সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতের মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১২০ কোটির বেশি। আর এই বিপুল সংখ্যক ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় সাইবার সিকিউরিটি কোঅর্ডিনেটর (NCSC)। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, পুরনো সিম কার্ডগুলিতে (Sim Card) নিরাপত্তাজনিত সমস্যা দেখা যাচ্ছে। আর বিশেষ করে যে সমস্ত সিম চায়না কোম্পানির তৈরি, সেগুলি দেশজুড়ে সাইবার নিরাপত্তায় হুমকি সৃষ্টি করতে পারে, এমনটাই আশা করা হচ্ছে।
কীভাবে বিপদ সৃষ্টি হতে পারে?
সিম সাধারণত একটি ছোট চিপ, যা মোবাইল ব্যবহারকারীদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ধারণ করে রাখে। সিমের মধ্যে যে তথ্যগুলি থাকে, তা হল ফোন নাম্বার, ডিভাইস মডেল, IMEI নম্বর, লোকেশন, ব্যবহারকারীর পরিচয় ও ঠিকানা ইত্যাদি। আর এই সমস্ত তথ্য যদি ফাঁস হয়ে যায়, তাহলে ব্যবহারকারী ডিজিটাল পরিচয় চুরি যেতে পারে। আর এখানেই তৈরি হচ্ছে সবথেকে বড় আশঙ্কা।
Mint-র সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট অনুযায়ী, NCSC-এর তদন্তে উঠে এসেছে কিছু পুরনো সিম কার্ড, যেগুলি চায়না কোম্পানির তৈরি। আর সেগুলি নাকি দেশের নিরাপত্তা লঙ্ঘন করছে।
পুরনো সিম বদলের তোড়জোড়
NCSC মনে করছে, দেশের পুরনো সিম কার্ডগুলিকে ধাপে ধাপে নতুন সিম কার্ডে বদলে ফেলতে হবে। আর এর জন্য একটি নির্দিষ্ট ফ্রেমওয়ার্ক তৈরীর কাজ চলছে। এই বিষয়ে Airtel, Jio, Vodafone Idea ও BSNL-এর মত টেলিকম সংস্থাগুলির শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক সেরে ফেলেছে NCSC। কিন্তু কর্তৃপক্ষ মনে করছে, এই পরিবর্তনের প্রক্রিয়া বেশ জটিল এবং প্রযুক্তিগত ও আইনি বাধা সৃষ্টি হতে পারে। তবে সবদিক খতিয়ে দেখে পরিকল্পনামাফিক নতুন সিম ইস্যু করা হবে।
টেলিকম সেক্টরে বিদেশি প্রভাব বন্ধে বড়সড় পদক্ষেপ
২০২১ সালে টেলিকম বিভাগের পক্ষ থেকে ইউনিফাইড অ্যাক্সেস সার্ভিস লাইসেন্সের নিয়মে বড়সড় পরিবর্তন আনা হয়। যেখানে অবিশ্বস্ত বিক্রেতাদের থেকে কোন টেলিকম যন্ত্রপাতি কেনা যাবে না, এমনটাই বলা হয়। পরবর্তীতে এও বলা হয় যে, শুধুমাত্র বিশ্বস্ত উৎস থেকে টেলিকম সরঞ্জাম কিনতে হবে।
চায়না কোম্পানি Huawei ও ZTE-র উপর ইতিমধ্যেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ভারত সরকারের তরফ থেকে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞায় কোনো কাজ হয়নি। কারণ বহু টেলিকম সংস্থা আগেভাগেই সিম কার্ড ও নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম সরবরাহ করে রেখেছিল। ফলে সেই সমস্ত ডিভাইস এখন বাজারে সক্রিয় রয়েছে।
ভিয়েতনাম ও তাইওয়ানের কোম্পানির উপর ভরসা
বর্তমান সময়ে NCSC টেলিকম বিভাগ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সহযোগিতায় এই তদন্ত চালাচ্ছে। সরকার এখন ভিয়েতনাম এবং তাইওয়ানভিত্তিক বিক্রেতাদের অনুমোদন দিচ্ছে। যারা নিরাপদ এবং বিশ্বস্ত সরবরাহকারী হিসেবে ভারতের বাজারে কাজ করতে পারবে।
ভারত সরকারের মতে ডিজিটাল অগ্রসর দেশে মোবাইল সুরক্ষা খাতে বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তবে এই পদক্ষেপ হয়তো প্রাথমিকভাবে কিছুটা জটিল হতে পারে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এটি দেশের সাইবার নিরাপত্তাকে অনেক বেশি সুরক্ষা প্রদান করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |