বিক্রম ব্যানার্জী, কলাকাত: ডার্বির মাঠে সবুজ মেরুনে মিশে যাবে লাল হলুদ। কিন্তু কোথায় হবে ম্যাচ? বাঙালির আবেগকে উসকে দিয়ে কলকাতার বাইরে ভিন রাজ্যে অনুষ্ঠিত হতে পারে ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগান (East Bengal VS Mohun Bagan) ডার্বি ম্যাচ। হ্যাঁ, আয়োজক যেহেতু বাগান কর্তারা তাই কলকাতায় ডার্বির লড়াই জারি রাখার শেষ চেষ্টাটা দীর্ঘদিন চলেছিল। তবে প্রশাসনের আপত্তি জনিত কারণে এক প্রকার বাধ্য হয়েই পড়শি রাজ্যে সরছে ডার্বি ম্যাচ। কিন্তু কোথায়?
বেশকিছু সূত্র মারফত খবর, আসন্ন ডার্বি ম্যাচটি কলকাতায় আয়োজন করার চেষ্টা করেছিল মোহনবাগান। তবে সেই পথে সায় দেয়নি কলকাতা পুলিশ। যার জেরে বাতিলের মুখ থেকে বাঙালিদের আবেগ মিশ্রিত ডার্বিকে ফিরিয়ে এনে ভিন রাজ্য অর্থাৎ আসামের গুয়াহাটিতে আয়োজন করা হতে পারে মোহন-ইস্ট ডার্বি। জানা গিয়েছে, মূলত অর্ধেক দর্শক নিয়ে ম্যাচ করতে নারাজ রাজ্য প্রশাসন। আর সেই কারণেই অগত্যা কলকাতা ডার্বিকে সরে যেতে হচ্ছে ভিন রাজ্যে।
কলকাতায় আপাতত হচ্ছে না ডার্বি ম্যাচ
ইস্টবেঙ্গল তার চির প্রতিদ্বন্দ্বী দল মোহনবাগানের বিপক্ষে মাঠে নামলেই ডার্বি ম্যাচ আপামর বাঙালির উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যোগায়। তবে এতদিন যে ম্যাচ কলকাতার মাঠে দেখতে অভ্যস্ত ছিল সমর্থকরা, এবার পুলিশি নিষেধাজ্ঞার কারণে তা সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে ভিন রাজ্যে। সূত্রের খবর, সল্টলেক স্টেডিয়াম থেকে ডার্বি সরে যাওয়ার মূল কারণ আসলে গঙ্গাসাগর মেলা। প্রতিবছরের মতো এ বছরেও গঙ্গাসাগর মেলাকে কেন্দ্র করে ভিড় থাকবে চোখে পড়ার মতো। আর সেই কারণকে সামনে রেখে মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গলের ডার্বি ম্যাচে পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তার অভাবে কলকাতায় ডার্বি আয়োজনের অনুমতি পায়নি মোহনবাগান।
কেন পছন্দের তালিকায় গুয়াহাটি?
সল্টলেক স্টেডিয়ামে যে ডার্বি ম্যাচ আয়োজন করা যাবে না তার একটা আভাস অনেক আগে থেকেই পেয়ে গিয়েছিল বাগান সদস্যরা। তবে সেই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়ে কলকাতা পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিক থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে দীর্ঘ আলোচনা চলে মোহনবাগান কর্তাদের। তবে তাতে মোম গলেনি। গঙ্গাসাগর মেলার ভিড় নিয়ন্ত্রণের কারণে ডার্বি ম্যাচে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয় কলকাতা পুলিশ। এরপরই দিশেহারা হয়ে বিকল্প রণক্ষেত্র খুঁজছিল মোহনবাগান।
বাগান কর্তারা চেয়েছিল ডার্বি ম্যাচটি জামশেদপুরে আয়োজন করতে। তবে জামশেদপুর এফসির অনুমতি না পাওয়ায় শুরু হয় বিকল্পের খোঁজ। এরপরই এফএসডিএল-এর সঙ্গে আলোচনায় বসেন বাগান কর্তারা। উঠে আসে গুয়াহাটির নাম। কেননা, 10 জানুয়ারি গুয়াহাটিতে পাঞ্জাব বনাম নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের হাই ভোল্টেজ ম্যাচ রয়েছে। ফলত টেলিভিশন সম্প্রচারের যাবতীয় সরঞ্জাম সেখানেই থাকবে। কাজেই গুয়াহাটিতে ডার্বি আয়োজন করলে আখেরে লাভ হবে বাগানের। তাই এখন কলকাতার বিকল্প হিসেবে আলোচনায় রয়েছে গুয়াহাটি।
ছন্দে রয়েছে দুই দলই
গত ম্যাচে হায়দরাবাদ এফসিকে 3-0 ব্যবধানে হারিয়ে তুমুল আত্মবিশ্বাস সঞ্চয় করেছে মোলিনার ছেলেরা। আর এই ম্যাচে বাগান প্লেয়ারদের এক ফোঁটাও ছন্দ পতন হয়নি। যা ডার্বির আগে সবুজ মেরুন শিবিরে নতুন অক্সিজেন যোগাবে। অন্যদিকে হায়দরাবাদের ঘরের মাঠে জয় না পেলেও ড্র করে ফিরেছে ব্রুঁজোর দল। এখন তাঁদের প্রাথমিক লক্ষ্য ডার্বি ম্যাচ। তবে এর আগে সোমবার মুম্বই সিটি এফসির ছেলেদের বিপক্ষে মাঠে নামতে হবে লাল হলুদদের। আর সেই ম্যাচে শত্রুপক্ষকে ঘায়েল করে 3 পয়েন্ট তুলতে আমরণ চেষ্টা করবে গঙ্গা পাড়ের দল।