বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: জানুয়ারির শেষ দিনে শত চেষ্টা করেও গোলশূন্য হয়েছে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC) বনাম মুম্বই সিটি এফসির ম্যাচ। তবে শুক্রবারের ম্যাচ ড্র হলেও 18 ম্যাচে 18 পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার দশম স্থানে উঠে এসেছে লাল হলুদ। গতকাল দুই দলই নির্বিষ ফুটবল খেলে 1 পয়েন্ট ঘরে তুলেছে। বলা বাহুল্য, ম্যাচে বিপদ বাড়েনি ঠিকই, তবে মশাল বাহিনীকে নিয়ে প্রশ্ন কিন্তু রয়েই গিয়েছে। ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্ট গ্রাফ ওপরে উঠলেও আগামী ম্যাচগুলিতে জয় ছিনিয়ে সুপার সিক্সে জায়গা করাটা অস্কার ব্রুজোদের পক্ষে একপ্রকার অসম্ভব বলা যায়। সেই অসাধ্য সাধন করতে কোন পথে হাঁটবে লাল হলুদ? উত্তর খুঁজছেন ভক্তরা।
দিয়ামান্তাকোসের ব্যর্থতায় হতাশা বেড়েছে ইস্টবেঙ্গলের
শুক্রবারের ম্যাচে দুই দলের ছেলেদের আক্রমণ প্রতিআক্রমণের মূল লক্ষ্য ছিল জালে বল জড়ানো। তবে প্রথম দিকে সেই সুযোগ ধরা দিয়েছিল লাল হলুদের জলে। খেলা যখন 44 মিনিটে দৌড়াচ্ছে, মুম্বইয়ের 2 ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে একটি সুন্দর পাস বাড়িয়ে দিয়েছিলেন পিভি বিষ্ণু।গোছানো পাস পায়ে নিয়ে গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারতেন দিমিত্রিয়োস দিয়ামান্তাকোস। মাত্র 2 গজ দূরত্বে ফাঁকা গোল পেয়েছিলেন তিনি। তবে সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার হলো না লাল হলুদ তারকার দ্বারা। বরং গোলের ব্যর্থতাকে সামনে রেখে তিরিকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন তিনি।
এখানেই শেষ নয়, ম্যাচ যখন 75 মিনিটে গোল করার আরও একটি বড় সুযোগ মিস করেন লাল হলুদের গ্রিক ফরোয়ার্ড। এই সময়ে হেড করে গোল করার চেষ্টা করলেও পোস্টে ধাক্কা লেগে ফিরতি পথ দেখে বল। গ্রিক ফুটবলার ছাড়া আর কোনও লাল হলুদ খেলোয়াড়ই এদিন বড় সুযোগ তৈরি করতে পারেননি। যেই ঘটনা ইস্টবেঙ্গলের জন্য সত্যিই হতাশার।
লাল হলুদ সৈনিকদের পারফরমেন্সে হতাশ অস্কার!
মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার গোলের সুযোগ তৈরি করে ও তা কাজে লাগাতে পারেননি লাল হলুদের দিয়ামান্তাকোস। এছাড়াও দলের ছেলেদের ছন্নছাড়া মনোভাব গতকালের ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের জয়ের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দলের অসহায় অবস্থান প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন কোচ ব্রুজো। লাল হলুদ কোচ বলেন, খেলোয়াড়দের চোটে জর্জরিত লাল হলুদ।
তা সত্ত্বেও আমরা এই ম্যাচের প্রথমার্ধে যথেষ্ট ভাল খেলেছি। তবে গোল করতে পারিনি। যেটার সত্যি খুব প্রয়োজন ছিল। শুরুর দিকে একটা গোল করতে পারলে দ্বিতীয়ার্ধে বাকিদের আত্মবিশ্বাস বাড়ত। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। এ ব্যর্থতা নিজেদেরই। কোচ আরও জানান, দিয়ামান্তাকোস দুবার শট করে গোল পোস্টে বল লাগিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ IPL-র আগেই বিরাট কৃতিত্ব হাসিল বরুণ চক্রবর্তীর, চওড়া হাসি KKR-র
ওকে সঠিক সময় সঠিক জায়গায় থাকতে হবে। আমি মনে করি ও একবার গোল পেলেই নিজের ছন্দ ফিরে পাবে। তবে এ কথা ঠিক যে স্ট্রাইকাররা সবসময় গোল করতে পারেন না। এদিন ব্রুজোর গলায় শোনা যায় পিভি বিষ্ণুদের নাম। বলেন, এই ম্যাচে বিষ্ণু থেকে শুরু করে মহেশ ও ডেভিডরা ওকে যথেষ্ট সাহায্য করেছে। আসন্ন ম্যাচগুলিতে জিততে হলে আরও ভাল খেলতে হবে।
ড্রয়ের পর প্লে অফে যেতে পারবে ইস্টবেঙ্গল?
শুক্রবারের ম্যাচে সমতা নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ইস্টবেঙ্গল। যার ফলে ড্র করেও 1 পয়েন্টে টেবিলের দশম স্থানে উঠে এসেছে লাল হলুদ। শেষের 5 ম্যাচে মাত্র 1টিতেই জয় পেয়েছে অস্কারের দল। বাকি এখনও 6 ম্যাচে। আর এর প্রতিটিতেই শক্তিশালী শত্রু পক্ষের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে হবে লাল হলুদের ছেলেদের। যেখানে ধারাবাহিক অ্যাটাক চালিয়ে জয় পাওয়াটা যথেষ্ট চাপের।
অবশ্যই পড়ুন: চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে বিপদ বাড়ল টিম ইন্ডিয়ার, চিন্তায় গম্ভীর থেকে BCCI
গতকালের ম্যাচে লাল হলুদের জয় সুনিশ্চিত হলে পুরো পয়েন্ট তুলে প্লে অফের সম্ভাবনায় নতুন পালক জুড়তে পারত মশাল ব্রিগেড। তবে তা যেহেতু সম্ভব হয়নি তাই সমতায় থেকে আপাতত প্লে অফে জায়গা করা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে ইস্টবেঙ্গল। কেননা, আসন্ন ম্যাচ গুলিতে চেন্নাইয়িন এফসির পর শক্তিশালী পাঞ্জাব, বেঙ্গালুরু ও চতুর্থ স্থানে থাকা নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের সাথে লড়তে হবে বিষ্ণুদের।
আর সেই ম্যাচগুলিতে শত্রু শিবিরে আঘাত হেনে ধারাবাহিক জয় পাওয়াটা যথেষ্ট কঠিন হবে লাল হলুদদের জন্য। তবে এই অসম্ভব বাস্তবায়িত হলে প্লে-অফে ওঠার জন্য খানিকটা রসদ পাবে ইস্টবেঙ্গল এফসি। যদিও সেক্ষেত্রে বাকি দলগুলির পয়েন্টের দিকেও নজর রাখতে হবে তাদের।