বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফি (ICC Champions Trophy) নিয়ে ভারত-পাকিস্তান মতপার্থক্যের জের যথেষ্ট ভোগান্তি পোহাতে হয়েছিল আইসিসিকে। তবে সেসব এখন অতীত, দুই দলের দাবি মেনেই হাইব্রিড মডেলে বসবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আসর। কাজেই ম্যাচ আয়োজনের ক্ষেত্রে সমস্যা না থাকলেও আইসিসির কাঁধে এখন নতুন বিপদ চেপে বসেছে।
হাইব্রিড মডেলকে মদদ দিয়ে ভারতের ম্যাচগুলি আয়োজিত হবে দুবাইয়ে। তবে ভারতের ম্যাচ ছাড়া বাকি সমস্ত ম্যাচ পাকিস্তানের মাটিতে গড়াবে বলেই সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল। তবে এবার সেই পথেও বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। সূত্র বলছে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ভেন্যু নিয়ে চিন্তার ভাঁজ বেড়েছে ICC কর্তাদের কপালে।
জানা গিয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে শুরু হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগেই করাচির ন্যাশনাল স্টেডিয়াম, লাহোরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামসহ রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এখন নির্মাণ কাজ চলছে। মূলত আপগ্রেডেশনের কারণেই আপাতত বন্ধ রয়েছে স্টেডিয়ামের গেট। ফলত ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পাক স্টেডিয়ামগুলির কাজ শেষ করে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন করাটা যথেষ্ট চাপের হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন অনেকে।
কবে নাগাদ শেষ হবে 3 স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজ?
বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, গত বছর অর্থাৎ 2024 সালের আগস্টে শুরু হওয়া নির্মাণ কাজ গত 31 ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে বিশেষ কিছু কারণে সম্ভাবনা বাস্তবায়িত হয়নি। জানা গিয়েছে, গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইউএসএ লিগ চলাকালীন বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পরিদর্শনের কাজ হয়নি। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট বোর্ডের ভুল পরিদর্শনের কারণে যথেষ্ট ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে দলগুলিকে।
মনে করা হচ্ছে, আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে পাকিস্তানের 3 স্টেডিয়ামের বর্তমান অবস্থা খতিয়ে দেখতে খুব শীঘ্রই একটি সদস্য দলকে পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে পাঠাবে আইসিসি। মূলত পাক স্টেডিয়ামগুলির নির্মাণ কার্য খতিয়ে দেখে আদৌ সেখানে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি টুর্নামেন্ট আয়োজন করা যাবে কিনা সে বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করবেন তাঁরা।
পাকিস্তানে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন করা প্রায় অসম্ভব!
বেশ কয়েকটি সূত্র বলছে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির টুর্নামেন্ট আয়োজনের ক্ষেত্রে বর্তমানে একেবারেই প্রস্তুত নয় পাকিস্তানের কোনও স্টেডিয়ামই। লাহোরের গদ্দাফি থেকে শুরু করে রাওালপিন্ডির ক্রিকেট স্টেডিয়াম প্রায় সবকটিতেই এখন নির্মাণ কাজ চলছে জোড় কদমে। জানা যাচ্ছে, স্টেডিয়াম গুলিতে ফ্লাডলাইট থেকে শুরু করে দর্শক আসন এবং আউটফিল্ডের কাজ অনেকটাই বাকি। ফলত সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ফেব্রুয়ারির আগে স্টেডিয়ামগুলিকে সার্বিকভাবে সাজিয়ে প্রস্তুত করা এক প্রকার অসম্ভব।
বলা বাহুল্য, লাহোর এবং করাচি দুই স্টেডিয়ামে এখন ভারী নির্মাণ কাজ চলছে। স্টেডিয়ামের গেস্ট বক্স থেকে শুরু করে ড্রেসিংরুম এমনকি দর্শক আসনের কাজও অনেকটাই বাকি। কাজেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিকে পাখির চোখ করে দাবানলের গতিতে কাজ চললেও অনেকেই মনে করছেন আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় স্টেডিয়ামের ফিনিশিং তথা নির্মাণ কাজ আটকে যেতে পারে। সব মিলিয়ে, জানুয়ারির শেষ কিংবা ফেব্রুয়ারি শুরুতে পাকিস্তানের 3 স্টেডিয়ামের আপগ্রেডেশন পর্ব শেষ করা না গেলে বিপদের দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত হবে আইসিসি। কেননা, একেবারে ঘাড়ের কাছে খেলা চ্যাম্পিয়নস ট্রফির গরম নিঃশ্বাস অল্প সময়ের মধ্যে নতুন ভেন্যু খোঁজার সুযোগ দেবে না আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল কর্তাদের।