বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: চিকিৎসকদের তরফে আগেই নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিল ছেলেটা। মেরুদন্ডে অস্ত্রোপচারের পর ডাক্তাররা বলে দিয়েছিলেন আর ফুটবল খেলতে পারবেন না তিনি। তবে ফুটবল অন্ত প্রাণ কি আর সেই বাঁধ মানে? বোনের হাত ছুঁয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, একদিন ঠিকই ময়দানে ফিরবেন। গলা ফাটিয়ে বলেছিলেন, দেখবি তোর দাদা একদিন ঠিক ফুটবল খেলবে। এবার সেই ছেলেটাই দীর্ঘ কাঁটা পেরিয়ে পা রাখল ইস্টবেঙ্গলে (East Bengal FC)। হ্যাঁ, পুরনো যোদ্ধা এডমুন্ড লালরিন্দিকাকে ফের দলে নিয়েছে লাল হলুদ।
ফুটবল খেলার কথাই ছিল না এডমুন্ডের
জানা যায়, মেরুদন্ডে অস্ত্রোপচারের অন্তত 18 মাস পর ময়দানে ফিরেছেন এডমুন্ড। তবে বল পায়ে মাঠে ফেরার যাত্রাটা মোটেই সহজ ছিল না। অপারেশনের পর ডাক্তাররা জানিয়ে দিয়েছিলেন, কোনও মতেই ফুটবল খেলা যাবে না তাঁর। চাইলে ব্যাডমিন্টন খেলতে পারেন, তবে ফুটবল একেবারেই নয়। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে দিয়েছেন ফুটবল পাগল লালরিন্দিকা। সম্প্রতি এই পুরনো ফুটবলারকে দলে নিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ইস্টবেঙ্গলও। আর তাতেই মিলেছে অঙ্ক। লাল হলুদ খুঁজে পেয়েছে তাদের পুরনো শক্তিকে।
হাল ছাড়েননি এডমুন্ড
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেল, চোটের কারণে বেশ কয়েক জায়গা থেকে ধাক্কা খেতে হয়েছে লালরিন্দিকা। বেঙ্গালুরু এফসির তরফে তাঁর সাথে চুক্ত ছিন্ন করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও ভেঙে পড়েননি এডমুন্ড। ফুটবলের মূলস্রোতে ফিরতে একপ্রকার গা ভাসিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। বেঙ্গালুরুর তরফে ধাক্কা পেতেই ইন্টার কাশিতে যোগ দেন এডমুন্ড। আর সেখানেই নিজেকে ভেঙে আবার নতুন করে গড়েছেন এই ভারতীয় ফুটবলার। আই লিগের এই দলে দুরন্ত ফুটবল দেখিয়েই জাতীয় শিবিরে জায়গা হয়েছিল তাঁর। এবার ফিরলেন ইস্টবেঙ্গলে।
অবশ্যই পড়ুন: বিশ্বে দাপট দেখাচ্ছে ভারতীয় অস্ত্র! ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০,০০০ কোটির রপ্তানি বাণিজ্যের লক্ষ্য বাঁধল কেন্দ্র
ইস্টবেঙ্গলে ফেরা নিয়ে এডমুন্ডের বক্তব্য
অস্ত্রোপচারের পর চার মাস বিছানায় শয্যাশায়ী ছিলেন তিনি। তবে নিজের চেষ্টা ও ফুটবলের প্রতি ভালবাসাকে সঙ্গী করেই ময়দানে ফিরেছেন এডমুন্ড। জাতীয় দলে পরিচিত নাম হওয়ার পর এবার নিজের পুরনো দল মশাল ব্রিগেডে পা রাখলেন 17 মিনিটের ডার্বি ম্যাচের হাত ধরে জনপ্রিয় হওয়া ফুটবলার। পুরনো দলে ফিরতে পেরে কেমন লাগছে তাঁর? জানিয়েছেন লালরিন্দিকা। ইস্টবেঙ্গলে ফিরেই ফুটবলার জানিয়েছেন, ইস্টবেঙ্গলে আমি নতুন নই। আগেও এই দলে খেলেছি। দলটা আমার চেনা। বহুদিন থেকেই লাল হলুদে ফিরতে চেয়েছিলাম। এরপরই লালরিন্দিকা বলেন, ইস্টবেঙ্গল দেশের অন্যতম বড় ক্লাব। তাই বারংবার চেয়েছি এই দলের জার্সি গায়ে তুলতে। শেষ পর্যন্ত ফের স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় খুশি এই ভারতীয় প্রতিভা।