প্লাস্টিকের ব্যাট দিয়েই স্বপ্ন বোনা শুরু! ইলেকট্রিক মিস্ত্রির ছেলে তিলক বর্মার অতীত খুবই কষ্টকর

Published:

Tilak Varma Life Story son of an electrician

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ইলেকট্রিক মিস্ত্রির ছেলে তিলক বর্মা (Tilak Varma)। তাঁর জোরেই পাকিস্তানকে উড়িয়ে এশিয়া সেরা হয়েছে ভারত। রবিবার, দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে তিলকের লড়াইটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে কয়েক দশক। কিন্তু এই ভারতীয় ক্রিকেটারের কাছে একটা সময় ব্যাট কেনার টাকা পর্যন্ত ছিল না। চরম দারিদ্রতার মধ্যে সংগ্রাম করে ভারতীয় দলে জায়গা পাওয়ার যাত্রাটা তিলকের জন্য যে মোটেই সহজ ছিল না সে কথা সকলেরই জানা। রইল খেলোয়াড়ের চাকচিক্যে ভরা জীবনের পেছনে লুকিয়ে থাকা অন্ধকার অতীত (Tilak Varma Life Story)।

প্লাস্টিকের ব্যাট দিয়ে শুরু হয়েছিল তিলকের স্বপ্নের যাত্রা

বাবা নম্বুরি নাগারাজু পেশায় একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। মা গায়ত্রীদেবী গৃহবধূ। ছোট থেকেই অভাবের সংসারে মানুষ হয়েছেন ভারতীয় তারকা তিলক বর্মা। সেই দারিদ্রতার চাদর সরিয়ে ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখাটা তিলকের জন্য আদতেই চাঁদ ধরার মতো ছিল। তবে আবেগ বাঁধ মানেনি। ছোট থেকেই ক্রিকেট অন্তপ্রাণ ছিলেন তিলক। সেই তীব্র ভালবাসা থেকেই প্লাস্টিকের ব্যাট নিয়ে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেন ভারত পাক এশিয়া কাপ ফাইনাল ম্যাচের নায়ক।

জানা যায়, ছেলেবেলায় চরম দারিদ্রতার কারণে একটা কাঠের ব্যাট কেনার মতো সামর্থ্য ছিল না তিলকদের। তাই প্লাস্টিকের ব্যাটকেই সঙ্গী করে নিয়েছিলেন তিনি। উইকিপিডিয়া ঘেঁটে জানা গেল, ইলেকট্রিক মিস্ত্রির ছেলে তিলকের ক্রিকেটার প্রতি প্রবল আসক্তি দেখে ছেলেবেলায় তাঁর দায়িত্ব নিয়েছিলেন কোচ সালাম বায়াশ। 11 বছর বয়সী তিলক তখন সালামের হাত ধরেই 22 গজকে বুঝতে শিখছেন।

পুরনো কাসুন্দি ঘেঁটে জানা গেল, টেনিস ক্রিকেট খেলতেন তিলক। সেই আসরে ছোট্ট তিলকের নিখুঁত শট দেখেই তাঁর ক্রীড়া শৈলীতে মুগ্ধ হন কোচ সালাম। এরপর থেকেই তাঁকে কোচিং করানো শুরু করেন তিনি। ভারতীয় তারকা বেশ কয়েকবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েও জানিয়েছেন, শিশু বয়সে তাঁকে ক্রিকেট খেলার জন্য উৎসাহ যোগাতেন ছেলেবেলার কোচ বায়াশ স্যার। তবে ক্রিকেটে উৎসাহ দিয়েই থেমে থাকেননি তিনি। এও জানা যায়, ভারতীয় তারকার পারিবারিক অবস্থা বুঝে তাঁকে ক্রিকেটের নানান সরঞ্জাম এমনকি খাবারও কিনে দিতেন সালাম। এছাড়াও যেকোনও প্রয়োজনে তিলক এবং তাঁর পরিবারের পাশে ছিলেন ছেলেবেলার কোচ সালাম।

অবশ্যই পড়ুন: ‘ভারতীয় দলের মেডেল, ট্রফি নিয়ে পালিয়েছেন নকভি!’ কঠোর পদক্ষেপের পথে BCCI

ছেলেবেলায় তিলককে নিজের বাইকে চাপিয়ে হায়দরাবাদের লিঙ্গামপল্লিতে প্রশিক্ষণের জন্য নিয়ে যেতেন কোচ। জানা যায়, তিলক যাতে এক দিনও ক্রিকেটের অনুশীলনের ফাঁকি না দেন সেজন্য ভোর ভোর তাকে ঘুম থেকে তুলে বাইকে চাপিয়ে বেরিয়ে পড়তেন তিনি। সেই যে শুরু, এরপর ভাগ্যের চাকা কখন যে ঘুরে গেল বুঝতেও পারেননি হায়দরাবাদের চন্দ্রায়ণ গুট্টার ছেলেটা।

আজ তিনি ভারতীয় দলের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। তাঁর হাত ধরেই রবিবার এশিয়া কাপ জিতেছে ভারত। তবে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে এসে একাধিক সাফল্য গায়ে মেখেও নিজের অতীতকে ভুলে যাননি তিলক। আজও, তাঁর সফলতার পথের সঙ্গীদের ধন্যবাদ জানান ভারতীয় তারকা। যখন ক্রিকেট শিখতে যাওয়ার টাকা ছিল না, সেসব দিয়েছেন ছেলেবেলার কোচ সালাম স্যার। সেটাও ভুলে যাননি তিনি। তাই সময় পেলেই নিজের ফেলে আসা দিনগুলোকে ঝালিয়ে নেন এশিয়া কাপ ফাইনালের নায়ক।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥