প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিয়ে এইমুহুর্তে বাংলাদেশে চলছে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। সেখানে হিন্দুদের ওপর চলছে নানা অত্যাচার, জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে মন্দির। আর সেই পরিস্থিতির আগুন কিছুটা হলেও লেগেছে ভারত। ফের খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে ওয়াকফ বিল (Waqf bill) সংশোধনের প্রসঙ্গ।
আর এই বিলের সংশোধনের বিরোধিতায় গতকাল শনিবার, রানি রাসমণি রোডে দলের সংখ্যালঘু সেলের সমাবেশ থেকে ওয়াকফ বিল সংশোধনের প্রসঙ্গে বিজেপিকে বিশানা করে কড়া মন্তব্য করেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তাঁদের দাবি ওয়াকফ বিল সংশোধনের নামে নাকি দেশের ধর্ম নিরপেক্ষতার ঐক্য ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা করছে মোদী সরকার।
ওয়াকফ বিল সংশোধন নিয়ে বড় মন্তব্য কল্যাণের
এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে কল্যাণের অভিযোগ, “বাবরি মসজিদ ধ্বংস করার পর রামমন্দির তৈরি করেছেন। একইভাবে ওদের বাকি সম্পত্তি হাতিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে দাঙ্গা বাঁধাতে চাইছেন? কিন্তু জেনে রাখুন, তৃণমূল কংগ্রেস ধর্মের সঙ্গে লড়াই হতে দেবে না। দরকার হলে আরও রক্ত দেব, কিন্তু হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের ধ্বংস হতে দেব না।” এছাড়াও তিনি আরও বলেন, “প্রথমত, আপনি যেখানে নমাজ পড়বেন বা যাঁরাই নমাজ পড়বেন কোনও এক জায়গায়, সেটাই ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হবে।”
কী বলছেন ফিরহাদ?
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “যে কোনও একটা জায়গায় যদি ২০ জন বা ২৫ জন বা ১৫ জন বা পাঁচজন নিয়মিত নমাজ পড়েন, সেটাকে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হবে। আর নমাজ যে মসজিদে পড়তে হয়, সেটার কোনও বাধ্যবধকতা নেই।” পাশাপাশি ফিরহাদ হাকিম এই প্রসঙ্গে বলেন, “ক্ষমতায় টিকে থাকতে ধর্মের বিভাজন তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। কে কী খাবে, কী পরবে তা কি বিজেপি ঠিক করে দেবে? এ জিনিস বরদাস্ত করার প্রশ্নই নেই। ওদের প্ররোচনায় পা দেবেন না।”
কল্যাণের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ গেরুয়া শিবির
আর এবার কল্যাণের সেই বিস্ফোরক মন্তব্যকে ঘিরেই রাজনৈতিক অন্দরে তুমুল বিরোধ বা দ্বন্দ্ব তৈরী হয়েছে। বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কল্যাণ এর সেই ভিডিও পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বলেন, ‘এই মন্তব্য করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি আবার ওয়াকফ নিয়ে গঠিত স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য। তাঁর মতে, মুসলিমরা যেখান নমাজ পড়বেন, তা স্বাভাবিকভাবেই ওয়াকফ সম্পত্তিতে পরিণত হবে। যার অর্থ যে কোনও অজুহাতে রাস্তা, রেললাইন, বিমানবন্দর, পার্ক-সহ অন্যান্য জায়গায় নমাজ পড়া হলে সেটাকে ওয়াকফ জমি হিসেবে দাবি করা যেতে পারে। এই ব্যাখ্যা অনুযায়ী, কলকাতার একটা বড় অংশ মুসলিম সম্প্রদায়ের হাতে চলে যাবে।’
এছাড়াও বিজেপি মহলের আরও দাবি ভারতবর্ষ দখলে মুসলিমদের এই পরিকল্পনায় সম্পূর্ণ সাহায্য করছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বামপন্থী দলগুলো। ওয়াকফ কতটা ভয়ংকর, সেটা ভালোভাবে শাসকদলের জানা নেই বলে নানা মন্তব্য করে ফেলা হচ্ছে।