইকে এভাবে আস্কারা দিয়েছেন বলেই আজ স্কুলে মা সরস্বতীর পুজোর বিরোধিতা করছে।”
আরও পড়ুনঃ রিজার্ভেশন ছাড়া মাত্র ৪০ টাকায় হবে যাত্রা! ১০টি স্পেশাল ট্রেন চালু রেলের, দেখুন রুট সহ টাইমটেবিল
এদিকে এই দিনের ঘটনায় এখনও মুখ খোলেনি স্থানীয় তৃণমূল। তবে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নারায়ণ দাসের দাবি, আলিমউদ্দিন মণ্ডল নাকি তৃণমূল করেন না। তিনি সিপিআইএম সমর্থক। পাল্টা মন্তব্য করেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলছেন, “এটা স্থানীয় নেতৃত্ব দেখবেন। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক এই ঘটনা কতটা সঠিক নাকি এর পিছনে অন্য কোনো কারণ আছে ।” অন্যদিকে আক্রান্ত প্রধান শিক্ষক বলছেন, “এরপর কি করে স্কুলে আসব বুঝতে পারছি না। খুবই ভয়ে আছি।” তবে মূল ঘটনা কী তা জানতে ইতিমধ্যেই মাঠে নেমেছে পুলিশ।