প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যের একের পর এক দুর্নীতি মামলায় বেশ চাপে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কারণ এই কয়েকটি দূর্নীতিমূলক মামলায় নাম জড়িয়েছে শাসক দলের বেশ কয়েকজন দাপুটে নেতার। যার মধ্যে অন্যতম হলেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। গত বছর ২৭ অক্টোবর রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে সল্টলেকের বাড়ি থেকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick) ওরফে বালুকে গ্রেফতার করেছিল ED। তবে ১ বছর হয়ে গেলেও এখনও সেই মামলার মীমাংসা হলো না। বরং একের পর এক নয়া সত্য উদঘাটিত হতেই চলেছে। আর এই আবহেই প্রশ্ন জাগছে যে জেলবন্দি থেকেও খাদ্য দফতরের অধীন পশ্চিমবঙ্গ অত্যাবশ্যক পণ্য সরবরাহ নিগমের চেয়ারম্যান হিসেবে কেন তিনি রয়েছেন।
জেলবন্দী হয়েও বিশেষ পদে এখনও বালু!
প্রথম দিকে রেশন দুর্নীতি মামলায় যখন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়কে গ্রেফতার করা হয় তখনও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য হিসাবে রেখে দিয়েছিলেন। কিন্তু ‘প্রভাবশালী’ তকমা তখনও সরেনি বরং এই তকমা সরাতে মল্লিক পরিবারকে অনুরোধ করা হয়েছে। এরপর চলতি বছর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও খাদ্য দফতরের এক গুরুত্বপূর্ণ নিগমের পদে এখনও থেকে গিয়েছেন বালু। আর তার পরেই খাদ্য দফতরের অন্দরে শুরু হয় বিতর্ক।
আসলে এই নিগমের চেয়ারম্যান পদে বালুকে বসিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১ সালে নয়া মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই তাঁর মন্ত্রিসভায় খাদ্য দফতরের দায়িত্ব পান জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ২০১২-১৬ পর্যন্ত তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে বালুই ওই নিগমের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলেছিলেন। ২০১৬ সালে যেই আমলাকে নিগমের চেয়ারম্যান করা হয়েছিল সে ২০২১ সালের ভোট এবং ভোটের পরে নভেম্বর মাস পর্যন্ত চেয়ারম্যান হিসেবে ছিল। তবে ২০২১ সালের ভোটের পরে বালুকে খাদ্য দফতর থেকে সরিয়ে বন দফতরের মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয় রথীন ঘোষকে। তখনই বালু রাজ্য অত্যাবশ্যক পণ্য সরবরাহ নিগমের চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত হয়ে আসছেন।
প্রশ্নের মুখে পড়ে বিস্ফোরক দাবি নবান্নের
এই প্রসঙ্গে নবান্নের একটি সূত্র জানাচ্ছে যে, মূলত কৃষকদের থেকে ধান কেনার কাজ করে এই নিগম। যাবতীয় কাজকর্ম মূলত দেখেন নিগমের সরকারি আধিকারিকেরা। তাই চেয়ারম্যানের সে অর্থে কোনও ভূমিকা থাকে না। ফলে নিগমের চেয়ারম্যানের পদে থাকলেও জেলে থেকে হাবড়ার তৃণমূল বিধায়ক বালুর পক্ষে ‘দায়িত্ব পালন’ করা বা ‘কাজ’ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।