সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: শ্রাবণ আর ভাদ্র মাস যেন সাপের দেবীকে সন্তুষ্টি করার আবহ। হ্যাঁ, বাংলার আনাচে কানাচে শুরু হয় মা মনসার আরাধনা। ভক্তির এই অধ্যায় শুধুমাত্র ধর্মের জন্য নয়, বরং বাংলার মাটির সঙ্গে জড়িয়ে থাকে সংস্কৃতি আর ঐতিহ্য। মা মনসা (Manasa Puja 2025) শুধুমাত্র সাপের দেবী নন, বরং তিনি সন্তান প্রাপ্তির আশীর্বাদ এবং বিপদ থেকে রক্ষা করার প্রতীক। তবে এবছর কবে পড়ছে মা মনসা দেবীর পূজা? চলুন বিস্তারিত জেনে নিইআজকের প্রতিবেদনে।
কে এই মা মনসা?
মা মনসাকে মূলত হিন্দু ধর্মে সাপের দেবী হিসেবেই পূজা করা হয়। পাশাপাশি সন্তান কামনার দেবী, আবার কোথাও তিনি রোগ মুক্তির প্রতীক হিসেবে পূজিত হন। তিনি কাশ্যপ মুনি, কদ্রুর কন্যা ও সর্পরাজের বোন। অনেকে বিশ্বাস করেন যে, তিনি প্রাক্-আর্য কালের দেবী। আর বর্ষাকালে সাপের উপদ্রব বেশি হওয়ায়, ঘরে ঘরে তার পূজার আয়োজন করা হয়।
বাংলার লোক কাহিনীতে অন্যতম জনপ্রিয় গল্প চাঁদ সওদাগার। পুরাণে কথিত রয়েছে, শিবের কাছে মনসা দেবীর প্রার্থনা করেছিলেন, যেন তাঁকে পূজা করা হয়। শিব জানিয়েছিলেন, যদি চাঁদ সওদাগর তাঁকে পূজা করেন, তবে তাঁর ইচ্ছা পূরণ হবে। তবে চাঁদ সওদাগর তা অস্বীকার করেছিলেন। ফলত তাঁর সব ছেলেকেই সাপে কাটে এবং ব্যবসা ডুবে যায়।
তারপর তার স্ত্রী স্বর্গে গিয়ে দুর্ভাগ্যের আসল কারণ জানতে পারেন এবং ফিরে এসে শ্বশুর মশাইকে মনসা পূজা করাতে রাজি করেন। এরপর মনসা পূজা শুরু করেন চাঁদ সওদাগর আর পুরনো ঐশ্বর্য ফিরে পান। এখান থেকেই শুরু হয় মা মনসার আরাধনা।
এ বছর কবে পড়ছে মনসা পূজা?
পঞ্জিকা অনুযায়ী, চলতি বছর অর্থাৎ, 2025 সালে মা মনসার পূজা মূলত দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিনে পালিত হবে। প্রথমত, আগামী 29 জুলাই, 2025। অর্থাৎ, নাগ পঞ্চমীর দিন, বাংলা 12 শ্রাবণ, 1432 বঙ্গাব্দ। আর দ্বিতীয় দিনটি হল আগামী 13 আগস্ট, 2025। অর্থাৎ, 27 শ্রাবণ, 1432 বঙ্গাব্দ। আর এই দুই দিনেই বিভিন্ন জায়গায় পালিত হবে মনসা পূজা, নাগপঞ্চমী এবং অষ্টনাগ পূজা উপলক্ষে।
তবে কিছু কিছু অঞ্চলে শ্রাবণ এবং আষাঢ় মাসের প্রতিটি পক্ষের পঞ্চমী তিথিতে মা মনসার পূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। অথবা একটানা একমাস ধরেই এই পূজা চলে। আবার কোথাও কোথাও চলতে থাকে নানা রকম উপাচারে দেবীর তুষ্টিকরণ।
আরও পড়ুনঃ ২০২৫ সালে কবে পড়ছে কৌশিকী অমাবস্যা? দেখুন দিনক্ষণ, তিথি-নক্ষত্র ও মাহাত্ম্য
কীভাবে আরাধনা করা হয়?
এই বিশেষ দিনগুলিতে নদীর মাটি দিয়ে বিশেষ কায়দায় দেবীর মূর্তি করা হয়। এরপর মনসা দেবীকে সবাই মিলে বসে আরাধনা করেন এবং দুধ-কলা দেন। শুধু তাই নয়, কোথাও কোথাও জীবন্ত সাপের পূজা করা হয়। অনেকে আবার শরীরে সূচ ফুঁড়ে বা শরীরকে কষ্ট দিয়েও ব্রত পালন করেন। পাশাপাশি যাদের সন্তান নেই, তারা এই পূজায় অংশ নিয়ে আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |