বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: হামসে যো টাকরায় গা, চুর চুর হো জায়েগা… আজ বোধহয় এ কথাটাই বলতে ইচ্ছে হচ্ছে ভারতীয় সমর্থকদের। আর হবে নাই বা কেন। এশিয়া কাপে ভারতীয় দল যে খেল দেখাচ্ছে তাতে প্রতিপক্ষ হিসেবে টিকে থাকার ক্ষমতা নেই কারোরই। সেটাই, বাংলাদেশকে গো হারা হারিয়ে বুঝিয়ে দিলেন সূর্যকুমার যাদবেরা (India Beats Bangladesh)।
ভারতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে গিয়েই উড়ে গেল বাংলাদেশ!
ম্যাচের আগে বাংলাদেশী ক্রিকেটার মেহেদী হাসান বলেছিলেন, সামনে ভারত নাকি অস্ট্রেলিয়া, সেটা পরোয়া করিনা। বুধবার হয়তো সেই আত্মবিশ্বাস নিয়েই অপ্রতিরোধ্য টিম ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিলেন ইউনূসের দেশের ক্রিকেটাররা। সেই মতোই, টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন দাস। ফলে, বাধ্য হয়েই ব্যাটিং করতে হয়েছিল অভিষেক শর্মাদের। আর সেটাই যেন কাল হয়ে দাঁড়াল ওপারের টাইগারদের জন্য।
বুধবার এশিয়া কাপের সুপার ফোরের মঞ্চ ছিল সেই দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম। সেখানেই ওপেনিং করতে নেমে বাংলাদেশী বোলারদের এক কথায় নাকের জলে চোখের জলে করে চার, ছয়ের ঝড় তোলেন ঘরের ছেলে অভিষেক।
এদিন বন্ধু ওরফে সতীর্থর পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ভারতীয় তারকা শুভমন গিল। এদিনও দুই বন্ধুর নির্ভরযোগ্য জুটি দেখার সুযোগ হয়েছিল দর্শকদের। তবে, 19 বলে 29 রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় গিলকে। তাতে অবশ্য হাল ছাড়েননি অভিষেক। এদিন গত পাকিস্তান ম্যাচের মতোই ভারতের হয়ে জয়ের ভীত গড়ে দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর ব্যাট থেকে মাত্র 37 বলে 5টি ছয় এবং, 6টি চার সহযোগে 75 রানের যোগদান পেয়েছিল ভারত।
তবে ধাক্কাটা আসে, অভিষেক আউট হওয়ার পরই। শর্মা বিদায় নিতেই মাঠে নেমেও এদিন কিছুই করে দেখাতে পারেননি অধিনায়ক সূর্য কুমার যাদব এবং শিবম দুবে। 5 রানে আউট হয়েছিলেন তিলক বর্মাও। তাই শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লক্ষ্য বাঁধার দায়িত্বটা গিয়ে পড়ে হার্দিক পান্ডিয়া এবং অক্ষর প্যাটেলের কাঁধে। সেই মতোই, অভিষেকের তৈরি করে দেওয়া দুর্গে নতুন পালক জুড়েছিলেন হার্দিক। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দলকে এগিয়ে রাখতে একেবারে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তবে শেষের বলে সাথ দেয়নি ভাগ্য। ইনিংসের অন্তিম বলে ছয় মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। তবে দলের জন্য করে দিয়ে গিয়েছিলেন 38 রান। তাতেই বাংলাদেশকে 168 রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় ভারত।
জবাবে ব্যাট করতে এসে শুরুটা একেবারেই ভাল হয়নি ওপার বাংলার ছেলেদের। 1 রানে আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন ওপেনার তানজিদ হাসান। এরপর থেকে ভারতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও দফায় দফায় উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। বলা বাহুল্য, আজ ভারতীয় বোলিং আক্রমণের সামনে এক ফোঁটাও মাথা তুলতে পারেনি ওপার বাংলার ব্যাটসম্যানরা। সেসবের মধ্যেও দলকে জেতানোর চেষ্টাটা করেছিলেন সাইফ হাসান। এদিন বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেন তিনিই।
অবশ্যই পড়ুন: অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দাদাগিরি, বৈভব সূর্যবংশীর খাতায় আরও এক বিশ্বরেকর্ড
তবে দুঃখের বিষয়, হাসানের ব্যাট থেকে 69 রানের যোগদান পেলেও অন্যান্য সময়ের মতোই ভারতীয় ঘূর্ণি ঝড়ের কাছে মাথা নোয়াতে হল বাংলাদেশকে। না বললেই নয়, বুধবার ভারতীয় বোলাররা ওপার বাংলার ছেলেদের একেবারে চেপে ধরেছিলেন। আর তাতেই কয়েক রানের ব্যবধানে ক্রমাগত উইকেট পড়তে থাকে লিটনদের। শেষ পর্যন্ত, সর্বস্ব খুইয়ে 127 রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। যার জেরে 41 রানে জিতে অপরাজিত থেকে এশিয়া কাপের ফাইনালে পা রাখল ভারত।