ক্রিকেটের ইতিহাসে অভিশপ্ত দিন ৭ এপ্রিল! আজই কেরিয়ার শেষ হয়েছিল টিম ইন্ডিয়ার ২ মহারথীর

Published on:

On April 7, 2000, 2 Indian cricketers were banned for match-fixing

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: 7 এপ্রিল দিনটি ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে অভিশপ্ত দিন বলেই মনে করেন অনেকে। হ্যাঁ, আজকের দিনেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ম্যাচ ফিক্সিং ধরা পড়েছিল। মূলত দিল্লি পুলিশের হাত ধরেই ক্রিকেটের অন্ধকার জগত দেখতে পেয়েছিলেন সমর্থকরা। আর এই ভয়ানক ঘটনার জেরে ম্যাচ ফিক্সিং ও ব্যাটিং র‍্যাকেটের সাথে যুক্ত থাকা খেলোয়াড়দের দোষী সাব্যস্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়। চিরকালের জন্য নষ্ট হয়ে গিয়েছিল দুই ভারতীয় ক্রিকেটারের (Indian Cricketers) গোছানো কেরিয়ারও। ঠিক কী ঘটেছিল 2000 সালের 7 এপ্রিল? জানব।

ধরা পড়ে ম্যাচ ফিক্সিং

আজ থেকে 25 বছর আগে 2000 সালের 19 মার্চ নাগপুরে ম্যাচের আগে সাউথ আফ্রিকান ক্রিকেটার হ্যানসি ক্রোনিয়েকে ভারতের বিরুদ্ধে পঞ্চম ওয়ানডে ম্যাচে 20 রান কম করার জন্য 15 হাজার ডলার অফার করা হয়েছিল। একই সাথে আরেক প্রোটিয়া তারকা হেনরি উইলিয়ামসকেও 50 রান বেশি করার জন্য 15 হাজার ডলারের প্রলোভন দেখিয়েছিল কিছু অসাধু।

যদিও সেবার হেনরি আহত হওয়ায় গোটা ম্যাচ খেলতে পারেননি, ফলত তার চুক্তি বাতিল করে দেয় বোর্ড। আর এই গোটা ম্যাচ ফিক্সিংয়ের খবর প্রকাশ করেছিলেন তৎকালীন তদন্তকারী আধিকারিক হার্শেল গিবস। গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে এনে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে অভিযুক্ত করেন তিনি।

ম্যাচ ফিক্সিংয়ের ঘটনায় নাম জড়ায় ভারতীয় ক্রিকেটারদেরও। এরপরই দিল্লি পুলিশের কাছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। তবে গোটা ঘটনার দায়িত্বভার গিয়ে পড়ে CBI-র ওপর। বলা বাহুল্য, 2000 সালের, 7 এপ্রিল মূলত দিল্লী পুলিশের আধিকারিকরাই দক্ষিণ আফ্রিকার তৎকালীন অধিনায়ক হ্যানসি ও অসাধু জুয়াড়িদের সাথে কথোপকথন ধরে ফেলে। আর এরপরই দিল্লি পুলিশের কানে আসে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের চক্রান্ত চলছে। তারপর?

ইন্ডিয়াহুডের বিশেষ প্রতিবেদন

অপরাধ স্বীকার করেন প্রোটিয়া অধিনায়ক

পর্যাপ্ত প্রমাণের ভিত্তিতে দিল্লি পুলিশের সহযোগিতায় অভিযুক্ত দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার তথা তৎকালীন অধিনায়ক হ্যানসিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে CBI। তবে দীর্ঘ চেষ্টা সত্ত্বেও ভারতীয় তদন্তকারী আধিকারিকদের সামনে দোষ স্বীকার করতে রাজি হননি প্রাক্তন প্রোটিয়া ক্রিকেটার। যদিও শেষ পর্যন্ত 11 এপ্রিল আদালতে নিজের যাবতীয় অপরাধ স্বীকার করে নেন হ্যানসি।

সেই সাথে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার এও জানান, এর আগে 1996 সালে কানপুরে ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় টেস্ট ম্যাচেও হেরে যাওয়ার জন্য তাঁকে 30 হাজার ডলারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। হ্যানসি আদালত কক্ষে দাঁড়িয়ে নিশ্চিত করেন, যে মুকেশ গুপ্ত নামক এক ব্যক্তি তাঁকে এই অসাধু প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আর এর পরই সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করা হয় হ্যানসিকে।

নিষিদ্ধ হন ভারতীয় ক্রিকেটাররাও

আদালত কক্ষে দাঁড়িয়ে অসাধু মুকেশ গুপ্তর পাশাপাশি ম্যাচ ফিক্সিং কান্ডে প্রাক্তন পাকিস্তানি ক্রিকেটার সেলিম মালিক, প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার মহম্মদ আজহারউদ্দিন ও অজয় জাদেজার নাম তুলেছিলেন তিনি। আর এর পরই ম্যাচ ফিক্সিংয়ের দায়ে ভারতীয় ক্রিকেটার আজহারউদ্দিনকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করে BCCI। অন্যদিকে সেলিম মালিককেও আজীবন ক্রিকেট থেকে নির্বাসন দেওয়া হয়। বলে রাখি, একই ঘটনার জেরে, ভারতীয় দলের তৎকালীন সহ অধিনায়ক অজয় জাদেজা ও মনোজ প্রভাকরকে 5 বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে বোর্ড। নিষিদ্ধ হয়ে যান দলের ফিজিও আলি ইরানিও।

অবশ্যই পড়ুন: বাংলাদেশের বোলিং কোচ হলেন KKR প্রাক্তনী, ক্ষোভে ফুঁসছেন পাক সমর্থকরা

উল্লেখ্য, 2000 সালের ডিসেম্বর নাগাদ প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক মহম্মদ আজারউদ্দিনকে সারা জীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে BCCI। যদিও 2012 সালে অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। তবে ততদিনে কেরিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছিল ভারতীয় মহারথীর।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥