প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: পুজো শেষে এবার এবার কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর (Lakshmi Puja 2025) পালা। বর্তমানে বাঙালি সংস্কৃতি অনুযায়ী এখন ঘরে ঘরে চলছে কোলাকুলি, প্রণাম এবং আদর আপ্যায়নের ঠেলা। তবে এত কিছুর মাঝেও সকলেরই মন ভারাক্রান্ত, কারণ মা যে আবার এক বছর পর আসবেন। কিন্তু তাতে কি মায়ের বিদায় বেলার মাঝেই এবার কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর পালা চলে এল বাঙালির ঘরে ঘরে। প্রতি বছর আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে ঘরে ঘরে পূজিতা হন শ্রী এবং সম্পদের দেবী মা লক্ষ্মী৷ এক নজরে জেনে নেওয়া যাক কবে পড়েছে চলতি বছরের শারদ পূর্ণিমা? পুজোর শুভ সময়ই বা কখন।
কবে পড়েছে শারদ পূর্ণিমার তিথি?
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথি পড়ছে ১৯ আশ্বিন, অর্থাৎ ৬ অক্টোবর, সোমবার। ওইদিন দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে লাগছে তিথি। শেষ হচ্ছে পরেরদিন অর্থাৎ ২০ আশ্বিন, ইংরেজিতে ৭ অক্টোবর, মঙ্গলবার, সকাল ৯টা ১৮ মিনিটে। অন্যদিকে গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা অনুযায়ী পূর্ণিমা তিথি আরম্ভ হতে চলেছে ১৯ আশ্বিন, ৬ অক্টোবর, সোমবার। ওইদিন পূর্ণিমা শুরু হতে চলেছে সকাল ১১টা ১২ মিনিট ৪৩ সেকেন্ড থেকে। এবং পূর্ণিমা তিথি শেষ হবে ২০ আশ্বিন অর্থাৎ ৭ অক্টোবর, মঙ্গলবার, সকাল ৯টা ৩১ মিনিট ২৭ সেকেন্ডে। এক্ষেত্রে যাঁরা সকালে পুজো করতে চান, তাঁরা মঙ্গলবার ৭ অক্টোবরও কিছুটা সময় পাবেন সকালে পুজো করার জন্য।
রাঁধতে হয় মিষ্টান্ন
প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো রাতের বেলায় করতে হয়। কারণ এই দিনে চাঁদের আলোয় মর্ত্যলোকে নেমে আসেন সম্পদ ও সমৃদ্ধির দেবী লক্ষ্মী। যাঁরা এ দিন সারা রাত জেগে লক্ষ্মী দেবীর আরাধনা করেন, তাঁদের সংসারে বিরাজ করেন তিনি। মনে করা হয় চাঁদের আলোয় এ দিন নাকি মধু ঝরে, তাইতো কোজাগরী পূর্ণিমায় পায়েস রান্না করে তা সারা রাত চাঁদের আলোয় রেখে দেওয়া হয়। আর সেই পায়েসই পরের দিন সকালে প্রসাদ হিসেবে খাওয়া হয়। এর ফলে নাকি সকলের সব ইচ্ছে পূরণ যেমন পূরণ হয় ঠিক তেমনই সংসার ধন সম্পদে ভরে উঠবে। ভক্তিভরে এদিন ঘরে ঘরে শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনির মাধ্যমে আরাধৃতা হন মা লক্ষ্মী।
আরও পড়ুন: দশমীর সন্ধ্যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ধূপগুড়িতে! ভিড়ের উপর ছুটল স্করপিও, মৃত ৩! আহত একাধিক
প্রসঙ্গত, কোজাগরী শব্দের উৎপত্তি ‘কো-জাগতি’ থেকে, যার অর্থ হল ‘কে জেগে আছো’। এই তিথিতে যাঁরা রাত জেগে দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করেন, দেবীর আগমনের অপেক্ষায় থাকেন তাঁরা দেবীর বিশেষ আশীর্বাদ প্রাপ্ত হন। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী দেবী লক্ষ্মী পার্থিব-অপার্থিব সম্পদ, সৌভাগ্য এবং সৌন্দর্যের দেবী হিসেবে বরাবর পূজিত হয়ে আসছেন বাঙালির ঘরে ঘরে।