প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে ওড়িশার উপকূলে ভিতরকণিকা এবং ধামরার মাঝে আছড়ে পড়েছিল প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ (Cyclone Dana)। তবে সেই সময়ে ডানার চরিত্র ছিল অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড়রূপী। উপকূলে তখন ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে ব্যাপক ঝড়বৃষ্টির প্রভাবের কথা আশঙ্কা করা হলেও সেই তুলনায় বাংলায় তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি ‘ডানা’। শুধুমাত্র ল্যান্ডফলের প্রভাবে গতকাল সারাদিন দক্ষিণবঙ্গের প্রত্যেকটি জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়েই চলেছে। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। কিন্তু প্রশ্ন হল এই বৃষ্টির তাণ্ডব কতদিন ধরে চলবে বঙ্গে?
কী বলছে হাওয়া অফিস?
হাওয়া অফিস এর শেষ আপডেট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, বর্তমানে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ডানা গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার, ওড়িশায় ল্যান্ডফল হওয়ার পর কয়েক ঘণ্টা তাণ্ডব ঘটানোর পর ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাই বর্তমানে সেটি এখন নিম্নচাপ অঞ্চলে পরিণত হয়ে উত্তর ওড়িশায় অবস্থান করছে। যার দরুন সেখানে অঝোরে বৃষ্টি হয়েই চলেছে। তবে এই বৃষ্টি সারাক্ষণ থাকবে না। আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে এই নিম্নচাপ অঞ্চল আরও শক্তি হারিয়ে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বে। এদিকে আবার উত্তর ওড়িশায় সৃষ্ট নিম্নচাপ অঞ্চলের প্রভাবে আজ অর্থাৎ শনিবার দক্ষিণবঙ্গের তিন জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানাল হাওয়া অফিস।
মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়া নিয়ে বড় আপডেট!
পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে রয়েছে বিক্ষিপ্ত ভাবে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। তবে এই তিন জেলা ছাড়াও কলকাতা সহ দক্ষিণের বাকি জেলাগুলিতে দু একটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। তবে সেখানে ভারী বৃষ্টির কোনো সতর্কতা জারি করা হয়নি। অন্যদিকে আজ অর্থাৎ শনিবার বিকেল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে আজ কলকাতায় আকাশ সম্পূর্ণ মেঘমুক্ত এবং পরিষ্কার। উঠেছে রোদও।
এদিকে গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে লাগাতার বৃষ্টি হওয়ায় ব্যাহত হয়েছে নাগরিক জীবন। একনাগাড়ে বৃষ্টির ফলে শহরের প্রধান রাস্তাগুলির বহু অংশে জল জমে গিয়েছে। বিশেষ করে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, মহাত্মা গান্ধী রোড, পার্ক স্ট্রিট, ক্যামাক স্ট্রিট, এবং উত্তর বন্দর এলাকার রাস্তা জলমগ্ন। যান চলাচল এবং সাধারণ মানুষের চলাচলও অনেকটা কম। তবে আজ পরিস্থিতি সামান্য উন্নত হয়েছে।