সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: 2025 সালে পিতৃপক্ষ (Pitru Paksha 2025) শুরু হচ্ছে 7 সেপ্টেম্বর থেকে আর শেষ হবে 21 সেপ্টেম্বর। আর এই 15 দিনে দেশজুড়ে পালন হবে পূর্ব-পুরুষদের শ্রাদ্ধ, পিন্ডদান এবং তর্পণের মতো অনুষ্ঠান। বিশ্বাস করা হয় যে, বছরের এই বিশেষ সময়ে পূর্বপুরুষরা আকাশলোক থেকে আবারো পৃথিবীতে তাদের সন্তান-সন্তাদিদের কাছে ফিরে আসে। হ্যাঁ, এই সময়টাকেই বলে পিতৃপক্ষ বা মহালয়ার পক্ষ।
পিতৃপক্ষ কখন এবং কেন পালন করা হয়?
জানিয়ে রাখি, পিতৃপক্ষ শুরু হয় ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের পূর্ণিমার পরবর্তী প্রতিপদ তিথি থেকে আর শেষ হয় আশ্বিন মাসের অমাবস্যা তিথিতে। এই সময়কালকে মহালয়া পক্ষ বা পিতৃপক্ষ বলা হয়ে থাকে। পুরাণ বলছে, এই সময়ে পূর্বপুরুষদের আত্মা তাদের বংশধরদের কাছে আবারো ফিরে আসে, আর তাদের তর্পণ ও শ্রাদ্ধ গ্রহণ করে আশীর্বাদ প্রদান করে। ধর্মগ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে, এই সময় যদি শ্রাদ্ধ করা হয়, তাহলে পূর্বপুরুষদের আত্মা শান্তি লাভ করে, আর পরিবারের উপর সুখ শান্তি ফিরে আসে।
2025 সালের পিতৃপক্ষে বিরল যোগ
এদিকে এবারের পিতৃপক্ষের বিশেষত্ব আরও একটি কারণ। এই সময়ের শুরুতেই ঘটবে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ, আর শেষ দিনে ঘটবে সূর্যগ্রহণ। যদিও সূর্যগ্রহণ ভারতে দৃশ্যমান হবে না। তবে 7 সেপ্টেম্বর রাত 9:57 মিনিটে শুরু হবে এবং 1:26 মিনিটে এই চন্দ্রগ্রহণ শেষ হবে, যা ভারতের দৃশ্যমান হবে এবং এর প্রভাবও প্রযোজ্য হবে। এই চন্দ্রগ্রহণ ঘটবে কুম্ভ রাশিতে আর পূর্বভাদ্রপদা নক্ষত্রে। তখন চন্দ্র ও রাহু একই রাশিতে অবস্থান করবে।
অস্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য শ্রাদ্ধ করবেন কবে?
ধরুন, কারোর অস্বাভাবিক মৃত্যুবরণ হয়েছে যেমন সাপের কামড়, বিষপান, খুন, দুর্ঘটনা, কিংবা আত্মহত্যা। তাদের শ্রাদ্ধ কবে করা উচিৎ? মনে রাখবেন যে, এই ধরনের মৃত্যুর শ্রাদ্ধ কখনোই মৃত্যুর দিনে করা উচিত নয়। কারণ এদের শ্রাদ্ধ বা তর্পণ সবসময়ই চতুর্দশী ভিত্তিতে করতে হয়। তাদের মৃত্যু যেদিনই হয়ে থাকুক না কেন, শ্রাদ্ধ পালন করতে হবে পিতৃপক্ষের চতুর্দশীতেই। কারণ ধর্মশাস্ত্রে কথিত রয়েছে, চতুর্দশী হল অকালমৃত্যু বরণকারীদের আত্মার শান্তি কামনার জন্য বিশেষ তিথি।
আরও পড়ুনঃ কৌশিকী অমাবস্যার দিন এই নিয়ম মেনে করুন পূজা! জীবন থেকে দূর হবে সব বাঁধা
এই সময় কেন শ্রাদ্ধ করা জরুরী?
শ্রাদ্ধ কিংবা তর্পণ শুধুমাত্র কোনো রীতি নয়, বরং এটি আমাদের পিতৃঋণ শোধ করার সবথেকে বড় উপায়। ধর্মশাস্ত্র বলছে, মানুষের জীবনে তিনটি প্রধান ঋণ হয়ে থাকে। আর সেগুলি হল দেবঋণ, ঋষিঋণ এবং পিতৃঋণ। এর মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পিতৃঋণ।
এবার যদি পিতৃপক্ষে শ্রাদ্ধ না করা হয়, তাহলে পিতৃ দোষ জন্মায়। এর ফলে বংশে সন্তান জন্মায় না কিংবা টেকে না। সন্তানদের উপরে বিপদ আসে, আর্থিক সমস্যা দিনের পর দিন বাড়ে। মানসিক অশান্তি থাকে, পারিবারিক সমস্যা দেখা যায়। অন্যদিকে যদি শ্রাদ্ধ কিংবা পিন্ডদান করা হয়, তাহলে পূর্বপুরুষদের আত্মা শান্তি লাভ করে। পাশাপাশি পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধি ফিরে আসে এবং অশুভ শক্তির প্রভাব দূর হয়।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |