সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: পূর্ণিমাতেই পালিত হয় কার্তিক পুজো (Kartik Puja 2025)। কার্তিক মাসের পূর্ণিমা মানেই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে বিশেষ পবিত্র দিন। ধর্মীয় সংস্কৃতি ও সামাজিক আবহ থেকে এই দিনটির গুরুত্ব অপরিসীম। তাই এবছরও এই দিনটি উৎসাহ আর ভক্তির সঙ্গেই পালিত হবে। তবে এবছর কবে পড়ছে কার্তিক পুজো? পুজোর নিয়ম কী রয়েছে? চলুন বিস্তারিত জেনে নেব আজকের প্রতিবেদনে।
কার্তিক পূর্ণিমার মাহাত্ম্য কী?
ধর্মীয় মতে, এই দিন শ্রী বিষ্ণু তার প্রথম অবতার মৎস্য রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন। আর সেই অবতারের মূল বার্তা ছিল সৃষ্টি আর সংরক্ষণের চক্র। দিনটিকে আত্মশুদ্ধি আর আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্যই পালন করা হয়। অন্যদিকে ত্রিপুরারী পূর্ণিমা নামেও এই দিনটি পরিচিত। আর শৈব ধর্মাবলম্বীদের মতে এই দিনটিতে ভগবান শিব অসুর ত্রিপুরাসুরকে বধ করে অন্ধকার এবং অশুভ শক্তির জয়ের বার্তা দিয়েছিল।
কার্তিক পূর্ণিমার অন্যতম রীতি হল পবিত্র নদীতে স্নান। গঙ্গা, যমুনা বা অন্য কোনো তীর্থস্থানে স্নান করে এদিন মানুষ আত্মশুদ্ধি হন। বিশ্বাস করা হয় যে, এই স্নান পাপ মোচন করে এবং সমস্ত শুভ শক্তির আগমন ঘটায়। স্নানের পর ভক্তরা উপবাস, জপ এবং পূজা করেন। অনেকে তো মন্দিরে গিয়ে প্রদীপ জ্বালান, আবার কেউ কেউ নদীর ধারে দ্বীপ ভাসিয়ে দেন।
এবছর কবে পড়ছে কার্তিক পুজো?
পঞ্জিকা ঘেঁটে জানা গেল, এবছর কার্তিক পূর্ণিমা অর্থাৎ কার্তিক পূজা অনুষ্ঠিত হবে আগামী 5 নভেম্বর। পূর্ণিমা তিথি শুরু হচ্ছে 4 নভেম্বর রাত 10:36 মিনিটে, আর পূর্ণিমা তিথি শেষ হবে আগামী 5 নভেম্বর সন্ধ্যা 6:48 মিনিটে।
দান করলে বয়ে আসে আশীর্বাদ
কার্তিক পূজার দিন দান করা সবথেকে আধ্যাত্মিক বলেই মানা হয়। হ্যাঁ, আপনি যদি ক্ষুধার্তকে কোনো খাবার দান করেন বা কোনো পুরনো জামাকাপড় গরিব মানুষকে দান করেন, পাশাপাশি কোনো শিক্ষার্থীকে সাহায্য করেন, তাহলে এদিন ঈশ্বরের কৃপা আপনার উপর বর্ষিত হবে। পুরান মতে, দানের মধ্যে লুকিয়ে থাকে আসল শক্তি। কতটা দিচ্ছেন বা কেন দিচ্ছেন, তার মধ্যে নয়। তাই এক টাকাও যদি মন থেকে দান করা হয়, তাহলে সেটাই ঈশ্বরের কাছে সমতুল্য।
আরও পড়ুনঃ ২০২৫ সালে ঝুলন যাত্রা কবে পড়ছে? জেনে নিন সঠিক সময়সূচি
তবে কার্তিক পূর্ণিমার দিন অনাথ শিশুদের জন্য খাবারের ব্যবস্থাও করতে পারেন। পাশাপাশি কোনো বৃদ্ধ বা বৃদ্ধাকে সহায়তাও করতে পারেন। আর বিশ্বাস করা হয় যে, যারা সন্তান লাভ করতে পারে না, তাদের কার্তিক পূজা করলে খুব শীঘ্রই ঘরে সন্তানের আগমন হয়। আর ঠিক এ কারণেই এই পূর্ণিমা শুধুমাত্র ধর্মীয় আচারের দিক থেকে নয়, বরং মানবতা আর আত্মশুদ্ধিরও উৎসব।