বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা; IFA শিল্ডে মোহনবাগানের প্রথম ম্যাচেই ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে পোস্টার নিয়ে হাজির হয়েছিলেন বাগান সমর্থকরা। এবার সবুজ মেরুনের দ্বিতীয় ম্যাচ অর্থাৎ মোহনবাগান বনাম ইউনাইটেড স্পোর্টসের ম্যাচের দিনও ধরা পড়ল একই ছবি। এদিন অবশ্য পরিস্থিতি যথেষ্ট উত্তপ্ত ছিল। ম্যাচের একেবারে শুরু থেকেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন সবুজ মেরুনের সমর্থকরা (Mohun Bagan Fans Protests)। ম্যাচের শেষে গিয়ে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠ। যার জেরে শেষ পর্যন্ত লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয় পুলিশ। তাতে আহত হন একাধিক সমর্থক। শোনা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই দুই মোহনবাগান ভক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঠিক কী ঘটেছিল?
সমর্থকদের ক্ষোভের প্রধান কারণ ইরানে ACL 2 ম্যাচ খেলতে মোহনবাগানের না যাওয়া। সেই থেকেই কেন সবুজ মেরুন ইরানে AFC চ্যাম্পিয়নস লিগ টুয়ের ম্যাচ খেলতে গেল না তা নিয়ে বারংবার প্রশ্ন তুলতে শোনা গিয়েছে ভক্তদের। মাঝে মোহনবাগানের অনুশীলনের দিন যুবভারতীর বাইরে বাগানের তিন অজি তারকা জেমি ম্যাকলারেন, জেসন কামিংস এবং দিমিত্রি পেত্রাতোসকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন সমর্থক। যদিও এদিন, জেমি এবং কামিংস সমর্থকদের বোঝাচ্ছিলেন ঠিকই, তবে হঠাৎ অহংকার দেখাতে থাকেন দিমি। আর সেটাই সমর্থকদের ক্রোধের আগুনে ঘি ঢালার কাজটা করেছে।
বুধবার গোকুলাম কেরালার বিরুদ্ধে কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামে মাঠে নেমেছিল মোহনবাগান। তবে তার আগে বাগান সমর্থকরা ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে পোস্টার নিয়ে হাজির হন। শুধু তাই নয়, এদিন বাগান তারকা দিমি মাঠে ঢোকার সময় তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন সমর্থকরা। এদিকে স্টেডিয়ামের বাইরে ব্যানার লাগিয়ে সঞ্জীব গোয়েঙ্কা সহ সবুজ মেরুন কর্তাদের পদত্যাগের দাবি তোলেন ভক্তরা।
সূত্রের খবর, গোকুলামের বিরুদ্ধে ম্যাচের দিন মোহনবাগান ম্যানেজমেন্ট ও ক্লাবের বিরুদ্ধে টানা স্লোগান দিতে থাকেন সমর্থকরা। এছাড়াও ম্যাচ চলাকালীন দিমি প্রথম গোল করার পরিপ্রেক্ষিতে উচ্ছসিত হওয়ার বদলে শেম শেম বলে চিৎকার করতে থাকেন বাগান সমর্থকদের একটা বড় অংশ। পরিস্থিতি আরও বেগতিক হয় ম্যাচ শেষ হওয়ার পরই। এদিন গোকুলামের বিরুদ্ধে ম্যাচের পর স্টেডিয়ামের বাইরে দিমির গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন সমর্থকরা। গাড়ি আটকে বাগান তারকার উপর চড়াও হওয়ারও চেষ্টা করেছিলেন অনেকে। বেশ কয়েকজনকে তাঁর গাড়িতে দু-চার থাবা মারতেও দেখা যায়। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ময়দানে নামে পুলিশ। চলে লাঠিচার্জ। যেই ঘটনায় মোহনবাগানের বেশ কয়েকজন সমর্থক আহত হয়েছেন।
অবশ্যই পড়ুন: ফাঁকা বাড়িতে ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা বাঁকুড়ায়! গ্রেপ্তার তৃণমূল কর্মী তাপস বাগদী
পুলিশ সূত্রে খবর, মোহনবাগান সমর্থকদের মধ্যে থেকে দুজন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। তাঁরা নাকি প্রথম থেকেই নেশাগ্রস্ত ছিলেন। জানা যায়, কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামের বাইরে তৈরি হওয়া ভয়াবহ পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রায় 1 ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছিল পুলিশের। পরবর্তীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে পুলিশি ঘেরাটোপের মধ্যে থেকে প্লেয়ারদের ব্যক্তিগত গাড়িতে তুলে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে এসবের মাঝেই প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে নিরাপত্তা। প্রশ্ন উঠছে, দুই হাজার সমর্থকের ম্যাচে যদি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় তাহলে 18 তারিখ অর্থাৎ শনিবার কলকাতা ডার্বির ফাইনালের দিন দিন কী হতে পারে?