এখনও কোন অঙ্কে সুপার সিক্সে যেতে পারবে ইস্টবেঙ্গল? দেখে নিন সমীকরণ

Published on:

now how will east bengal reach the super six look at the equation

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: চোট-আঘাতে কাহিল দল নিয়েও শুক্রবার ঘরের মাঠে কেরালা বধ করেছে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC)। যার জেরে টানা 3 ম্যাচ হারের পর অবশেষে জয়ের মুখ দেখেছে লাল হলুদ। কেরালাকে হাতিয়ার বানিয়ে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলেছেন অস্কার ব্রুজো। বিষ্ণু ও হিজাজির গোলে ভর করে এদিন কেরালার ছেলেদের দুর্দশা ডেকে এনেছে মশাল বাহিনী। আর এই সবই সম্ভব হয়েছে লাল হলুদের কোচিং ক্লাসের পরই। কাজেই কেরালার ম্যাচ থেকে 3 পয়েন্ট জুগিয়ে বর্তমানে সুপার সিক্সের আশা বেঁচে রয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। তবে সেই দূরের গন্তব্য পাড়ি দেওয়া যথেষ্ট কঠিন হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

হারের হ্যাটট্রিক থেকে বিধ্বংসী জয় লাল হলুদের

চলতি ISL মরসুমের শেষ 3 ম্যাচে পরাজয় যন্ত্রনা নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন ইস্টবেঙ্গলের ছেলেরা। যার ফলে নতুন করে দল সাজিয়ে শত্রু শিবিরে আঘাত হানার কাজটা যথেষ্ট কঠিন ছিল। সেখানে আবার চোটের কারণে দলে নেই আনোয়ারের মতো গুরুত্বপূর্ণ যোদ্ধারা। ফলত হারের হ্যাটট্রিকে পা গলিয়ে কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে জয় পাওয়াটা যে একেবারেই সহজ হবে না একথা আগেভাগেই বুঝে গিয়েছিলেন অস্কার। তবে দুর্বল দল নিয়েও গতকালের লড়াইটা নিজেদের দিকে টেনেছিল লাল হলুদ।

WhatsApp Community Join Now

যদিও প্রথমার্ধের শুরুটা খানিকটা খাপছাড়া ভাবে হলেও শেষের দিকে ম্যাচের রাশ ঝুঁকেছিল অস্কারদের দিকেই। এদিন দিয়ামান্তোকোস ও রিচার্ড সেলিস পাল্লা দিয়ে কেরালা ব্রিগেডে মুহুর্মুহু আক্রমণ শানিয়েছেন। পিছন থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন ক্লেটন। অন্যদিকে পিভি বিষ্ণুর হাত ধরে আলগা হয়ে গিয়েছিল কেরালার রক্ষণভাগ।

গতকাল লাল হলুদ প্লেয়ারদের চেষ্টাটা দলে গোলের সংখ্যা আরও বাড়াতে পারত। তবে দিয়ামান্তোকোস-ক্লেটনদের বেশ কিছু ভুল এদিন মাঝপথে ইস্টবেঙ্গলকে ফাঁপরে ফেলে। শুক্রবার রিচার্ডের দূরপাল্লার শট বারে লেগে ফিরতি পথ দেখে। এদিন সহজ গোলের সুযোগ পেয়েও তাহ হাতছাড়া করেছিলেন রিচার্ড।

বিষ্ণুর পায়ে প্রথম গোল পায় লাল হলুদ

বিদেশীদের ব্যর্থতার মাঝে এদিন নিজের চেনা ছকে জালে বল জড়িয়েছিলেন বিষ্ণু। খেলা যখন 20 মিনিটে পা রেখেছে, ঠিক সেই সময়ে ইস্টবেঙ্গলের ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন বিষ্ণু। ক্লেটনের জোরালো পাস থেকে ঝড়ের গতিতে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি। এরপরই একার হাতে সুযোগ তৈরি করে গোলকিপারের মাথার ওপর থেকে বল চিপ করেন বিষ্ণু। লাল হলুদের সম্ভাব্য গোল এদিন আমরণ চেষ্টা করেও আটকাতে পারেননি কোরৌ সিং। যার জেরে শুক্রবারের প্রথম গোল পেয়ে যায় অস্কারের দল।

দ্বিতীয়ার্ধে পাল্টা দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি কেরালার

প্রথমার্ধ শেষ করে বাকি 45 মিনিটের খেলাতেও দুই দলের আক্রমণ প্রতি আক্রমণের ছবিটা একটুও বদলায়নি। কেরালার নোয়া, লুনারা বিচ্ছিন্নভাবে আক্রমণ চালালেও বিপদ ঠেকিয়ে দিয়েছিল লাল হলুদ। এরপরই কেরালাকে পাল্টা দিতে বল পায়ে মাঠ দখল করেন দিয়ামান্তোকোস। শত্রুপক্ষের ছেলেদের ডিফেন্স করে গোলের সুযোগও তৈরি করেছিলেন তিনি। তবে দুর্ভাগ্য যে, তাঁর চেষ্টায় ধরা দেয়নি সাফল্য।

কেরালার গোলকিপারের বিচক্ষণতা এদিন ঠেকিয়েছিল দিয়ামান্তোকোসের সম্ভাব্য গোল। তবে সেই চেষ্টা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। খেলা কিছুটা গড়াতেই 72 মিনিটের মাথায় কর্নার থেকে ভেসে আসা বল হেড করে জালে জড়িয়ে দেন হিজাজি মাহের। লাল হলুদের জোড়া সাফল্যে স্টেডিয়াম ছেয়ে যায় সমর্থকদের আত্মবিশ্বাসী চিৎকারে। তবে লাল হলুদের ধারাবাহিক গোল মুখের হাসি কেড়ে নিয়েছিল কেরালার।

ফলত ম্যাচের অন্তিম লগ্নে পৌঁছে গোল করার আপ্রাণ চেষ্টা করে ভিন রাজ্যের ছেলেরা। অবশেষ 84 মিনিট পৌঁছে ইস্টবেঙ্গলের 1 গোল হজম করে দানিশ ফারুক। তবে তা সত্ত্বেও রেফারির শেষ বাঁশিতে জয় ফিরেছিল ইস্টবেঙ্গল। ফলাফল ইস্টবেঙ্গল 2, কেরালা 1।

কোন অঙ্কে সুপার সিক্সে পৌঁছবে ইস্টবেঙ্গল?

হারের হ্যাটট্রিকে নাম জড়িয়ে সুপার সিক্সে ওঠার আশা একপ্রকার খুইয়ে ফেলেছিল অস্কারের দল। তবে গতকালের জয়টা লাল হলুদকে আবারও স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে। কেরালার বিরুদ্ধে জয়ের পর লিগ টেবিলের 11তম স্থানে থাকা ইস্টবেঙ্গল এখন 17 ম্যাচে 17 পয়েন্ট নিয়ে দৌড়াচ্ছে। তবে চোট জর্জরিত দল আদৌ সুপার সিক্সে জায়গা করতে পারবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ে রয়েছে।

যদিও এই অসাধ্য সাধন ব্রুজোর কাছে খুব একটা নতুন কিছু নয়। তবে পথ এখনও অনেকটাই বাকি। কাজেই আসন্ন ম্যাচগুলিতে শুধু জিতলেই চলবে না। সেই সাথে লাল হলুদকে সুপার সিক্সে জায়গা করে দিতে হলে প্রতিপক্ষ দলগুলিকেও বেশ কয়েকটি ম্যাচ হারতে হবে। তবে আসন্ন প্রতিপক্ষ যেহেতু মুম্বই, চেন্নাইয়িন এফসি ও বেঙ্গালুর মতো দল তাই লড়াই টা যে যথেষ্ট কঠিন হবে একথা বলার অপেক্ষায় রাখে না।

অবশ্যই পড়ুন: নাক কাটালেন শ্রেয়স আইয়ার ও KKR-র সম্ভাব্য অধিনায়ক

সঙ্গে থাকুন ➥
X