বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: দীর্ঘ বিরোধিতা নিয়েই গড়িয়েছিল গত রবিবারের ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচ। এশিয়া কাপের সেই আসরে পাক দলকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন সূর্যকুমার যাদবেরা। যদিও, সেই পরাজয় যন্ত্রণাকে নাকি ছাপিয়ে গিয়েছে ভারতীয়দের হাত না মেলানোর বিষয়টি। পাকিস্তানের দাবি, সূর্যরা হাত না মিলিয়ে তাদের অপমান করেছে। এ নিয়ে অবশ্য গঙ্গা দিয়ে জল বয়ে গেছে অনেক। এখন প্রশ্ন, আসন্ন রবিবারে ম্যাচে কি হাত মেলাতে দেখা যাবে ভারত-পাক দু’দলের ছেলেদের? সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে ICC (ICC On Handshake Policy)।
রবিবারের ম্যাচে করমর্দন নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত ICC-র
ক্রিকবাজের রিপোর্ট অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সিইও সংযোগ গুপ্তের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথা হয়ে গিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান ওরফে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রধান মহসিন নকভির। সেই বৈঠকের পরেই পাক ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সলমান আলি আঘা ও কোচ মাইক হেসেনের সাথে বৈঠকে বসেন নকভি।
শোনা যাচ্ছে, ওই বৈঠকেই পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, রবিবারের ম্যাচে পাক ক্রিকেটাররা যেন ভারতীয় খেলোয়াড়দের সাথে হাত মেলাতে না যান। এমনটাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের নির্দেশ। তাই সেই নির্দেশ যেন আসন্ন ম্যাচে অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হয়, সেটাই পাক অধিনায়ককে বুঝিয়ে দিয়েছেন মহসিন। কাজেই, রবিবারের ম্যাচেও যে দুই দলের প্লেয়াররা একে অপরের সাথে হাত মেলাবেন না সে কথা বলাই যায়।
পাক বোর্ডের মিথ্যাচার ফের ধরা পড়েছে
গত বুধবার পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়, গত ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচের ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফট নাকি নিজের ভুল বুঝতে পেরে পাক অধিনায়কের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। এ নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পিসিবি প্রধান বলেন, ক্রিকেট আর রাজনীতি একসঙ্গে চলতে পারে না। ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ থেকেই এই সঙ্কট চলছে। যদিও পাইক্রফট ক্ষমা চেয়ে নেওয়ায় সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে।
শুরুতেই পাক বোর্ডের বিবৃতির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। পরবর্তীতে খোলসা হল সবটা। PCB-র তরফে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, পাকিস্তানের অধিনায়ক সলমান, টিম ম্যানেজার নাভিদ আক্রম চিমা, কোচ হেসন সহ পাকিস্তান বোর্ডের কয়েকজন কর্তার সাথে দুবাইয়ের স্টেডিয়ামে নিজের ঘরে কথা বলছেন ম্যাচ রেফারি পাইক্রফট। যদিও, ভিডিওটি মিউট থাকায় তাদের মধ্যে কী কথা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আসেনি। কাজেই, ম্যাচ রেফারি যে আদৌ ক্ষমা চেয়েছেন তা বোঝার উপায় নেই। শুধু তাই নয়, তাঁর দৈহিক আচরণে ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গিমাও লক্ষ্য করা যায়নি। এদিকে টাইমস অফ ইন্ডিয়া এবং ক্রিকবাজের রিপোর্ট বলছে, পাকিস্তানের কাছে কোনও রকম ক্ষমা চাননি ম্যাচ রেফারি।
অবশ্যই পড়ুন: ভারতের সাথে বড় প্রতিরক্ষা চুক্তি হতে পারে পাকিস্তান দরদী তুরস্কর শত্রু সাইপ্রাসের
ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, দুবাই স্টেডিয়ামের ঘরে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তা এবং পাক দলের অধিনায়কের সাথে কথা বলার সময় তিনি কেবল নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছিলেন। মূলত সব পক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি নিয়েই মুখ খুলে ছিলেন গত রবিবারের ম্যাচ রেফারি। এদিকে ওই মুহূর্তের দৃশ্যকে সামনে এনে পাকিস্তান বোর্ড দাবি করছে অ্যান্ডি নাকি তাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। এমতাবস্থায়, টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলর একটি সূত্র বলেছে, ক্ষমা চাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। যখন একজন ব্যক্তি কোনও ভুলই করেননি, তখন ক্ষমা চাইবেন কেন?