বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ISL-এ আর আশা নেই! তবে আসন্ন সুপার কাপ ও এফসি কাপ টুর্নামেন্টকে মাথায় রেখে নতুন বিদেশি সই করাতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC)। সূত্রের খবর, দলের ট্রান্সফার উইন্ডো শেষ হয়ে গেলেও ফ্রি বিদেশি ফুটবলারে হাত বসাতে মরিয়া লাল হলুদ। জানা যাচ্ছে, ক্যামেরুন জাতীয় দলের হয়ে খেলা বিদেশিকে খুব শীঘ্রই স্কোয়াডে টানবে কলকাতা ময়দানের এই প্রধান দল।
লাল হলুদে নতুন মিডফিল্ডার!
বেশ কিছু রিপোর্ট মারফত খবর, চলতি ISL মরসুমে চোট জর্জরিত দল নিয়ে একপ্রকার ক্লান্ত মশাল বাহিনীর কোচ অস্কার ব্রুজো। এহেন আবহে লিগ টেবিলের তলানি থেকে এক ধাপ উঠেও শিল্ড জয়ের আশা নেই লাল হলুদের। পরিস্থিতি যখন এমন ঠিক সেই সময়ে প্রায় হারাতে বসা লিগ ভুলে আগত টুর্নামেন্টের জন্য ঘুঁটি সাজাচ্ছেন লাল হলুদ কোচ। মনে করা হচ্ছে এবার সেই সূত্র ধরেই ক্যামেরুন জাতীয় দলের হয়ে খেলা উইলফ্রিড কাপতউমকে সই করাবে ইস্টবেঙ্গল।
কার বদলি হয়ে খেলবেন কাপতউম?
চলতি ISL মরসুমের শুরুর দিকে ছন্দ কাটলেও অস্কারের হাত ধরে মুখ থুবড়ে পড়া ইস্টবেঙ্গল দল ঘুরে দাঁড়িয়েছে। স্প্যানিশ কোচের তত্ত্বাবধানেই জয়ের মুখ দেখেছে কলকাতা ময়দানের প্রধান দল। তবে লাল হলুদের ঘুরে দাঁড়ানোর পথে প্রধান কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে দলের ছেলেদের চোট-আঘাত। মাদিহ তালাল থেকে শুরু করে আনোয়ার আলিরা চোটের কারণে বাইরে তাই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তাদের সঙ্গ পায়নি ইস্টবেঙ্গল।
তবে তা সত্ত্বেও ভাঙা দল নিয়েই দাপট দেখানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছে দলের বাকিরা। কেরালার বিরুদ্ধে শেষ জয়টাও এই প্রচেষ্টারই লক্ষণ। তবে বর্তমানে লাল হলুদের যা অবস্থা তাতে আসন্ন ম্যাচ গুলিতে ধারাবাহিক জয় একপ্রকার অনিশ্চিত। তাছাড়াও শুধু ম্যাচ জিতেই সুপার সিক্সে ওঠা হবে না মশাল ব্রিগেডের।
অগত্যা ইন্ডিয়ান সুপার লিগের আশা ছেড়ে দিয়ে আসন্ন এএফসি ও সুপার কাপকে সামনে রেখে বিদেশি সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারকে সই করাতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল। লাল হলুদ যেহেতু তালালের বিকল্প খুঁজছিল তাই মনে করা হচ্ছে উইলফ্রিডকেই সেই আসনে বসানো হতে পারে। কাজেই মাদিহ তালালের জায়গায় মাঠে নামতে পারেন এই নতুন বিদেশি।
মেসি সতীর্থ উইলফ্রিডের ফুটবল জীবন
ক্যামেরুন জাতীয় দলের হয়ে সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার হিসেবে খেললেও প্রয়োজনে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবেও নিজের দক্ষতা প্রমাণ করতে সিদ্ধহস্ত উইলফ্রিড। সূত্র বলছে, ক্যামেরুনের অনূর্ধ্ব-20 দলের হয়ে খেলেছেন কাপতউম। তবে সুযোগ পেলেও জাতীয় সিনিয়র দলে ম্যাচ খেলা হয়নি তাঁর। খেলোয়াড়ের বিগত ম্যাচ পরিসংখ্যান বলছে, অনূর্ধ্ব-20 দলের হয়ে মোট 8টি ম্যাচ খেলেছেন উইলফ্রিড। এর মধ্যে মাত্র 2 ম্যাচে 2টি গোল এসেছে তাঁর পায়ে।
একাধিক রিপোর্ট মারফত খবর, জাতীয় দলের হয়ে খেলার পাশাপাশি ক্লাব ফুটবলেও অংশ নিয়েছিলেন উইলফ্রিড। জানা যায়, স্পেনের বেশ কিছু নামি ক্লাব, রিয়েল বেতিস ও বার্সেলোনা বি দলের হয়েও মাঠে দখল জমিয়েছেন ক্যামেরুনের এই ফুটবলার। জানলে অবাক হবেন, ক্যামেরুন জাতীয় দলের হয়ে খেলা এই মিডফিল্ডার আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার লিওনেল মেসির সাথেও বার্সেলোনায় আসর জমিয়েছিলেন। জানা যায়, কপতউমের ফুটবল কেরিয়ারের শুভারম্ভ হয়েছিল বার্সেলোনা অনূর্ধ্ব-18 দলের হাত ধরে। খেলোয়াড় তাঁর জীবনের বেশিরভাগ সময়টাই কাটিয়েছেন স্পেনে।
অবশ্যই পড়ুন: দুঃসময়ে খুশির হওয়া ইস্টবেঙ্গলে! দীর্ঘ চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরলেন মশালবাহিনীর দুই সেনা
স্পেনের ক্লাব দলগুলিতে নিজের ফুটবল দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন ক্যামেরুনের এই মিডফিল্ডার। এবার পাড়ি দেবেন কলকাতায়! এহেন আবহে স্বাভাবিকভাবেই ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের মনে একাধিক প্রশ্নের উদয় হয়েছে। অনেকেই বলছেন, নতুন বিদেশির কোনও চোট নেই তো? এ প্রশ্নের উত্তর সরাসরি না পেলেও প্রসঙ্গটা নিয়ে ইস্টবেঙ্গলকে ভাবতে হবেই। সেক্ষেত্রে উইলফ্রিডের কোনও চোট আছে কিনা তা খতিয়ে দেখে ক্যামেরুন তারকাকে সই করাতে হবে। বলেই মনে করছেন সমর্থকদের একটা বড় অংশ।