এখন বিশ্ব ক্রিকেটে রাজ করছে ভারত। সেই সঙ্গে এখন ভারতীয় ক্রিকেটাররা প্রায় সব দেশেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন। আমরা যদি রোহিত শর্মা কিংবা বিরাট কোহলির কথাই ধরি, তাহলে তাঁদের জনপ্রিয়তা এখন যেকোনও আন্তর্জাতিক স্তরের সেলিব্রিটির থেকে বেশি। তবে এমন একটা সময় ছিল, যখন অনেক কারণে ধুঁকেছিল টিম ইন্ডিয়া। সেই সময়ে দলের পারফরম্যান্স থেকে বোর্ডের দুর্বলতা- সবই দৃষ্টনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আর সেই সময়ে কিছু ক্রিকেটার ঠিকমতো খেলার সুযোগই পাননি। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই আজ হারিয়ে গেছেন অজানার অন্ধকারে।
৯০-এর দশকের শেষের দিকে ভারত যেসব সুপারস্টার ক্রিকেটারকে খুঁজে পেয়েছিল, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন বীরেন্দ্র সেহওয়াগ, যুবরাজ সিং, হরভজন সিং প্রমুখরা। কিন্তু যাঁরা সেই সময় জাতীয় দলে ঠিকমতো খেলার সুযোগ পাননি তাঁদের মধ্যে কয়েকজন হলেন টিনু জোহানন, অজয় রাতরা, এসএস দাস, দীপ দাশগুপ্ত প্রমুখ। তাঁদের মধ্যে সকলেই বরাবর দল থেকে উপেক্ষিত থেকে গেছেন। এমনই আরেকটি নাম হল জ্ঞানেন্দ্র পাণ্ডে। ভারতের এই স্পিন অলরাউন্ডার দেশের জার্সিতে মাত্র ২ টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। তারপর থেকে তিনি যেন হারিয়ে গেছেন বাইশ গজের স্পটলাইট থেকে।
কে এই জ্ঞানেন্দ্র পাণ্ডে?
জ্ঞানেন্দ্র পাণ্ডে ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে এমন এক নাম, যিনি খুব অল্প সময়ের জন্য জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। উত্তরপ্রদেশের এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান এবং অফস্পিন বোলার ১৯৯৯ সালে ভারতীয় দলের হয়ে মাত্র দুইটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পান। তার আগে ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে তিনি উত্তরপ্রদেশের হয়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক করেন এবং দ্রুতই দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে ওঠেন।
দেশের জার্সিতে খেলেছেন মাত্র ২ টি ম্যাচ
এরপর জ্ঞানেন্দ্র পাণ্ডের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় ১৯৯৯ সালের মার্চ মাসে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়পুরে প্রথম ওডিআই ম্যাচটি খেলেন তিনি। এই ম্যাচে ব্যাট হাতে শুন্য রান এবং বোলিংয়ে কোনও উইকেট পাননি তিনি। ওই একই সিরিজে আরেকটি ম্যাচে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। তবে সেই ম্যাচেও তিনি উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেননি জ্ঞানেন্দ্র। শেষদিকে ব্যাট নেমে মাত্র ৩ রান করেন এই অলরাউন্ডার। ফলে জাতীয় দলে তার যাত্রা সেখানেই শেষ হয়ে যায়।
ক্রিকেট ছেড়ে এখন সাধারণ এক ব্যাঙ্ক কর্মী জ্ঞানেন্দ্র
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ে আর সুযোগ পাননি জ্ঞানেন্দ্র। তাঁকে নিয়ে কেউ আলোচনাও করেনি সেই সময়ে। এদিকে পেটের দায়ে দরকার ছিল একটা চাকরির। শেষমেষ স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার এক সাধারণ কর্মী হিসেবে চাকরি করতে শুরু করেন জ্ঞানেন্দ্র। এখন তাঁর পেশা বলতে এই ব্যাঙ্কের চাকরি। কিন্তু আজও তাঁর চোখেমুখে ধরা পড়ে দেশের হয়ে বেশিদিন ক্রিকেট না খেলতে পাওয়ার আক্ষেপ।