সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ এ যেন অকাল শীত! অক্টোবর মাসে এরকম শীতল আবহাওয়া মানুষ কবে অনুভব করেছেন সেটা মনে করতে পারছেন না। এখানেই শেষ নয়, আগামী দিনে দিন ও রাতের তাপমাত্রা আরও বেশ খানিকটা কমবে বলে পূর্বাভাস জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর (Weather Forecast)। এমনিতেই এই বছর লা নিনার প্রভাবে অতিরিক্ত ঠান্ডা পড়বে বলে জানিয়েছে আইএমডি, আর তার আভাস যেন আগে থেকেই বোঝা যাচ্ছে। তবে নতুন করে আবার অশনি সংকেতও দেখা দিয়েছে কিন্তু। আর এই অশনি সঙ্কেত হল নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণিঝড়। হ্যাঁ একদম ঠিক শুনেছেন। ফের একবার সাধারণ মানুষের হাল বেহাল হতে চলেছে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার কারণে। চলুন জেনে নেবেন বিশদে।
ফের নিম্নচাপ-ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা
ইতিমধ্যে শীত বিদায় নিয়েছে বাংলা সহ দেশের অধিকাংশ জায়গা থেকে। এর ফলে শীতল আবহাওয়া বিরাজ করছে বেশিরভাগ জায়গায়। তবে এই সুখ বেশিদিন স্থায়ী নাও হতে পারে বলে আশঙ্কা। এর কারণ ফের বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণিঝড়ের মতো পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা। এই বিষয়ে চমকে দেওয়ার মতো তথ্য দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মান্যতা প্রাপ্ত আবহাওয়া গবেষণা সংস্থা WEATHER FORCASTING SYSTEM বা WFS।
আরও পড়ুনঃ মিলবে ৬৯০৮ টাকা! কালীপুজোর আগে ১৪.৮২ লক্ষ কর্মীর জন্য বোনাস ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
এই আবহাওয়া সংস্থাটি অক্টোবরে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে। ভারতের মৌসম ভবন এখনও পর্যন্ত এনিয়ে কোনও সতর্কতা বা পূর্বাভাস জারি করেনি। তবে WFS জানাচ্ছে ২৫ অক্টোবর ভারতীয় সময় রাত ৩টে নাগাদ দক্ষিণ আন্দামান সাগরের ইন্দিরা পয়েন্টের কাছে বঙ্গোপসাগরে একটি অতি শক্তিশালী নিম্নচাপ তৈরি হবে। যা ২৭ অথবা ২৮ তারিখ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে চলেছে। নিম্নচাপ ২৫ এবং ২৬ তারিখ প্রায় গোটা দিন আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ কে বাঁদিকে রেখে জলভাগ ধরে জলীয় বাষ্প বা শক্তি সঞ্চয় করতে করতে ভারতের মূল ভূখণ্ডের দিকে এগোবে। এটি ২৭ তারিখ তামিলনাড়ু উপকূলের খুব কাছাকাছি এসে পৌঁছবে। এরপর সম্ভাব্য দুটি গতিপথের কথা বলা হয়েছে। প্রথমটি পুদুচেরী উপকূল হয়ে আরব সাগর। দ্বিতীয়টি বঙ্গোপসাগর বরাবর এগিয়ে ওড়িশা অন্ধ্র উপকূলের গোপালপুর।
কবে জাঁকিয়ে শীত পড়বে?
এখন সকলে জানতে চাইছেন যে কবে বাংলা সহ দেশে জাঁকিয়ে শীতটা পড়বে? এই বিষয়ে একজন আইএমডি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘আগামী দিনগুলিতে লা নিনা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে এবং এটি সম্ভবত শক্তিশালী পশ্চিমা ঝঞ্ঝার সৃষ্টি করবে। লা নিনা সাধারণত দেশে ঠান্ডা শীতের সাথে সম্পর্কিত। আমাদের মডেলগুলি এই বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে লা নিনা তৈরির ভালো সম্ভাবনা দেখায়।’ তবে অক্টোবরের শেষে এবং নভেম্বরের প্রায় পুরোটাই একাধিক নিম্নচাপ, ঘূর্ণিঝড় বা পশ্চিমী ঝঞ্ঝার বাধা থাকবে বলেই মৌসম ভবনের লং টার্ম আউটলুক জানাচ্ছে। ফলে জাঁকিয়ে শীত ডিসেম্বরের ৪ বা ৫ তারিখের আগে নয় বলেই পূর্বানুমান।