প্রীতি পোদ্দার: একদিকে রাজ্যে আরজি কর কাণ্ডকে ঘিরে একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলেছে। পুজোর আনন্দের মাঝেই এই ঘটনা যেন এখনও সকলের মনে যেন বিঁধে রয়েছে। তার উপর রাজ্যে একাধিক নানা বিশৃঙ্খলামূলক ঘটনা ঘটেই চলেছে। উঠে আসছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। সম্প্রতি দুই জন মহিলা কোনও মন্তব্য না করেই শুধুমাত্র হাততালি দিয়েছিলেন। আর তাতেই গ্রেফতার করে পুলিশ।
ঘটনাটি কী?
জানা গিয়েছে গত ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর ফলতা থানার অধীনে দুই মহিলাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। অভিযোগ ছিল তাঁরা নাকি তৃণমূল নেতার শিশুকন্যা সম্পর্কে কুমন্তব্যের সময় হাততালি দিয়ে সেই মন্তব্যকে উৎসাহ দিয়েছিলেন। তাই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। এমনকি গ্রেফতার করার পর তাঁদের মারধরেরও অভিযোগ উঠে আসছে। এবার এই প্রসঙ্গে মামলা উঠল কলকাতা হাইকোর্টে।
গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার, বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুললেন। তিনি বলেন, “একটি অভিযোগের ভিত্তিতে কী কাউকে গ্রেফতার করা যায়?” ফলতা থানায় মামলাটি দায়ের হলেও অন্যান্য থানাতেও একই ধরনের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এদিন বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ এর সামনেই মামলাকারী দুই মহিলার আইনজীবী সওয়াল করেন, “আমরা কোনও মন্তব্যই করিনি। শুধু হাততালি দিয়েছি। তারজন্য পুলিশ গ্রেফতার করতে পারে?”
হেফাজতে থাকাকালীন নানা অত্যাচার!
জানা গিয়েছে, ২০ দিনের ওপর হেফাজতে রয়েছেন এই দুই মহিলা। তাই তাঁদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আবেদন জানান আইনজীবী। পাল্টা জবাবে মামলাকারির আইনজীবীকে রাজ্যের তরফ থেকে সওয়াল করা হয় যে “হেফাজতে থাকাকালীন দিনের পর দিন অত্যাচারের কথা নিম্ন আদালতে কেন জানাননি অভিযুক্তরা?” এরপরই রাজ্যের তরফে বিচারপতিকে জানানো হয়, “যাঁদের ভিডিয়ো দেখে চিহ্নিত করা গিয়েছে, সবার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়েছে। যিনি মন্তব্য করেছেন তিনিও হেফাজতে আছেন।”
এদিন জেল সুপারের কাছ থেকে গ্রেফতার হওয়া দুই মহিলার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত রিপোর্ট তলব করেছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। এবং নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামী ৩ অক্টোবরের মধ্যে সেই রিপোর্ট জমা দিতে হবে।