বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: চলতি ISL মরসুমের শেষ ডার্বিতে মশালবাহিনীর আগুন নিভিয়ে দিয়েছিল মোহনবাগান (East Bengal Vs Mohun Bagan)। ম্যাচের শুরুতে ইস্টবেঙ্গলের জ্বলে ওঠা শিখা প্রথমার্ধ শেষের আগেই নিস্তেজ করেছিল মোলিনার ছেলেরা। কাজেই খেলা বাকি 45 মিনিটে গড়াতেই বাগানের জোরালো আক্রমণ নিশ্চিত করেছিল ম্যাচের ভবিষ্যৎ। শেষ পর্যন্ত 1-0 ব্যবধানে হেরে মাঠ ছাড়ে, লাল হলুদ। তবে এদিন ইস্টবেঙ্গলের পরাজয়ের থেকেও সবচেয়ে বেশি যে ঘটনাটি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে তা হল আপুইয়ার হ্যান্ডবল।
ম্যাচ শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ইস্টবেঙ্গলের কোচ অস্কারও হ্যান্ডবল বিতর্কের কারণে পেনাল্টি না পাওয়ায় রেফারিকে দুষেছিলেন। প্রশ্ন উঠেছিল রেফারিং নিয়েও। এবার সেই সব প্রশ্ন উড়িয়ে দিল AIFF। সম্প্রতি ডার্বি ম্যাচের হ্যান্ডবল বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলেছেন AIFF-এর রেফারিং অফিসার ট্রেভর কেটল। রেফারি প্রধান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, আপুইয়ার হাতের লাগা বল কোনও হ্যান্ডবল ছিল না।
শনিবারের ডার্বিতে ঠিক কী ঘটেছিল?
মোহন-ইস্ট ডার্বির প্রথমার্ধের সঙ্গে তখন অতিরিক্ত 2 মিনিটের খেলা যুক্ত হয়েছে। ঠিক সেই সময়ে গোলের উদ্দেশ্যে জোরালো শট করেন ইস্টবেঙ্গলের পিভি বিষ্ণু। তবে বল গিয়ে লাগে আপুইয়ার হাতে। যা একেবারে স্পষ্ট ছিল। তবে তা সত্ত্বেও কোনও পেনাল্টি দেননি রেফারি ভেঙ্কটেশ। ফলত স্বাভাবিকভাবেই সম্ভাব্য পেনাল্টি মিস করে 1 গোলে পিছিয়ে থাকে লাল হলুদ। তবে পেনাল্টি পেলে হয়তো বদলে যেতে পারতো ম্যাচের ভবিষ্যৎ। এই ঘটনার পর সৌভিক চক্রবর্তীকে দ্বিতীয়বারের জন্য হলুদ কার্ড দেখিয়ে ফের বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন রেফারি।
অবশ্যই পড়ুন: ইডেনে ভারত বনাম ইংল্যান্ডের টিকিট কোথায় কবে থেকে পাবেন, দামই বা কত? জানাল CAB
বিতর্কে ইতি টানল AIFF
প্রাপ্য পেনাল্টি মিস হওয়ায় হ্যান্ডবল প্রসঙ্গে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন লাল হলুদ কোচ অস্কার। প্রশ্ন উঠেছিল রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়েও। সম্ভাব্য পেনাল্টি না পাওয়ায় হ্যান্ডবল নিয়ে তীব্র বিতর্ক দানা বেঁধেছিল লাল হলুদ সমর্থকদের মধ্যে। তবে অবশেষে সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিতর্কে ইতি টেনেছে AIFF। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে AIFF রেফারিং অফিসার ট্রেভর কেটল জানান, ডার্বিতে ওটা হ্যান্ডবল ছিল না। ম্যাচের পর আমরা ওই ঘটনার ফুটেজ খতিয়ে দেখেছি। পুরো ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখার পর সকলের সিদ্ধান্ত ছিল একটাই, এটা হ্যান্ডবল হতে পারে না।
AIFF-এর রেফারি প্রধান আরও বলেন, সবার প্রথমে দেখা দরকার ফুটবলারের হাত ঠিক কোন অবস্থায় ছিল। তাঁর হাত যদি জাস্টিফায়েড বা ন্যায্য পজিশনে থাকে তাহলে সেটা হ্যান্ডবল নয়। গোটা ফুটেজে দেখা গিয়েছে মোহনবাগানের ওই ফুটবলার তাঁর হাত ঠিকভাবেই রেখেছিলেন। সেখানে ইচ্ছাকৃতভাবে কোনও নড়াচড়া করেননি তিনি। কাজেই মুভমেন্ট না হওয়ায় ওটা হ্যান্ডবল নয়। আসলে হ্যান্ডবল নিয়ে অনেকের মধ্যেই একটা ভুল ধারণা রয়েছে।
লাল হলুদ কোচকে কড়া জবাব দিয়েছেন মোলিনা!
মোহনবাগানের কাছে ডার্বি হারের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ক্ষোভ জাহির করেছিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুঁজো। শনিবার পরাজয়ের যন্ত্রণা বুকের বাঁ দিকে চেপে রেখে অস্কার বলেছিলেন, প্রত্যেক ম্যাচে একই ঘটনা ঘটছে। রেফারির ভুলে আমরা ভুগছি। হয় আমরা লাল কার্ড দেখে দশ জন নিয়ে খেলেছি। নয়তো, প্রাপ্য পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত হয়েছি। এদিন শৌভিক চক্রবর্তীর প্রথম হলুদ কার্ড মেনে নিলেও দ্বিতীয়টিতে একেবারেই সায় দেননি অস্কার। বলেন, দ্বিতীয় হলুদ কার্ডটি কোনও হলুদ কার্ডই ছিল না। ভুল রেফারিংয়ের কারণে আমাদের হারতে হল। এমনটা কাম্য নয়। ব্রুঁজোর বক্তব্যের পরই পাল্টা আক্রমন শানিয়েছেন বাগান কোচ মোলিনা। অস্কারকে উদ্দেশ্য করে তাঁর বক্তব্য, হেরে যাওয়ার পর সবাই একই অজুহাত দেয়। এই ঘটনা একদমই নতুন নয়।