বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: সুপার কাপ খেলতে গোয়ায় উড়ে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। সেখানে পৌঁছেই নাকি গত শনিবারের ডার্বিতে ভুল পরামর্শের কারণে প্রধান কোচ অস্কার ব্রুজোর কাছে ক্ষমা চান ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন গোলকিপার কোচ সন্দীপ নন্দী। তবে সূত্র বলছে, সহকারী ক্ষমা চাওয়ায় গলে যাওয়ার বদলে তাঁকে অপমান করেন ইস্টবেঙ্গল কোচ।। আর তারপরই লাল হলুদের বড় দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান সন্দীপ। আর সেই ঘটনার 24 ঘণ্টার পূরণের আগেই কোচ অস্কারকে নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করলেন নন্দী (Sandip Nandy On Oscar Bruzon)। বললেন, ‘ইস্টবেঙ্গলটাকে ধ্বংস করছেন অস্কার।’
ঠিক কী ঘটেছিল গোয়ায়?
গত মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গল শিল্ড ফাইনালের ডার্বিতে পেনাল্টি শুট আউটে পোড় খাওয়া গোলকিপার প্রভসুখন সিং গিলের বদলে মাঠে নামানো হয় দেবজিৎ মজুমদারকে। আর সেই সিদ্ধান্ত যে একেবারেই ঠিক ছিল না তা মোহনবাগানের কাছে পরাজয়ের পর হারে হারে বুঝেছে ইস্টবেঙ্গল ম্যানেজমেন্ট। যদিও প্রকাশ্যে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে মুখ খুলেছিলেন প্রধান কোচ অস্কার। তাঁর কথায়, ‘দেবজিৎ মজুমদারকে মাঠে নামানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন সহকারি কোচরা।’ এদিন সহকারি কোচের কথা বললেও কারও নাম নেননি তিনি।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেবজিৎ মজুমদারকে গোলকিপিং করানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন লাল হলুদের প্রাক্তন গোলকিপার কোচ সন্দীপ নন্দী। মূলত সে কারণেই ম্যাচের পর তাঁর উপর ক্ষোভ ঝাড়েন অস্কার। শোনা যাচ্ছে, ইস্টবেঙ্গল দলের সাথে গোয়ায় পৌঁছেও প্রধান কোচের কাছে বারবার পূর্বের ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন সন্দীপ। কিন্তু তাতে মন গলেনি অস্কারের। উল্টে নাকি তিনি নন্দীকে প্রতিবার অপমান করেছেন। আর সেই অপমান সহ্য করতে না পেরেই শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেন তিনি।
ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব ছাড়ার পরই প্রধান কোচ প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন সন্দীপ। লাল হলুদের প্রাক্তন কোচ জানান, ‘সকলের সামনে কোচ আমার সাথে এয়ারপোর্টে যেভাবে আচরণ করল, যে অসম্মানটা করল তা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। এই বিদেশী কোচেরা এমন কিছু নন যার জন্য পায়ে জল দিতে হবে। গত শিল্ড ফাইনালে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তার জন্য বারবার ক্ষমা চেয়েছি। ম্যাচের পরে বলেছি, তারপরেও ক্ষমা চেয়েছি।’
এদিন ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন গোলকিপার কোচ আরও বলেন, ‘ওর সমস্যা ছিল, আমাকে ক্লাব থেকে সুপারিশ করেছে তাই। ও আমাকে নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিল বহুবার। আমাকে অনুশীলন করানোরও সময় দেয়নি। প্রায়শই সন্দেহ করত, আমি যদি রিপোর্টারদের কাছে সব কথা ফাঁস করে দিই। যদিও এর মধ্যেও আমি দলের জন্য কাজ করে গেছি।’ লাল হলুদের প্রাক্তন গোলকিপার কোচের কথায়, ‘ওর (অস্কার ব্রুজোর) মতো এত খারাপ লোক আমি জীবনে দেখিনি। ইস্টবেঙ্গলটাকে ধ্বংস করছে এই কোচ। আমিও নিজের সম্মান থেকে কোচকে বলেছিলাম আপনারও তো সব সিদ্ধান্ত ঠিক নয়। তখন আবার তিনি বলেছিলেন এই কাজের জন্য নাকি আমি একেবারেই যোগ্য নই।’
অবশ্যই পড়ুন: পরপর বিস্ফোরণ, ধোঁয়ায় ঢাকে গোটা এলাকা! ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড খড়দহের রংয়ের কারখানায়
উল্লেখ্য, সোমবার লাল হলুদের গোলকিপার কোচের পদ ছাড়ার পর ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের গোটা বিষয়টি জানিয়েছিলেন সন্দীপ। বিশেষত লাল হলুদের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকারের সাথে কথা বলে নিজের সমস্যার কথা জানান নন্দী। সবশেষে প্রভসুখনদের প্রাক্তন কোচ বলেছিলেন, ‘যেখানে সম্মান নেই, সেখানে থাকব না।