বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম, দুই দশকে সবথেকে বড় সিদ্ধান্ত নিল BCB

Published on:

bangladesh team

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: চ্যাম্পিয়নস ট্রফিকে পাখির চোখ করে একে একে স্কোয়াড ঘোষণা করছে বিভিন্ন দল। পদ্মা পাড়ের বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে দল ঘোষণার আগে যে চরম জল্পনা কল্পনা হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যখন সেই স্বাভাবিকতা নাটকীয় মোড় নেয় তখনই তৈরি হয় অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। এবারেও তেমনটাই ঘটেছে। দীর্ঘ গুঞ্জন ও জল্পনাকে মদত দিয়ে শরিফুল ইসলাম ও লিটন দাসকে দলে রাখেনি বিসিবি (Bangladesh Cricket Board)।

WhatsApp Community Join Now

সেই সাথে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে বিরল ঘটনা ঘটিয়েছে BCB। যার জেরে খুলে যাওয়া নতুন দিগন্তে মুখ বাড়িয়েছে পদ্মা পাড়ের দল। বলা বাহুল্য, সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবালকে বাদ দিয়েই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। আর এই ঘটনাই ওপার বাংলার ক্রিকেটকে নতুন বাস্তবতার সামনে এনে দাঁড় করিয়েছে। সাকিব-তামিমকে ছাড়াই নতুন দিন দেখছে বাংলাদেশের ছেলেরাও।

কেন বাংলাদেশ দলে ঠাঁই হল না তামিম ও সাকিবের?

তামিম যে খেলবেন না, এ কথা আগেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন। অন্যদিকে আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আসরে কোমর বেঁধে নামার আগে জাতীয় দলে জায়গা হয়নি সাকিবেরও। মনে করা হচ্ছে, বোলিং নিয়ে নিষেধাজ্ঞার কারণেই ব্যাটার হিসেবেও সাকিব আল হাসানকে গুরুত্ব দেয়নি বিসিবি। আসন্ন আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি টুর্নামেন্টে সাকিবের জায়গা যে হবে না, একথা শনিবার রাতেই স্পষ্ট করে দিয়েছিল ওপার বাংলার ক্রিকেট বোর্ড।

গতকাল রাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের তরফে সাকিবের বোলিং নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয়। আর ঠিক তখনই নিশ্চিত হয়ে যায় জাতীয় দলে তাঁর না থাকাটা। কিন্তু কেন বাদ পড়লেন তিনি? বিসিবির সূত্র বলছে, শেষ কয়েক বছরে সাকিবের ব্যাটিং পারফরমেন্স আসন্ন আইসিসি ইভেন্টের জন্য একেবারেই মানানসই নয়। আর সেই কারণেই গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিটি বাংলাদেশি অলরাউন্ডারকে নিয়ে খুব একটা চিন্তা করেনি।

তামিম-সাকিবকে ছাড়াই প্রথম চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে নামছে বাংলাদেশ?

আসন্ন আইসিসি ইভেন্টে জায়গা হচ্ছে না দুই বাংলাদেশি ক্রিকেট তারকা তামিম এবং সাকিবের। ফলত, স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে শেষ বারের মতো কবে এই দুই ধুরন্ধর টাইগারকে বাদ দিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দল ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ? উত্তরটা ভারতীয় ক্রিকেট অনুরাগীরা তো দূর অস্ত, বাংলাদেশের সমর্থকরাও শত ভেবে খুঁজে পাবেন না। আসলে, এই দুই তারকাকে ছাড়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য দল ঘোষণা বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম।

যদিও জাতীয় দলে তাঁদের অভিষেক হওয়ার আগে 2004 সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলতে নেমেছিল রাজিন সালেহর বাংলাদেশ। এই টুর্নামেন্টের পর থেকে বাংলাদেশ যখনই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিসহ আইসিসির কোনও টুর্নামেন্ট খেলেছে তাতে বাংলাদেশ দলে দেখা মিলেছে তামিম এবং সাকিবের।

21 বছর পর তামিম ও সাকিবকে ছাড়াই আইসিসি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতে চলেছে বাংলাদেশ

2006 সালে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে প্রথম চ্যাম্পিয়নস ট্রফি টুর্নামেন্টে পা রাখেন সাকিব আল হাসান। সেবার দলের হয়ে শত্রুপক্ষের ভীত নড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। চামিন্ডা ভাস, মুথিয়া মুরলিধরনদের বিপক্ষে সেবার 69 রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন সাকিব। যার জেরে 300 ঊর্ধ্ব রান তাড়া করে জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল ওপার বাংলার দল। অন্যদিকে তামিম ইকবালের আইসিসি ইভেন্টে অভিষেক হয়েছিল 2007-এ ।

সেবার তিনিও জাহির খানের মতো বোলারকে ছক্কা দেখিয়ে ফিফটি হাঁকিয়েছেন। তবে 2019 সালে পা রাখাতেই দীর্ঘ যাত্রা শেষ করেন তামিম। চলতি বছর আইসিসি ইভেন্টের জন্য দলে ডাক না পাওয়ায় যাত্রা শেষ হলো সাকিবেরও। যার দৌলতে দীর্ঘ 21 বছর পর ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের কোনও ইভেন্টে এই দুই তারকাকে ছাড়াই মাঠে নামবে বাংলাদেশ।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য বাংলাদেশের দল

নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তানজিদ তামিম, সৌম্য সরকার, পারভেজ হোসেন ইমন, মুশফিকুর রহিম, তাওহীদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, জাকের আলী, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, তানজিম সাকিব, নাহিদ রানা, তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান।

সঙ্গে থাকুন ➥
X