ভাল জামা না থাকায় নিমন্ত্রণ করত না কেউ! সেই মারুফাই আজ মহিলা বিশ্বকাপে

Published:

Marufa Akter Life Story Bangladeshi Pacer
Follow

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ছেলেবেলা থেকেই দারিদ্র্যতাকে সারা গায়ে মেখে নিয়েছিল সে। বলদের বদলে বাবাকে চাষে সাহায্য করতে কাদায় হালও টেনেছিল বাংলাদেশের মারুফা আক্তার। আজ সেই মেয়েই মহিলা বিশ্বকাপের মঞ্চে বাংলাদেশকে আশার আলো দেখাচ্ছে। এতদিন দারিদ্রতা ছিল চিরসঙ্গী,তাই লড়াই করেই বড় হতে হয়েছিল মারুফাকে। মহিলাদের ওয়ানডে বিশ্বকাপেও সেই লড়াইটা দেখিয়েই বিশ্বের বহু ক্রিকেট বিশেষজ্ঞের মন কেড়েছেন তিনি। নিজের অতীত (Marufa Akter Life Story) ঘাঁটতে গিয়ে সেই মারুফাই কেঁদে ভাসালেন।

অতীত নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন বাংলাদেশের মারুফা

সময়টা ছিল করোনা মহামারীর। সেই সময়, বাবাকে চাষে সাহায্য করতে গিয়ে হাল টানতে হয়েছিল মারুফাকে। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছিল দারুণ। সেই মেয়েই কঠোর পরিশ্রম করে জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশ দলে। কঠোর পরিশ্রমের যে কোনও বিকল্প হয় না সেটা তিনি বোঝেন। তাই তো, বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রতিপক্ষকে এক চুলও জায়গা ছাড়তে রাজি নন ওপার বাংলার লড়াকু।

বলা বাহুল্য, বল হাতে মারুফার লড়াই দেখে তাঁকে ভয় না পেয়ে থাকতে পারছেন না প্রতিপক্ষের ব্যাটাররা। তবে প্রথমবারের মতো মহিলাদের ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাংলাদেশ দলে নিজের নাম দেখতে পেয়ে মুখের ভাষা হারিয়েছিলেন এই মারুফাই। সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশ দলে নিজের নাম দেখতে পেয়ে কেঁদেই ফেলেছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বললেন সে কথা।

ICC কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের মারুফা অতীত স্মরণ করেছেন। গত 23 আগস্ট মহিলাদের ওয়ানডে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ। তা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মারুফা বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশ দলে নিজের নাম দেখতে পেয়ে কেঁদেই ফেলেছিলাম। বিশ্বকাপে জায়গা পাওয়াটা তো আর সহজ কথা নয়। বাবা মাকে সবার আগে ফোন করে জানিয়েছিলাম সে কথা। তবে ওরা অত কিছু বোঝে না। শুধু জানতে চেয়েছিল আমি খেলছি কিনা। আমি খেললেই ওরা খুশি।’

অবশ্যই পড়ুন: ৫,০০০ থেকে শুরু জুতোর দাম! নতুন স্পোর্টস ব্র্যান্ড TEN X YOU লঞ্চ করলেন সচিন তেন্ডুলকর

এদিন মারুফা আরও বলেন, ‘আমি আমার বাবা মাকে বলেছিলাম বিশ্বকাপ অনেক বড় প্রতিযোগিতা। ওখানে সবাই সুযোগ পায় না। সেটা শুনে আমার বাবা মা বলেছিল, আমরা প্রথম থেকেই জানতাম তুই পারবি। এখন বাবা মা খুবই খুশি।’ এদিন নিজের অতীত ঘাঁটতে গিয়ে চোখে জল নিয়ে মারুফা বলেন, ‘আমার বাবা কৃষক। আর্থিক অবস্থাও ভাল না। গ্রামে বড় হয়েছি। সেখানে কাউকে সেভাবে পাশে পাইনি। ভাল জামাকাপড় না থাকার কারণে অনেকেই নিমন্ত্রণ করত না। ঈদে একটা নতুন জামা কেনার মতো টাকা থাকতো না আমাদের কাছে।’ এসব কথা বলতে বলতেই একেবারে অঝোরে কেঁদে ফেলেন বাংলাদেশের বোলার।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের বছর 20-র বোলার এখন মোটামুটি যা আয় করেন তা দিয়ে সংসার চলে যায়। বাবাকেও টুকটাক সাহায্য করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে মারুফা বলেছিলেন, ‘আগের থেকে এখন পরিস্থিতি কিছুটা ভাল। পরিবারকেও কিছুটা সাহায্য করতে পারি আমার আয় থেকে। ছোটবেলায় মনে হতো মানুষ কবে আমাদের একটু ভাল চোখে দেখবে। আজ টিভির পর্দায় নিজেকে দেখলে নিজেরই লজ্জা লাগে।’ মারুফার প্রতিটি কথায় যে দীর্ঘদিনের অপ্রাপ্তি, যন্ত্রণা, অবহেলা এবং চরম লাঞ্ছনা লুকিয়ে সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে কি?

গুরুত্বপূর্ণ
Join
চাকরির খবর
Join
রাশিফল
Join
খেলার খবর
Join