প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: শিক্ষকের দাপটে একসঙ্গে অসুস্থ হয়ে পড়ে বীরভূমের এক বেসরকারি স্কুলের প্রায় ১৬ জন ছাত্রী! অভিযোগ ছাত্রীদের জীববিদ্যা পড়ানোর সময় ছাত্রীদের সঙ্গে ঝামেলা করে শিক্ষক এবং তাঁর স্ত্রী। এমনকি তাদের মারধর করার অভিযোগও ওঠে। যার ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে একাধিক ছাত্রী। তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে।
ঠিক কী হয়েছে?
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছে রামপুরহাট পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সুন্দিপুর এলাকার একটি বেসরকারি স্কুলে। অভিযোগ উঠেছে ওই বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক এবং তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে। আসলে ঐ শিক্ষক স্কুলে অতিথি শিক্ষক হিসেবে পড়াতে আসতেন। জীববিদ্যা বিষয়ের ওই শিক্ষক ছাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন বলেও অভিযোগ। বিগত কয়েকদিন ধরেই ওই বেসরকারি স্কুলের পরিচালন কমিটির সঙ্গে জীববিদ্যার অতিথি শিক্ষক খুরশেদ আলম এবং তাঁর স্ত্রী মাসুমা আলমের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েই চলেছে।
অসুস্থ ১৬ জন ছাত্রী
গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ওই বেসরকারি স্কুলে অভিযুক্ত ওই জীববিদ্যার শিক্ষক পড়াতে গেলে ছাত্রীরা তাঁর ক্লাস করতে রাজি হয়নি। তার পরই ছাত্রীদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন ওই শিক্ষক ও তাঁর স্ত্রী। পডুয়াদের অভিযোগ, ওই শিক্ষক এবং তাঁর স্ত্রী তাদের মারধর করার পাশাপাশি খারাপ আচরণ করেন। যার ফলে অসুস্থ হয়ে পড়ে স্কুলের ১৬ জন ছাত্রী। সঙ্গে সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
উঠে এসেছে একাধিক অভিযোগ
অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আগেও মারধর এবং খারাপ আচরণের অভিযোগ রয়েছে। তাই এই শিক্ষকের ক্লাস করতে না চেয়ে গণস্বাক্ষর করে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে জমাও দিয়েছেন ছাত্রীরা এবং অভিভাবকরা। কিন্তু তারপরও গতকাল, বৃহস্পতিবার ক্লাস করতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ। পডুয়াদের অভিযোগ, ওই শিক্ষক তাদের উপর অত্যাধিক মারধর ও খারাপ আচরণ করেন। আর এই আবহে প্রশ্ন উঠছে, এমন কী করতেন জীববিদ্যার শিক্ষক যাতে এত ভয় পায় একাদশ শ্রেণির ছাত্রীরা।
আরও পড়ুন: মোদীর বঙ্গ সফরের দিন বাংলা ছাড়লেন দিলীপ! বললেন ‘দল চায় না আমি যাই’
প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে যে, একাদশ শ্রেণির জীববিদ্যার সিলেবাসে মানব শরীরের অনেক বিষয় পড়ানো হয় যা অত্যন্ত সংবেদনশীল। এর প্রভাব কিশোর-কিশোরীদের মনে অনেকটাই বিস্তার করে। আর সেই বিষয়গুলি ছাত্রীদের সঙ্গে মিশে গিয়ে বোঝাতে হয় বলেই মত শিক্ষাবিদদের।
কিন্তু এই জায়গায় দাঁড়িয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক খারাপ আচরণ করে পড়াতেন। সেই কারণে ক্লাস করতে চায়নি ছাত্রীরা! ইতিমধ্যেই, অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আটক করেছে ওই শিক্ষক এবং তাঁর স্ত্রীকে। ঘটনার তদন্ত করছে রামপুরহাট থানার পুলিশ। কলকাতা থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষের কর্তারা রামপুরহাট রওনা দিয়েছেন।