বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীর মহাকালেশ্বর মন্দিরে ঘটল এক আজব ঘটনা! গত 18 আগস্ট, সোমবার রাত 8টা নাগাদ মন্দিরের পুরোহিতরা বাবা মহাকালের শিবলিঙ্গকে ভাংয়ের সাজে সাজিয়ে তুলেছিলেন। আর ঠিক তখনই ঘটে বিপত্তি! মন্দিরের পুরোহিত থেকে শুরু করে সেবায়েতরা দেখতে পান, হঠাৎ মহাকালের ভাংয়ের মুখোশটি খুলে পড়েছে।
আর এই ঘটনার পরই তড়িঘড়ি ছুটে গিয়ে ফের নতুন করে মুখোশ বানিয়ে মহাকালের আরতি করেন পুরহিতরা। যে ঘটনা ইতিমধ্যেই ভিডিও আকারে ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর এর পরই নামজাদা জ্যোতিষীরা এই ঘটনাটিকে অপ্রাকৃতিক ঘটনার লক্ষণ বলেই দাবি করছেন। অন্যদিকে ধর্মীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহাকাল অনেক আগেই নিজে থেকেই ভাং পরিত্যাগ করেছিলেন।
তাহলে কী বড়সড় বিপর্যয় আসতে চলেছে?
পূজোর সময় মহাকালের শিবলিঙ্গ থেকে ভাংয়ের মুখোশ খুলে পড়ার ঘটনায় উজ্জয়নিনীর জ্যোতিষী অমর ত্রিবেদী জানিয়েছেন, এই ঘটনাটি একটি অপ্রাকৃতিক ঘটনার লক্ষণ। এই ঘটনার নেপথ্যে দুটি ভিন্ন কারণ থাকতে পারে। ওই জ্যোতিষীর বক্তব্য, দেবতারা সাধারণত তাদের পছন্দের উপাদান গ্রহণ করেন। তবে ওই উপাদান তৈরিতে যদি কোনও ভুল ত্রুটি থেকে থাকে কিংবা যথাযথ মানসিকতা নিয়ে ওই উপাদানটি তৈরি করা না হয় সেক্ষেত্রে বিশ্বাস রয়েছে, দেবতারগণ ওই উপাদান পরিত্যাগ করেন।
ওই জ্যোতিষী বলছেন, যদি বিজ্ঞানে বিশ্বাস করা হয় সেক্ষেত্রে পাথরের নিজস্ব আদ্রতা রয়েছে। বিজ্ঞান বলে, পাথরের অভ্যন্তরীণ আদ্রতা এবং অভ্যন্তরীণ তাপ যখন বাইরের আদ্রতা এবং বাইরের তাপের সাথে মিলিত হয়, তখন সাধারণত উপরের আস্তরণটি ভেঙে পড়তে পারে। তাহলে কি এমন কারণেই মহাকালের শিবলিঙ্গ থেকে ভাংয়ের মুখোশটি ভেঙে পড়েছিল? যদিও এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ মহাকালেশ্বর মন্দিরের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরোহিত থেকে শুরু করে মন্দির কমিটির সদস্যরা।
শিবলিঙ্গকে গাঁজা দিয়ে সাজানোর বিষয়ে শাস্ত্র কী বলছে?
মহাকালেশ্বর মন্দিরের ওই ঘটনা প্রসঙ্গে মহর্ষি পাণিনি বেদ বিদ্যা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন উপাচার্য এবং সনাতন ধর্মের বিশেষজ্ঞ প্রাক্তন বিভাগীয় কমিশনার ড: মোহন গুপ্ত জানিয়েছেন, হিন্দু ধর্মের কোনও গ্রন্থে শিবলিঙ্গে ভাং বা গাঁজা ব্যবহারের উল্লেখ নেই। শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করা হয়েছে। মহাকালের শিবলিঙ্গ সাজানোর ক্ষেত্রে ভাং ব্যবহার করা উচিত নয়।
এরপরই ওই ধর্মীয় বিশেষজ্ঞ বলেন, পুরোহিত এবং পন্ডিতরা শাস্ত্রের বিধান মানছেন না। নিজেদের মতো করেই মহাকালকে সাজাচ্ছেন তাঁরা। তাই হয়তো মহাকাল নিজেই ওই ভাংয়ের মুখোশ পরিত্যাগ করেছেন! সবশেষে মোহন গুপ্তা বলেন, ভাং বা গাঁজা দিয়ে মহাকালকে সাজানো ঠিক নয়। এটি দ্রুত বন্ধ করা উচিত।
অবশ্যই পড়ুন: রোহিত জামানা শেষ! ভারতের ওয়ানডে অধিনায়ক হচ্ছেন শ্রেয়স আইয়ার? মুখ খুলল BCCI
উল্লেখ্য, 2020 সালে শিবলিঙ্গের ক্ষয় সংক্রান্ত একটি আবেদনের ভিত্তিতে শুনানির পর সুপ্রিম কোর্ট মহাকালেশ্বর মন্দির কমিটিকে স্পষ্ট নির্দেশ দেয়, নির্ধারিত পরিমাণে পঞ্চমৃত উৎসর্গ করতে হবে এবং গাঁজা সহ অন্যান্য উপকরণের ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। তবে অনেকেরই অভিযোগ, শীর্ষ আদালতের সেই নির্দেশ বর্তমানে পালন করা হচ্ছে না। ওই মন্দিরের পন্ডিত থেকে শুরু করে পুরোহিতরা মহাকালের শিবলিঙ্গে অর্পণের জন্য তৈরি মুখোশে অতিরিক্ত পরিমাণে গাঁজা মিশিয়েছিলেন, ফলে তা বেশি ওজনের কারণে ভেঙে পড়ে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |